শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বিশেষ সাক্ষাৎকার

‘বাংলাদেশের মেয়েরা যেন সাবিনাকে ফলো করে’

সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এক সপ্তাহেরও বেশি হয়েছে। কিন্তু তার ঢেউ এখনো আছে। চলছে সাবিনাদের সংবর্ধনার পর সংবর্ধনা। খেলোয়াড়দের নিশ্বাস ফেলার সময় নেই। এই ব্যস্ততার কারণ খেলোয়াড়দের এখনো ছুটি দেওয়া হয়নি। এই ঢেউ থামার পর তারা যাবেন নিজ নিজ বাড়িতে। এ রকম ব্যস্ততার মাঝেও অধিনায়ক বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) প্রথমবারের মতো এককভাবে এসেছিলেন ঢাকাপ্রকাশ-এর অফিসে। দিয়েছেন অনেক সময়। হয়েছে অনেক কথা। সেই সব কথার উল্লেখযোগ্য অংশ ঢাকাপ্রকাশ-এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। 

ঢাকাপ্রকাশ: ঢাকায় নামার পর বিমানবন্দরে এত মানুষ থাকবে, বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবনে আসার পথে দুই পাশে এ রকম মানুষের ঢল থাকবে এটি কি আপনারা ধারণা করতে পেরেছিলেন?

সাবিনা: ম্যাচের দুই দিন আগে থেকে সবার প্রত্যাশা বেড়ে গিয়েছিল। সবাই এক্সাইটেড হয়ে পড়েছিল। আমিও একটা পর্যায়ে ইমোশনাল হয়ে পড়েছিলাম যে সবার মুখে হাসি ধরে রাখতে পারব কি না? ম্যাচ জেতার পর আমাদের ওমেন্স উইংসের চেয়ারম্যান কিরন (মাহফুজ আক্তার কিরন) আপা আমাদের বলেছিলেন তোমাদের জন্য অনেক কিছু অপেক্ষা করছে। তোমরা গেলেই বুঝতে পারবে। আসলে এইভাবে যে আমরা দেখব এটা আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। মানুষ যেভাবে বিমানবন্দর থেকে বাফুফে ভবন পর্যন্ত ছিল, আমার ক্যারিয়ারে বা আমার বয়সে আমি এত মানুষ আগে দেখিনি। আমি বারবার বলে আসছি মানুষের এই ভালোবাসার প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এটা আসলে অনেক বড় একটা পাওয়া।

ঢাকাপ্রকাশ: ক্লান্তি ভর করেছিল কি?

সাবিনা: ক্লান্তি বলতে বিমানবন্দর থেকে আমরা ৫/৬ ঘণ্টার মতো দাঁড়িয়ে এসেছি। মানুষ যেভাবে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল, রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল, সেটার তুলনায় আসলে এটা কিছু না। তারা আমাদের জন্য এসেছে। ক্লান্তি অবশ্যই ছিল। মেয়েরা স্টিল নাউ টায়ার্ড। কারণ, বিশ্রাম ৬/৭ দিন পায়নি বলতে গেলে। ক্লান্তির সঙ্গে সঙ্গে ভালো লাগা, ভালোবাসা ছিল। এটাই বড় কথা।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনারা তো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যাননি। কখন মনে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে?

সাবিনা: প্রথমত আমরা ওভার কনফিডেন্ট ছিলাম না। আমাদের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ। আমি ভারতের খেলা দেখছিলাম। ওদের খেলা দেখার পর মনে হয়েছে এবার আমাদের একটা চান্স আছে। অন্য যে দলগুলো ছিল, তাদের থেকে আমাদের মেয়েরা ফিজিক্যালি অনেক ফিট। মেয়েরা সেটাই মাঠে ব্যবহার করেছে। অন্য দলের প্লেয়াররাও বলেছে বাংলাদেশ একই রিদমে ৯০ মিনিট খেলতে পারে। এটা একটা দলের জন্য অনেক বড় ব্যাপার। আমরা কমিটেড ছিলাম যে সুযোগ যখন আছে সেটা যেন কাজে লাগাই।

ঢাকাপ্রকাশ: আগে কখনো ভারত-নেপাল কোনো দলকেই হারাতে পারেননি। এবার দুই দলকেই হারিয়েছেন? কোন দলকে বেশি শক্তিশালী মনে হয়েছে?

সাবিনা: দুই দলের খেলার ধরন দুই রকম। ভারতের অভিজ্ঞতা বেশি। নেপালেরও আছে। কিন্তু ওদের বেশিরভাগ খেলোয়াড় আমাদের মতো আন্ডার নাইনটিন থেকে এসেছে। ফিজিক্যালি ওরাও অনেক ফিট। দুইটিই ভালো দল। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত তো অনেক শক্তিশালী দল।

ঢাকাপ্রকাশ: সংবর্ধনা পাচ্ছেন কেমন লাগছে?

