পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের মেয়েরা
অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের হ্যাটট্রিকে পাকিস্তানকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনাল খেলা অনেকটা নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা। ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে।
নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে আজ শনিবার দিনের দ্বিতীয় খেলায় ভারতের কাছে মালদ্বীপ হারলেই বাংলাদেশের ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেমিফাইনালে যেতে আর কোনো হিসেব-নিকেশেরই প্রয়োজন হবে না। তখন হিসেব-নিকেশ দাঁড়াবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে। সেই লড়াইয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা ভারতের মুখোমুখি হবে ১৩ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল মালদ্বীপকে। ভারত ৩-০ গোলে জয়ী হয়েছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে। পরপর দুই ম্যাচে হেরে পাকিস্তান আসর থেকে বিদায় নিল। ১৩ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের বিপক্ষে তাদের ম্যাচ নিয়ম রক্ষার।
প্রথমার্ধেই বাংলাদেশ ৪-০ গোলে এগিয়েছিল। সাবিনার হ্যাটট্রিক ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে অপর গোল তিনটি করেন মনিকা চামকা, সিরাত জাহান স্বপ্না ও ঋতুপর্না।
পাকিস্তানের উপর ফিফার নিষেধাজ্ঞা ছিল। যে কারণে তারা দীর্ঘদিন আর্ন্তজাতিক ফুটবল ম্যাচ খেলতে পারেনি। সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর পাকিস্তান এই আসর দিয়ে তাদের মেয়েরা আবার আর্ন্তজাতিক ফুটবলে ফিরেছে। যে কারণে তারা বাংলাদেশের মেয়েদের সঙ্গে আর পেরে উঠেনি।
বৃষ্টিভেজা ভারী মাঠে গোল পেতে বাংলাদেশকে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ৩ মিনিটেই মনিকা চাকমার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক সাবিনার কাছ থেকে বল পেয়ে গোলের খাতা খুলেন মনিকা। শুরুতেই গোল হজম করার পর পাকিস্তান বাংলাদেশের আক্রমণ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে এবং সেখানে কিছুটা সফলও হয়। কারণ পরের গোলের জন্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয় ২৮ মিনিট পর্যন্ত। দিরাত জাহান স্বপ্নার গোলে বাংলাদেশ ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। এবারও গোলের উৎস সৃষ্টি হয় সাবিনার কাছ থেকে। মাঝমাঠ থেকে মারিয়া বল বাড়িয়েছিলেন সাবিনার কাছে। সাবিনা সেই বল বাড়িয়ে দেন স্বপ্নার দিকে। ব্যস এতেই স্বপ্না কাজের কাজ সেরে নেন। এরপর পাকিস্তানের রক্ষণে ফাটল ধরে। বানের পানির মতো গোল হতে থাকে। তাদের এই রক্ষণে ফাটল ধরান অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। দুই গোলের উৎস হওয়ার পর এবার নিজেই মনযোগী হন গোল করার দিকে। পেয়ে যান জোড়া গোল। ৩১ থেকে ৩৫ এই ৪ মিনিটের ব্যবধানে তিনি ২ গোল করেন। মনিকার কাছ থেকে বল পেয়ে টোকা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। রক্ষণভাগ থেকে আঁখি খাতুনের লম্বা পাস সানজিদা হয়ে সাবিনার কাছে গেলে তিনি সেটিকে গোলে পরিণত করেন। আগের ম্যাচেও তিনি মালদ্বীপের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিলেন। প্রথমার্ধের বাকি সময় পাকিস্তান নিজেদের জালে আর কোনো গোল প্রবেশ করতে দেয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে পাকিস্তানে জালে বাংলাদেশ আরও ২ গোল দেয়। ৫৮ মিনিটে সাবিনা খাতুন তার হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন। ডান প্রান্ত থেকে মারিয়ার ভেসে আসা ক্রস থেকে বক্সের ভেতর সাবিনা হেড করে হ্যাটট্রিক করেন। এবারের আসরে এটি প্রথম হ্যাটট্রিক আর সাফে তার দ্বিতীয় হ্যাটটিক। আগের হ্যাটট্রিক করেছিলেন ২০১৬ সালে শিলগুড়িতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এবারের আসরে সাবিনার এটি ছিল পঞ্চম গোল। খেলার শেষ গোল হয় ৭৭ মিনিটে। মনিকার কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে বদলি খেলোয়াড় ঋতুপর্ণার আচমকা জোড়ালো শট জাল খোঁজে পায়।
এমপি/আরএ/