বাদ পড়া-সুযোগ পাওয়াদের নিয়ে নির্বাচকদের ব্যাখ্যা
অন্য দলগুলো যখন নির্ভাবনায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা করছে, বাংলাদেশ দল সেখানে জাল ফেলে ক্রিকেটারের সন্ধানে। ২২ বছর থেকে টেস্ট মযার্দা পাওয়া একটি দলের জন্য এটি ছিল খুবই হতাশজনক। জাতীয় দলের পাইপলাইনে মরিচিকা পড়া, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকা, যখন যেটা মন চায় করে ফেলা-এই সবের ফলই ভুগতে হয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করতে গিয়ে। ঘোষণার পূর্বাভাস যদি হয় হ-য-ব-র-ল, সেখানে গোজামিল থাকবে এটাই স্বাভাবিক।তাইতো দেখা যায় ফর্মের কারণে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যেমন বাদ পড়েছেন, তেমনি আবার ফর্মের কারণে বাদ পড়া নাজমুল হোসেন শান্ত কোনো ম্যাচ না খেলেই দলে ফিরেছেন। নতুন মুখের সন্ধানে নেমে দলে নেওয়া পারভেজ হোসেন ইমনকে মাত্র এক ম্যাচ খেলেই বাদ দেয়া হয়েছে। এখানে নেওয়া, বাদ দেওয়ার জন্য নির্বাচকরা নিজেদের যুক্তি দেখিয়েছেন, কিন্তু সে সব যুক্তি কোনও কোনও ক্ষেত্রে যথার্থ হলেও, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছিল শাক দিয়ে মাছ ডাকার মতো।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, ‘মাহমুদউল্লাহর প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, জাতীয় দলের হয়ে অনেক ভালো ভালো খেলা আমাদেরকে উপহার দিয়েছেন। এবার আমাদের টি-টোয়েন্টির যে টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট, ওর একটা পরিকল্পনা আমাদেরকে দিয়েছে এবং আগামী এক বছরের জন্য যে পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগুচ্ছি, সেই পরিকল্পনায় আমরা গিয়েছি। টিম ম্যানেজেমেন্টর সবার সম্মতিক্রমে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ‘অফ’ করা হয়েছে।’ সাকিব দেশের বাইরে থাকলেও তার সঙ্গেও মাহমুদউল্লাহর বিষয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সাকিব টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ থেকেই আমাদের ক্যাপ্টেন। সবার সম্মতিক্রমেই এই সিদ্ধান্তটা নেয়া হয়েছে।’
জিম্বাবুয়ে সফরে ভালো করতে না পারার কারণে নাজমুল হোসেন শান্তকে বাদ দেয়া হয়েছিল। শুধু এই সিরিজই নয়। এর আগে উইন্ডিজ সফরেও তিনি ভালো করতে পারেননি। এই দুই সিরিজে রান করেছিলেন উইন্ডিজ সফরে টেস্টে ০ ও ১৭, ২৬ ও ৪২, ওয়ানডেতে ৩৭,২০,১, জিম্বাবুয়ে সফরে টি-টোয়েন্টিতে ৩৭, ১৯*, ১৬, ওয়ানডেতে ৩৮,০। দল থেকে বাদ পড়ার পর নাজমুল হোসেন শান্ত স্ত্রী নিয়ে ঘুরতে দেশের বাইরে বেড়াতে চলে যান। খেলা হয়নি কোনও ম্যাচ। সেই নাজমুলকে দলে নেয়া প্রসঙ্গে মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানান তাকে ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘শান্তকে নিয়ে অনেক কিছুই আলোচনা হয়েছে। অনেক অ্যানালাইসিস করা হয়েছে ব্যাকআপ একটা ওপেনারের জন্য। সবার সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্তগুলো এসেছে। এখানে কারও দ্বিমত থাকেনি।
পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে প্রধান নির্বচকের ব্যাখ্যা ছিল, ‘তাকে আরও তৈরি হতে হবে। সে এইচপিতে (হাইপারম্যান্স ইউনিট) আছে। এনামুল হক বিজয় কিংবা মোহাম্মদ নাঈম শেখের বাদ পড়া নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। কারণ এরা ভালো করতে পারেননি।
নির্বাচকরা দল ঘোষণা করতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন বিবেচনা করে পাঁচজন পেসার মোস্তাফিজ, তাসকিন, এবাদত, সাইফউদ্দিন ও হাসান মাহমুদকে নেওয়া হয়েছে। অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন সাকিব, মিরাজ মোসাদ্দেক। এই তিনজনই স্পিনিং অলরাউন্ডারএ ছাড়া দলে আছেন আরেক স্পিনার নাসুম আহমেদ। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হলেন সাইফউদ্দিন। ওপেনার লিটন দাস, মিরাজের সঙ্গে ব্যাকআপ হিসেবে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাটসম্যান হিসেবে আছেন সাকিব, আফিফ, নুরুল হাসান সোহান, সাব্বির রহমান, মোাসদ্দেক।
এমপি/এএস