সাবিনা: আগের কথায় যেতে হয়। কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। গত পরশু শহীদ মিনারে আমরা সাংস্কৃতিক জোট থেকে সংবর্ধনা পেয়েছি। গতকাল সেনাবাহিনী প্রধানের সংবর্ধনা পেয়েছি। এগুলো আসলে মেয়েদের উৎসাহিত করে। গতকালের অনুষ্ঠানে বাবা-মায়েরাও উপস্থিত ছিলেন। এ রকম স্টেজে যখন বাবা-মাকে যখন আনা হয়, তখন ‍তারও অনেক খুশি হন। তাদের মনে হয় যে মেয়েকে ফুটবল দিয়ে ভুল করেননি। মায়েরা, বাবারা যখন এ রকম স্টেজে মেয়েদের এভাবে দেখে এবং নিজেরাও সম্মানিত হয়, তখন বাবা-মাদের দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন হয়। গ্রামের দিকে ১৪/১৫ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে তারা বের হয়ে আসবে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন হবে। তারা বের হয়ে আসবে। এখানে যখন মেয়েরা ভালো করে, ভাববে নিজেদের ভবিষ্যৎগড়ছে, করুক।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাদের পরের টার্গেট?

সাবিনা: সাফে টার্গেট শিরোপা ধরে রাখা। কাজী সালাহউদ্দিন স্যার বলেছেন এশিয়া বা আশিয়ান পর্যায়ে খেলা। উইনের চেয়ে বেশিরভাগ ম্যাচ লস হতে পারে। কারণে এখানে ইউরোপ এশিয়ার ভালো ভালো দলের সঙ্গে খেলা। অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে এখানে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকব। আগে আমরা ভারতের কাছে ৬ গোল খেতাম। নেপালরে কাছে ৩ গোলে হারতাম। এখন আমরা একটা অবস্থানে এসেছি। আমার মনে হয় সময় দিলে আমরা আরও ভালো করতে পারব।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনি দীর্ঘদিন ধরে ফুটবল খেললেও সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর রাতারাতি অনেক পরিবর্তন এসেছে। আগে না বললেও এখন হয়তো অনেকেই বলে ওই যে সাবিনা যাচ্ছে। শুনলে আসলে কেমন লাগে?

সাবিনা: এটা অবশ্যই একটা বড় প্রাপ্তি। পরিশ্রমের ফসল যখন পাই তখন আমাদের কাজের প্রতি আরও আগ্রহ বেড়ে যায়।

ঢাকাপ্রকাশ: ছোটবেলা অনেক খেলাধুলা করতেন? ফুটবলকে কখন বেছে নিলেন বা আগ্রহ হলো?

সাবিনা: আমাদের কোচ ছিলেন আকবর স্যার। আমরা একটা ব্যাচ ছিলাম। উনার দুইটা মেয়েও ছিল সেই ব্যাচে। আমরা সব খেলাই খেলতাম। আমি কাবাডি থেকে শুরু করে হ্যান্ডবল, ভলিবল সব খেলতাম। মহিলা ক্রীড়া সংস্থায় যখন খেলা হতো স্যার আমাদের নিয়ে আসতেন। ২০০৮ সালে সিটি সেল ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হতো । আমার ওটা দিয়েই শুরু। পরে সাফ গেমস হয় বাংলাদেশ। সেখানে আমাদের নিয়ে যাওয়া হয়। আমাদের সাতক্ষীরা থেকে ৫ জন ডাক পাই। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর আমি ফাইনাল সিলেকশনে টিকে যাই। সেখান থেকেই শুরু। এখনো আছি।

ঢাকাপ্রকাশ: শুরুর পথে বাধা পেয়েছিলেন অনেক। সে সময়ের ঘটনা মনে পড়ে?

সাবিনা: আমি যখন শুরু করি আমার বয়স ১২/১৩ ছিল। খেলার বয়সই ছিল। সে রকম প্রতিবন্ধকতা পাইনি। আমার পরিবারের ভালো সমর্থন ছিল। আমার বড় আপু, আমার বাবা-মা। আমরা ৫ বোন। আমাদের বোনদের মধ্যে কেমিস্ট্রি খুব ভালো। আমি আমাদের কোচদের দেখতাম আমরা যেখানে অনুশীলন করতাম, তখন ওখানের লোকাল লোকেরা ঝামেলা করত। কোচকে দেখতাম তাদের সঙ্গে ঝগড়া করতেন। উনাকে গালাগালিও করা হতো। স্যারকে দেখতাম পুলিশেরও হেল্প নিতেন। যখন মনে পড়ে, তখন খারাপ লাগে।

ঢাকাপ্রকাশ: ওদের সঙ্গে দেখা হলে এখন কী বলে?

