ভারতের কাছেও বিধ্বস্ত বাংলাদেশের মেয়েরা
শক্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দাঁড়াতেই পারছে না। পাকিস্তানের কাছে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর এবার ভারতের কাছেও একই পরিণতি বরণ করেছে। হেরেছে ৫৯ রানে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৫ উইকেটে ১৫৯ রান করে। যা ছিল বাংলাদেশ দলের নাগালের বাইরে। রান তাড়া করতে নেমে অলআউট না হওয়ার পরও তারা ৭ উইকেটে ১০০ রান করে।
এই হারের ফলে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের সেমি ফাইনালে যাওয়ার পথ একটু কঠিন হয়ে উঠল। ৪ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ৪। নেট রান রেটে তারা পয়েন্ট টেবিলের চারে আছে। সমান পয়েন্ট নিয়ে নেট রান রেটে পাঁচে থাকা থাইল্যান্ডও আছে সেমির লড়াইয়ে। বাংলাদেশের শেষ দুই ম্যাচ শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। থাইল্যান্ড তাদের শেষ দুই ম্যাচ খেলবে ভারত ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে। দুই দলের এই দুই ম্যাচের উপরই নির্ভর করবে চতুর্থ দল হিসেবে কে যাবে সেমিতে। ৫ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে একে ভারত, ৪ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট করে নিয়ে নেট রান রেটে পাকিস্তান দুইয়ে ও শ্রীলঙ্কা আছে তিনে।
নারী টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলের জন্য শিরোপা ধরে রাখা খুবই কঠিন হয়ে উঠেছে। এর মূল কারণ ব্যাটিং। ব্যাট হাতে বাংলার মেয়েরা নিজেদের মেলেই ধরতে পারছেন না। বাংলাদেশের ব্যাটিং যে কত দুর্বল তা বোঝা যায় থাইল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে মাত্র ১২৯ রান করা দেখে। আবার পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে শতরানও করতে পারেনি। ৮ উইকেটে করেছিল মাত্র ৭০ রান। আবার ভারতের ১৫৯ রান তাড়া করতে নেমে করেছে ৭ উইকেটে মাত্র ১০০ রান। ব্যাট হাতে ৫৫ রান ও বল হাতে ১০ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন ভারতের শাফালি ভারমা।
১৬০ রান করলে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতবে। তাড়া করতে নেমে উইকেটের মড়ক লাগেনি। কিন্তু দ্রুতলয়ে রান করতে পারেনি। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে রান আসে বিনা উইকেটে মাত্র ৩০ রান। ১০ ওভার শেষে রান ছিল ১ উইকেটে ৪৮। সেখানে ভারতের রান ছিল বিনা উইকেটে ৯১। সেই হিসেবে ভারতের মোট সংগ্রহ অনেক কমই হয়েছে বলা যায়। পরের ১০ ওভারে তারা সংগ্রহ করে ৪ উইকেটে ৬৮ রান। এসময় বাংলাদেশের বোলাররা খুবই ভালো বোলিং করে ভারতের রানকে আকাশছোঁয়া হতে দেননি। শাফালি ভারমা ৫৫, অধিনায়ক স্মৃতি মানধানা ৪৭, জেমিমা রদ্রিগেজ ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। সপ্তম বোলার হিসেবে বল হাতে তুলে নিয়ে রুমানা ৩ ওভারে ২৭ রানে নেন ৩ উইকেট। সালমা খাতুন ১৬ রানে নেন ১ উইকেট। আগের ম্যাচে অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করা ফারিহা খাতুন এ দিন নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ২ ওভারে ২৫ রান দিয়ে কোনো উইকেট নিতে পারেননি। নাহিদা আক্তারও ২ ওভারে ২৬ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। রিতু মনি ২ ওভার রান দেন ২২। তিনিও কোনো উইকেট পাননি। সে তুলনায় সানজিদা আক্তার মেঘলা অনেক ভালো বোলিং করেন। তিনি ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে কোনো উইকেট নিতে পারেননি।
শেষ ১০ ওভার বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করে ভারতের রানকে আকাশছোঁয়া হতে না দিলেও বাংলাদেশের ব্যাটাররা তার সুফল নিতে পারেননি। এমনকি জয়ের চেষ্টা করতেও দেখা যায়নি। প্রথম ৩ ব্যাটার ফারজানা হক, মুর্শিদা খাতুন ও নিগার সুলতানা ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। একমাত্র অধিনায়ক নিগার সুলতানা ছাড়া আর কারও স্ট্রাইকরেটই একশ'র উপরে ছিল না। উদ্বোধনী জুটিতে ফারজানা ও মুর্শিদা ৪৫ রান যোগ করেন ৯.১ ওভারে। ফারজানা ৪০ বলে ৩০ রান ও মুর্শিদা ২৫ বলে ২১ রান করেন। উদ্বোধনী জুটির এই ধীর গতির সূচনায় বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। টার্গেট হয়ে উঠে আকাশছোঁয়া। নিগার সুলতানা ২৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৩৬ রান করেন। বাকি সবার রান ছিল এক অঙ্কের ঘরে। শাফালি ভারমা ১০ রানে ও দিপ্তি শর্মা ১৩ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন রেনুকা সিং ও স্নেহ রানা।
এমপি/এসজি