সাকিব নেই, ফটোসেশন-প্রেস কনফারেন্সও নেই!
২০১৯ সাল। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর শুরু হবে ইংল্যান্ডে। বাংলাদেশ খেলতে যাবে।দেশ ছাড়ার আগে অফিসিয়াল ফটোসেশন হবে। প্রেস কনফারেন্স হবে। অধিনায়ক মাশরাফি। যথারীতি প্রেস কনফারেন্স হয়েছে। ফটোসেশনও হয়েছে। কিন্তু সেই ফেটোনেশনে ছিলেন না সাকিব আল হাসান। তিনি মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে ফটোসেশনের আগেই চলে যান।
পরে জানতে পেরে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজে ফোন করেছিলেন। কিন্তু সাকিব জানতেন না বলে জানান। যে কারণে তিনি চলে গিয়েছিলেন। পরে তিনি আর আসেননি। এভাবে অফিসিয়াল ফটোসেশনে দলের একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হয়েও উপেক্ষা করাতে সর্বত্র তুমুল সমালোচনা হয়েছিল। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো সমালোচনার ঝড় ও উঠেছিল।
ঘটনাটি তুলে ধরার কারণ অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার জন্য বাংলাদেশ দেশ ছেড়েছে শুক্রবার রাতে। কিন্তু হয়নি কোনো অফিসিয়ালি ফটোসেশন। এমন কি প্রেস কনফারেন্সও? এই না হওয়ার কারণ সাকিব আল হাসান। তিনি দেশে নেই। এবার তিনি কিন্তু অধিনায়ক। অধিনায়ককে ছাড়া প্রেস কনফারেন্স কিংবা ফটোসেশন হয় কী করে? তাই সব বাদ! সাঙ্গ হলো দীর্ঘদিনের ট্র্যাডিশন। বিষয়টি অবাক করার মতোই! আইসিসির একটি বড় আসর খেলতে যাবে বাংলাদেশ। সেখানে দলের অধিনায়ক অনুপস্থিত! কিন্তু কেন এমন হলো?
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দুর্দশা কাটাতে সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক করা হয়। টেকিনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে শুধুমাত্র টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য নিয়োগ দেয়া হয় ভারতীয় শ্রীধরন শ্রীরামকে। কিন্তু শ্রীধরন দায়িত্ব পাওয়ার পর আছেন টানা ছুটিতে। তিনি দায়িত্ব নিয়েই এশিয়া কাপ খেলে বাংলাদেশ। এরপর দলের সঙ্গে আর আসেনি বাংলাদেশে। মাঝে কয়েকদিনের জন্য দেশে এসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণার কাজ করে আবার চলে যান ছুটিতে।
দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা কোনো অনুশীলন করেননি। এদিকে একই অবস্থা ছিল অধিনায়ক সাকিবের ক্ষেত্রে। তিনিও এশিয়া কাপের পর ছুটি নিয়ে দেশ ছাড়া। যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে চলে যানে উইন্ডিজে চলে যান সিপিএল খেলতে। কোচ ও অধিনায়ক দুই জনেই সরাসরি নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন।
এই দুই জনের অনুপস্থিতিতেই হয়নি ফটোসেশন কিংবা প্রেস কনফারেন্স। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক পরিচালক বলেন, ‘অধিনায়ক কোথায়? কোচ কোথায়? কী নিয়ে করা হবে ফটোসেশন বা প্রেস কনফারেন্স। এ সেব নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আমার মতো পরিচালকের এখানে করার কিছু নেই?’
বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটু বলেন, ‘সাকিব না থাকায় এ সব করা হয়নি। সব কিছু নিউ জিল্যান্ডে করা হবে।’ দেশ ছাড়ার আগে সব সময় বাংলাদেশে করা হয়। এবার কেন বিদেশে?
জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘কিছু কারণে তা করা হয়নি। দেশে করা না হলেও আমরা নিউ জিল্যান্ডে করবো। মিডিয়ার সবাই পেয়ে যাবেন।’
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন ফটোসেশন বা প্রেস কনফারেন্স করা বাধ্যতামূলক নয়, এটা একটা ট্র্যাডিশন জানিয়ে বলেন, ‘ আইসিসির ইভেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে ফটোসেশন কিংবা প্রেস কনফারেন্স করা ম্যান্ডেটরি নয়। এটা একটা ট্র্যাডিশন। এটা আমরা নিউ জিল্যান্ড গিয়ে করব।’ যদি বাধ্যতামূলক না হয়, ট্র্যাডিশনই হয়, তাহলে সে ট্র্যাডিশন ভঙ্গ করা কতটা যুক্তিসঙ্গত ছিল?
জবাবে প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘ট্র্যাডিশন ছিল আপনি বলতে পারেন।’ সাকিবের কারণেই এই ট্র্যাডিশন ভঙ্গ করা হলো কি না জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।’
এমপি/এমএমএ/