সাবিনা: ওরা হয়তো গিল্টি ফিল করে যে ওই সময় ওদের হেল্প করা প্রয়োজন ছিল। তাহলে হয়তো মেয়েগুলো আরও ভালো করতে পারত।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাকে দেখে আপনার এলাকার মেয়েরা কতটা উৎসাহী হয়েছে?

সাবিনা: ইতোমধ্যে আমি একটা একাডেমি করেছি, আমার এলাকার এক বড় ভাই আবু সাঈদ উনার হেল্প নিয়ে। উনি চেয়ারম্যান, আমি জেনারেল সেক্রেটারি। ইচ্ছে আছে সাতক্ষীরার ফুটবলকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ইতোমধ্যে দুই বছর হয়ে গেছে। এখন আমাদের এখানে ৬০/৭০ জন খেলোয়াড় আছে ছেলে মেয়ে মিলে।

ঢাকাপ্রকাশ: প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে দেশের বাইরে প্রফেশনাল লিগ খেলছেন। ছেলেদের ক্ষেত্রে সালাহউদ্দিন। সালাহউদ্দিনকে বলা হয় বাংলাদেশের কিংবদন্তি ফুটবলার। আপনি কি মেয়েদের ক্ষেত্রে কিংবদন্তি?

সাবিনা: আমি সেভাবে নিজেকে ভাবি না। মানুষ বলে থাকলে সেটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি ২০১৪/১৫ সালের দিকে শুনেছি সালাহউদ্দিন স্যার দেশের বাইরে খেলেছেন। তার ৪৫/৪৭ বছর পর আমি খেলছি। এটা অবশ্যই আমার জন্য গর্বের বিষয়। এটা কন্টিনিউ করছি এখনো। ৩০ তারিখ যাব মালদ্বীপ।

ঢাকাপ্রকাশ: চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর কার কথা মনে পড়েছে প্রথম?

সাবিনা: আমার প্রথম মনে পড়েছে দেশের মানুষের কথা। অনেকে স্ট্যাটাস দিয়েছে ট্রফিটা দেশে নিয়ে আসুন ক্যাপ্টেন। এরকম কিছু ইমোশনাল স্ট্যাটাস আমি দেখেছি। আমার মনে হয়েছে দেশের মানুষ এখন হাসছে। শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সংবর্ধনায় কেউ কেউ বলেছেন যে খুশিতে তারা কান্না করে ফেলেছিলেন। এটা আসলে আমার মনে ধরেছিল প্রথমে যে, আমি মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনার ফুটবলার হওয়ার পেছনে আকবর আলী ছাড়া আর কার কার অবদান আছে?

সাবিনা: আমি মনে করি আমি নিজে। আমি যদি না যেতাম তাহলে আমি ফটুবলার হতাম না। আকবর আলী স্যার ছিলেন একট পন্থা। উনি আমাকে আমার বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে এসেছিলেন। আমার বড় বোন অনেক সাপোর্ট দিয়েছিলেন। বাবা-মা সাপোর্ট দিয়েছিলেন সবচেয়ে বেশি। সাপোর্ট আমি আমার পরিবারের কাছ থেকে পেয়েছি।

ঢাকাপ্রকাশ: বাংলাদেশে প্রিয় ক্লাব কোনটা?

সাবনিা: সেরকম কোনো প্রিয় দল নেই। কারও খেলা সেভাবে ভালো লাগে না। তবে তারা উন্নতি করুক সেটা চাই। তবে একটা সময় আমিনুল ভাই, জয় ভাইরা যখন খেলতেন তাদের খেলা ভালো লাগত।

ঢাকাপ্রকাশ: এক সময় ফুটবল খুব জনপ্রিয় ছিল শুনেছেন। এখন খুলনার অনেকে ক্রিকেটার। এখন আবার আপনাকে দেখে কী উঠে আসছে?

সাবিনা: ট্রানজেশনটা মোমেন্টটা হবেই এটাই স্বাভাবিক। আমি শুনতাম। উনাদের খেলা দেখা হয়নি। উনাদের ব্যাকগ্রাউন্ড দেখলেই বোঝা যায় উনারা কোনো মাপের প্লেয়ার ছিলেন। আমরা লাকি যে উনারা এখনো আছেন আমাদের ফেডারেশনে।

ঢাকাপ্রকাশ: ইউরোপীয় ফুটবল দেখেন। কোন ক্লাব প্রিয়?

