লিটন-সাকিবের হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের লড়াকু সংগ্রহ
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের দুরবস্থার অন্যতম কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। এ ব্যর্থতা চুম্বকের মতো যেন লেগে আছে, কিছুতেই ছুটানো যাচ্ছিল না। অবশেষে তিন জাতি টি-টোয়েন্টি আসরে আগের দিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ ব্যাটিং ব্যর্থতার দুরাবস্থা কাটিয়ে উঠার ইঙ্গিত দিয়েছিল। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে সেখানে তারা আরও কিছুটা হলেও সফল হয়েছে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে লিটন ও সাকিবের জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে সংগ্রহ করেছে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান। লিটন ৬৯ ও সাকিব ৬৮ রান করেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের এটি ছিল শেষ ম্যাচে। যথারীতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলেছে। প্রথমেই সেরা একাদশে আনা হয় পরিবর্তন। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে বাদ দিয়ে হাসান মাহমুদকে ফিরিয়ে এনে ৪ পেসার নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয় আরেকটি। মেহেদী হাসান মিরাজ-সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ-নাজমুল হোসেন শান্ত, নাজমুল হোসেন শান্ত-লিটন দাসের পর এবার উদ্বোধনী জুটিতে দেখা যায় নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকারকে। কিন্তু যথারীতি এবারও ব্যর্থ উদ্বোধনী জুটি।
দীর্ঘ বিরতির পর আগের দিন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেরা একদেশে ফিরে সৌম্য সরকার ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ওয়ান ডাউনে নেমে রান করেছিলেন ২৩। আজ উদ্বোধন করতে এসে মাত্র ৪ বলে ৪ রান করে আউট হয়ে যান নাসিম শাহর বলে সাদাব খানের হাতে ধরা পড়ে। অপর প্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত তখন অনেকটা ধীরে খেলছেন। ৯ বলে রান ছিল মাত্র ১। রানের সঙ্গে বলের বিশাল ব্যাবধান পূরণ করার জন্য নাজমুল হোসেন শান্ত যখন সচেষ্ট, তখনই তিনি আউট হয়ে যান। ১৫ বলে ১২ রান করে মোহাম্মদ ওয়াসিমের লেগ স্ট্যাম্পের বাইরে বল খেলতে গিয়ে ব্যাটে বলে সংযোগ করতে পারেননি তিনি। উইকেটে পিছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ধরা পড়েন ।
এরপর শুরু হয় লিটন দাস সাকিব আল হাসানের ম্যাজিক। ২২ রানে লিটন দাস জীবন পেয়েছিলেন মোহাম্মদ হাসানাইনের বলে পয়েন্টে শান মাসুদ ক্যাচ ফেলে দিলে। জীবন পেয়ে তিনি মারমুখী হয়ে উঠেন। খেলেন ৪২ বলে ৬৯ রানের ইনিংস। ৩১ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ সেঞ্চুরি। সাকিবের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৯.১ ওভারে যোগ করেন ৮১ রান। আরও রান বাড়ানোর তাড়না থেকে মোহাম্মদ নেওয়াজের বলে সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে মোহাম্মদ ওয়াসিমের হাতে ধরা পড়েন। তার ইনিংসি ছিল দুটি দৃষ্টিনন্দন ছয় ও ৬টি বাউন্ডারি।
লিটন আউট হওয়ার পর অধিনায়ক সাকিব দলের রান বাড়ানোর দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন। সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যান আফিফকে। টানা দ্বিতীয় ও ক্যারিয়ারের দ্বাদশ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৩৪ বলে।
১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ছিল তিন উইকেটে ১২৯ সেখানে শেষ ৫ ওভারে যোগ করে তারা ৯,১৪,৯,৯,৩ মোট ৪৩ রান। এই রান সংগ্রহের মূল কারিগর ছিলেন সাকিব। ৮ বল বাকি থাকতে রান বাড়ানোর তাড়নায় নাসিম শাহর বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে সাদাব খানের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় সাকিবের আরেকটি মারমুখী ইনিংসের। তার ৪২ বলে ৬৮ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ৩টি ছক্কা ও ৭টি বাউন্ডারি। শেষ ওভারে বাংলাদেশ মাত্র ৩ রান সংগ্রহ করে উইকেট হারায় ২টি। নাসিম শাহ ২৭ ও মোহাম্মদ ওয়াসিম ৩৩ রানে দুটি করে উইকেট নেন।
এমপি/আরএ/