চার বোলার নিয়ে টেস্ট জেতাটা অবিশ্বাস্য: মুমিনুল
নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়েছে এটা অবিশ্বাস্য। তার বেশি অবিশ্বাস্য বাংলাদেশ যে অবস্থা থেকে এই ফলাফল বের করে নিয়েছে। বাজে খেলতে খেলতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল। কিন্তু অবিশ্বাস্য ঘটনা এখানেই শেষ নয়! এই টেস্ট জিততে বাংলাদেশের সেরা একাদশে ছিলেন চারজন বোলার। তিন পেসারের সঙ্গে এক স্পিনার। চার বোলার নিয়ে টেস্ট জেতা। তাও নিউজিল্যান্ড। আবার তাদের মাটিতে। এটিই সবচেয়ে বড় অবিশ্বাস্য ঘটনা। লঙ্কাকাণ্ডও বটে। কারণ চার পেসার সেরা একাদশে রাখা মানে যেন ফুটবলে খেলার রক্ষণাত্বক পদ্ধতি। যেখানে গোল হজম না করাই থাকে মূল উদ্দেশ্য। এখানে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যও ছিল তাই, যাতে না হেরে কোনো রকম ড্র করে যায়। সেখানেই কি না টানা দাপট দেখিয়ে বীরের বেশ জয়। এমন জয়ে বোলারদের অবদানের কথা বড় করে তুলে ধরেছেন দলপতি মুমিনুল। ম্যাচ পরবর্তী ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা, আমার কাছে মনে হয়, এই টেস্ট জেতার পেছনে সবচেয়ে বেশি হাত ছিল বোলারদের। চার বোলার নিয়ে টেস্ট জেতাটা অবিশ্বাস্য।’
সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল চার বোলারকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়ে গদ্য রচনা করেছেন। এবাদতকে নিয়ে বলেন, ‘আমি বিস্মিত নই। আমি জানি, দলের অনেকেই জানে, ও (ইবাদত) যে মাপের বোলার, হয়তো বল এক জায়গায় করতে পারে না, যেদিন ভালো জায়গায় বল করবে, ওই দিন ওই দল শেষ। কিন্তু ওর এটা ধারাবাহিক ছিল না। সবশেষ ২-৩ বছর ধরে আমাদের বোলিং কোচ অনেক ওকে নিয়ে পরিশ্রম করছে। এমনকি আমিও করছি। গত ১-২ বছর ধরে টানা টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। এটার ফল কালকে আর আজকে দিয়েছে ম্যাচ জিতিয়ে।’
প্রথম ইনিংসে এবাদত ছিলেন নির্লিপ্ত। ১৮ ওভারে ৭৫ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। আর দ্বিতীয় ইনিংসে রীতিমতো আগুন লাগিয়ে দেন স্বাগতিকদের ইনিংসে। ২১ ওভারে ৬ মেডেন, ৪৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে করেন ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
তাসকিনকে নিয়ে বলেন, ‘তাসকিন ছিল অসাধারণ। প্রথম ইনিংসে উইকেট পায়নি, কিন্তু রান আটকে রেখেছে।’
প্রথম ওভারে চোখ ধাঁধানো বোলিং করেও কোনো উইকেট পাননি তামকিন। ২৬ ওভারে ৭৭ রান দিয়ে উইকেট শুন্য থাকেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ভীতি ছড়ান এবাদতের সাথে। ১৪ ওভারে ৩ মেডেনে ৩৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি।
শরিফুলকে নিয়ে বলেন, ‘ শরিফুল ইয়াং স্টার। মাত্র ২ ম্যাচ খেলেছে। কিন্তু দলের ভেতর এতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে পালন করেছে এটা অবিশ্বাস্য।’
এবাদতের বলে মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে কাই জেমিসনের অসাধারণ ক্যাচ নেন শরিফুল। শরিফুলের এই ক্যাচ ধরাকেও মুমিনুলের কাছে মনে হয়েছে অনেক বড় অবদান। তিনি(মুমিনুল) বলেন, ‘আমরা কিন্তু পেস বোলারদের কাছ থেকে আশা করি না যে এত ভালো ক্যাচ ধরবে। আমাদের যে মোমেন্টামে ছিলাম, ওই মোমেন্টামে আমরা যে কিছু করতে চাই, এই জিনিসটা ওরা করেছে। আমার কাছে মনে হয় অবিশ্বাস্য (শরিফুলের ক্যাচ)।
দলে একমাত্র স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তিনি প্রথম ইনিংসে ৩২ ওভারে ৯ মেডেন নিয়ে ৮৬ রানে নেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে বোল্ট-ওয়েগনারের শেষ জুটিকে বেশি লম্বা হতে দেননি মিরাজ। তিনি বোল্টকে আউট করেন।
মিরাজকে নিয়ে মুমিনুলের ভাষ্য, ‘এই উইকেটে বল ঘোরে না। তার পরও সে কোনো না কোনোভাবে উইকেট বের করেছে। ’
এমপি/এমআইএইচ