সাবিনা: মেসি যখন ছিল বার্সেলোনার খেলা দেখতাম। এখন পিএসজিতে চলে গেছে। বেশির ভাগ খেলা দেখা হয় না। মধ্যরাতে খেলা দেখায়। ভালো লাগে রোনালদো, নেইমারের খেলা ভালো লাগত। বেশি ভালো লাগে ইনিয়েস্তার খেলা। উনার প্লেমেকার খেলা আমি খুব ভালো উপভোগ করতাম।

ঢাকাপ্রকাশ: উনাদের খেলা কতটা অনসুরণ করে থাকেন?

সাবিনা: নিজের বুদ্ধিমত্তাটা কাজে লাগাতে চেষ্টা করি। কারণ, আমি মাঝে মাঝে যেহেতু প্লে মেকার হিসেবে খেলি, আমি ট্রাই করি ইনিয়েস্তাকে ফলো করার সেভাবে খেলে, পাস দেওয়ার।

ঢাকাপ্রকাশ: সামনে বিশ্বকাপ ফুটবল। কোন দলকে সমর্থন করেন?

সাবনিা: মেসির জন্য আর্জেন্টিাকে সাপোর্ট করি।

ঢাকাপ্রকাশ: আপনাকে যদি বলা হয় মেসি-নেইমার-রোনালদো কার মতো হতে চান, কাকে বেছে নেবেন?

সাবনিা: আমি এই বিষয়ে দ্বিমত করতে চাই। আমি আসলে নিজের অবস্থানকে এভাবে রেখে যেতে চাই, যাতে মানুষ আমাকে ফলো করে। বাংলাদেশের মেয়েরা সাবিনার মতো হতে চায়। উনাদের মতো হতে হয়তো পারব না। তবে উনাদের অনুসরণ করার চেষ্টা করি।

ঢাকাপ্রকাশ: এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা থেকে শুরু করে সেরা খেলোয়াড়, সর্বোচ্চ গোলাদাতা, সেরা গোলরক্ষক, ফেয়ার প্লে সব কিছুই বাংলাদেশের। এ রকম সাফল্য আসবে ভেবেছিলেন, কেমন লাগছে?

সাবিনা: এটা একটা গ্রেট অ্যাচিভমেন্ট। বলে না আল্লাহ পাক যখন দেন পুরোটা ভরে দেন। ব্যাপারটা এ রকমই। আল্লাহর রহমত ছিল। অবশ্যই সষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা যে রকম পরিশ্রম করেছি এটা আমরা ডিজার্ব করি। এটার দাবিদার আসলে আমরাই।

ঢাকাপ্রকাশ: সানজিদার স্ট্যাটাস নিয়ে আপনার মতামত?

সাবিনা: আমি দেখেছি খেলার দিন। এত শর্ট টাইমে এভাবে ভাইরাল হয়ে যাবে ভাবিনি। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী ও ক্রীড়ামন্ত্রীকে বিষয়টি নোট করার জন্য।

এমপি/এসএন/এমএমএ/

 

Header Ad

অনুর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ

তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ২৯ নভেম্বর শুরু হচ্ছে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের এবারের আসর। ওয়ানডে ফরম্যাটে হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই মাঠে নামবেন বাংলাদেশের যুবারা। এশিয়া কাপের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে আজ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

এবারের বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নেতৃত্ব দেবেন আজিজুল হাকিম তামিম। আগামী ২৯ নভেম্বর আফগানিস্তানের বিপক্ষে টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও আফগানিস্তান। অন্যদিকে ‘বি’ গ্রুপে রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, জাপান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ শেষে ১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় ম্যাচে নেপাল ও ৩ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

টুর্নামেন্টের সবগুলো ম্যাচই সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হবে। দুবাই ও শারজা দুই ভেন্যুতে আয়োজিত হবে টুর্নামেন্টের ১৫টি ম্যাচ।

আগামী ২৪ নভেম্বর আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বে বাংলাদেশ। ২৬ নভেম্বর শারজাতে ভারতের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আজিজুল হাকিম তামিমরা।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ স্কোয়াড:
আজিজুল হাকিম তামিম (অধিনায়ক), জাওয়াদ আবরার (সহ অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিফাত বেগ, সামিউন বশির রাতুল, দেবাশীষ সরকার দেবা, রিজান হোসেন, আল ফাহাদ, ইকবাল হাসান ইমন, রাফিউজ্জামান রাফি, ফরিদ হাসান ফয়সাল, মারুফ মৃধা, শিহাব জেমস, মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান বরেণ্য, সাদ ইসলাম রাজিন।

