সাকিব বেকসুর খালাস!
আবারও বেকসুর খালাস পেলেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বিসিবির অনুমতি না নিয়ে বেআইনিভাবে তিনি বিশ্বব্যাপী অনলাইন জুয়া খেলার প্রতিষ্ঠান বেটউইনারের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বেটউইনার নিউজের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন সাকিব। তার এই চুক্তি যেমন একদিকে ছিল বাংলাদেশের আইনের পরিপন্থি, তেমনি আবার বিসিবির নিয়ম ভঙ্গও। কিন্তু আজ বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ নিয়ে কোনও কথাই হয়নি! পেয়ে গেলেন বেকসুর খালাস। এর আগেও তিনি একধিকবার বিসিবির আইন ভঙ্গ করলেও কোন রকম সাজার মুখোমুখি হতে হয়নি!
বিসিবির নিয়ম ভঙ্গ করার চেয়েও বেশি সামনে চলে আসে বেটউইনারের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি। দেশব্যাপী তুমুল সমালেচানার ঝড় উঠে। বিসিবিও শক্ত অবস্থান নেয়। হুশিয়ার উচ্চারন করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সরাসরি ঘোষণা দেন সাকিবকে হয় বেটউইনার ছাড়তে হবে, নতুবা ক্রিকেট ছাড়তে হবে। বুদ্ধিমান সাকিব নতি স্বীকার করেন। সর্ম্পকচ্ছেদ করেন বেটউইনারের সঙ্গে। এর মাঝে অবশ্য অবশ্য বেটউইনার ব্যাপক পরিচিতি পেয়ে যায় বাংলাদেশে। সাকিবকে ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর করার মাধ্যমে তাদের প্রতিষ্ঠানের যে প্রচারনার প্রয়োজন ছিল তা তারা মাত্র এক পক্ষকালেই পেয়ে যায়। বাংলাদেশের মানুষকে জুয়া খেলার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে সাকিবও আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে যান।
এ রকম একটি নীতি বহির্ভুত কজা করার পর বিসিবি সাকিবের বিপক্ষে কোন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উল্টো তাকে অধিনায়ক করে এশিয়া কাপে পাঠানো হয়। সাকিবের বিপক্ষে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার পক্ষে বিসিবি সে সময় যুক্তি দেখিয়েছিল, সে চুক্তি বাতিল করেছে এবং ভুল বুঝতে পেরেছে। না বুঝেও করেছে বলে বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কথা থেকে গিয়েছিল। তা ছিল বিসিবির অনুমতি না দিয়ে চুক্তি করা।
বিসিবির আইনে আছে কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করার আগে একজন ক্রিকেটারকে অবশ্যই বিসিবির অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু সাকিব এ ক্ষেত্রে তা করেননি। এই অনুমতি না নিয়ে তিনি আরেক দফা আইন ভঙ্গ করেছিলেন। বেটউইনার ইস্যুতে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের বাসায় সাকিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছিলেন, ‘বিসিবির অনুমতি না নিয়ে চুক্তি করে যে আইন ভঙ্গ করেছেন, তা বিসিবির পরবর্তি সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ প্রায় দেড়মাস পরে বিসিবির সেই সভা হয়েছে আজকে। কিন্তু এতো বড় একটি ঘটনা আজকের সভার এজেন্ডায়ই ছিল না। এমন কি বিবিধেও আলোচনা হয়নি। তার মানে সাকিবকে আরও একবার বিসিবি ছাড় দিল। খালাস দিল। এ রকম খালাস তিনি অতীতে অনেকবার পেয়েছেন। আর পেতে পেতে নিজেকে ‘ড্যামকেয়ার’ করে তুলেছেন। পাত্তা দিচ্ছেন না বিসিবিকেও! তিনি যেটা চাইছেন, সেটিই হচ্ছে!
এ ব্যাপারে বিসিবির পরিচালক ওবেদ নিজামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবাক হয়ে জানতে চান সাকিবের আবার কি ইস্যু?’ বিষয়টি মনে করে দিলে তিনি এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে পরে আর কোনও কথা বলতে রাজি হননি।’ ক্রিকেট অপরেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসে বলেন, ‘আজকে এটি নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক পরিচালক বলেন, ‘এক সাকিবকে নিয়ে আর কতো কথা বলা যায়। তার কর্মকান্ডে খুবই বিরক্ত, বিব্রত।’
এমপি/এএস