চ্যাম্পিয়নই হতে চান নিগাররা
একটা সময় ছিল বিশ্বকাপ ক্রিকেট বাংলাদেশের নাগালের বাইরে। আকাশের চাঁদ। তা পুরুষ-নারী সবার জন্য। ১৯৯৯ সালে আকাশের সেই চাঁদ এসে ধরা দিয়েছিল মুঠোতে পুরুষ দলের মাধ্যমে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পরের বছর টেস্ট মর্যাদা পেয়ে যাওয়ায় বাছাই পর্বের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলেছিল। এর অনেক পরে শুরু হয় মেয়েদের ক্রিকেট। ২০১৪ সাল থেকে তারাও খেলে আসছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট। তবে বাছাই পর্ব খেলে। সেই যন্ত্রণা থেকে তারা এখনো মুক্তি পাননি। এবারও বাছাইপর্ব খেলে টিকিট নিশ্চিত হয়েছে ফাইনালে উঠে। সঙ্গী হয়েছে আয়ারল্যান্ড। তবে আগামীতে আর যাতে বাছাইপর্বের যন্ত্রণায় পুড়তে না হয়, সে ইচ্ছে মেয়েদের। আজ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে সে রকমই অভিব্যক্তি প্রকাশ পেয়েছে তাদের কণ্ঠে।
অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সালমা খাতুন বলেছেন, আমরা আর বারবার কোয়ালিফাই খেলতে চাই না। আগামীতে যাতে সেরা আটে থেকে সরাসরি খেলতে পারি, সে লক্ষ্য থাকবে আমাদের।’ আবুধাবিতে খেলা শুরু হবে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।
মূল পর্বে খেলার টেনশন না থাকাতে আজকের ফাইনাল তাই দুই দলের জন্যই অনেকটা টেনশন মুক্ত। জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন ২০২৩ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার পথে তা অন্তরায় হয়ে উঠবে না। তবে দুই দলই চাইবে নির্ভার থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়েই চূড়ান্ত পর্বে খেলা অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, ‘এখন আমাদের নজর অবশ্যই চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে। ফাইনালে আশা করি আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাসায় ফিরব।’
ফাইনালের দুই প্রতিপক্ষ একই গ্রুপ থেকে উঠে এসেছে। ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। আয়ারল্যান্ড শুধু নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরেছিল ১৪ রানে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
ফাইনালে আসার পথে বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ড ছাড়া স্কটল্যান্ডকে ৬ উইকেটে, যুক্তারষ্ট্রকে ৫৫ রানে এবং সেমিতে থাইল্যান্ডকে ১১ রানে হারিয়েছিল। অপরদিকে আয়ারল্যান্ড প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হারের পর যুক্তারষ্ট্রকে ৯ উইকেটে, স্কটল্যান্ডকে ১৯ রানে এবং সেমিতে জিম্বাবুয়েকে ৪ রানে হারিয়েছিল।
ফাইনাল খেলা নিয়ে অধিনায়ক নিগার সুলতানা বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছিলাম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করতে। আমরা তা পেরেছি। এত বছর ধরে আমরা একসঙ্গে খেলছি। এখন সময় হয়েছে গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার যে আমরা কতটা ভালো, দল হিসেবে কতটা উন্নতি করেছি।’
গোটা আসরে দলের খেলোয়াড়দের নৈপুণ্যে গর্বিত অধিনায়ক নিগার বলেন, ‘পুরো টুর্নামেন্টে আমার মেয়েরা যেভাবে খেলেছে অধিনায়ক হিসেবে আমি গর্ব অনুভব করি। এখন অবশ্যই আমাদের নজর চ্যাম্পিয়নশিপের দিকে।’ গত আসরেও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ফাইনালে থাইল্যান্ডকে হারিয়েছিল ৭০ রানে।
ব্যাট হাতে এখন পর্যন্ত আসরের সর্বোচ্চ রান নিগারেরই। ৪ ম্যাচ খেলে তিনি রান করেছেন ১৭৪। হাঁকিয়েছেন ২টি ফিফটি। প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৭ রান করার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৫৬ রান করে অপরাজিত থাকেন। মুর্শিদা খাতুন করেছেন ১৩৪ রান। বল হাতে সালমা খাতুন। বল হাতেও আলো ছড়াচ্ছেন সালমা-নাহিদারা। সালমা উইকেট নিয়েচেন ৮টি। নাহিদার ৬টি। সোহেলির উইকেট ৪টি।
এমপি/এসএন