স্ট্যান্ডবাই:
কালাম সিদ্দিকী, শাহরিয়ার আজমীর, ইয়াসির আরাফাত, সানজিদ মজুমদার।

Header Ad

নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন। ছবি: সংগৃহীত

আউয়াল কমিশনের পদত্যাগের আড়াই মাস যেতেই অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে বেছে নেওয়া হয়েছে নতুন নির্বাচন কমিশন। আগামী রোববার শপথ নিতে যাচ্ছে এ কমিশন।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) নতুন নির্বাচন কমিশন বেছে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।

সিদ্ধান্ত মোতাবেক রোববার (২৪ নভেম্বর) বেলা দেড়টায় নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চার কমিশনারকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণ অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের এক মাস পর গত ৫ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করে হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এর আড়াই মাস যেতেই এবার অবসরপ্রাপ্ত সচিব এ এম এম নাসির উদ্দীনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ভার ন্যস্ত থাকবে এ কমিশনের ওপর।

নতুন নির্বাচন কমিশনে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন ছাড়াও কমিশনার হিসেবে থাকছেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ আবদুর রহমানেল মাসুদ, সাবেক যুগ্ম সচিব বেগম তহমিদা আহমদ এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা বিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করার পর ওই কমিটির প্রস্তাবিত ১০ নামের তালিকা থেকে এই নির্বাচন কমিশন বেছে নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।

দেশের চতুর্দশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাসির উদ্দীনক স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকার।

নিয়োগ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নাসির উদ্দীন বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, তা তা করব, ইনশাআল্লাহ। যে দায়িত্ব এসেছে, তা আমাদের সুষ্ঠুভাবে পালন করতে হবে সবার সহযোগিতা নিয়ে।

Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার

ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭১ জন নিহত হয়েছেন। এতে চলমান যুদ্ধে গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে আনাদোলু এজেন্সি জানায়, দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ৪৪ হাজার ৫৬ জন নিহত এবং ১ লাখ ৪ হাজার ২৬৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বোমা ও গুলিতে ৭১ জন নিহত এবং ১৭৬ জন আহত হয়েছেন।

তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক মৃতদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে এবং সেগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়।

এদিকে, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থার কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক্স পোস্টে বলেছেন, গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশই এখন উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। ওইসব এলাকার মানুষেরা নিরাপত্তা ও অস্তিত্বহীনতার মধ্যে বসবাস করছেন।

অনিরাপদ রুটের কারণে গাজাজুড়ে সামান্য ত্রাণ সরবরাহ করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে জানিয়ে ফিলিপ লাজারিনি বলেন, গাজার উত্তরাঞ্চলে মানুষ কঠোর অবরোধের মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধের দুষ্টচক্রে পড়ে তারা জীবন বাঁচাতে ছুটাছুটির মধ্যে রয়েছেন। ৪০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলটি মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত রয়েছে। উপত্যকায় নাগরিক শৃঙ্খলা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

আইসিসির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আদালত দুই ব্যক্তি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ৮ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ২০ মে, ২০২৪ পর্যন্ত সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের জন্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করছে।

বিবৃতি অনুযায়ী, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্ত ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ও জ্ঞাতসারে গাজার বেসামরিক জনগণকে খাদ্য, পানি, ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের পাশাপাশি জ্বালানি ও বিদ্যুৎসহ তাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বস্তু থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে’।

পৃথক এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত জানায়, দেইফ, পুরো নাম মোহাম্মদ দিয়াব ইব্রাহিম আল-মাসরিও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আসামি। বিবৃতি মতে, আদালত ‘সর্বসম্মতভাবে’ তার বিরুদ্ধে ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ইসরাইল ও ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দেইফের বিরুদ্ধে অভিযোগের মধ্যে আরও রয়েছে- ইসরাইলি ভূখণ্ডে রকেট নিক্ষেপ এবং ৭ অক্টোবর হামলা চালানো হামলায় সহস্রাধিক ইসরাইলি নিহত হয়। তবে৭ অক্টোবর হামলার কয়েক মাস পর চলতি বছরের জুলাইয়ে হামাসের সশস্ত্র শাখা কাসসাম ব্রিগেডের দীর্ঘদিনের নেতা দেইফকে এক বিমান হামলায় হত্যার দাবি করেছে ইসরাইল। বিমান হামলাটি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তাঁবুতে এবং একটা পানি শোধনাগারে আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ৯০ জন নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত