এবাদতে আশা, এবাদতেই হতাশা
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। যে কারণে এশিয়া কাপ নিয়েও কোনো আশা ছিল না। এমন কী সুপার ফোরে খেলাও! তারপরও খেলোয়াড় থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট, এমন কী সবাই মনে প্রাণে চাচ্ছিলেন অন্তত যেন সুপার ফোর খেলা যায়। তার জন্য প্রয়োজন ছিল শ্রীলঙ্কাকে হারানো। আবার একই সমীকরণ ছিল শ্রীলঙ্কারও। দুই দলের জন্য তাই খেলাটি ছিল ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচ। এমন এক সমীকরণে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ দারুণ এক বাজি ধরেছিল। চার বছর আগে টি-টোয়েন্টি খেলা মেহেদী হাসান মিরাজ ও তিন বছর আগে খেলা সাব্বির রহমানকে একাদশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি এবাদতের অভিষেকও করিয়ে দেয়। এই জুয়াতে বাংলাদেশ প্রায় জিতেই গিয়েছিল।
সাব্বির রহমান শুরুতেই ৫ বলে ৬ রান করে আউট হয়ে গেলেও তার অ্যাপ্রোচ ছিল প্রশংসনীয় আক্রমণাত্মক। তিন বছর পর খেলতে নেমে প্রথম বলেই প্যাডেল সুইপ করা ছিল অনেক সাহসীকতার পরিচয়। মেহেদী হাসান মিরাজ তো খেলেন ২৬ বলে দুইটি করে চার ও ছয় মেরে ৩৮ রান। বাকি থাকেন এবাদত। সেখানে তার হাত ধরেই বোলিংয়ে বাংলাদেশ পেয়েছিল প্রথম জোড়া সাফল্য।
এবাদত তার প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন। পরের ওভার আবারও আঘাত। দুই ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। এই তিনটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম ৩ উইকেট। ফলে লঙ্কানদের উড়ন্ত সূচনায় ভাট পড়ে। বিনা উইকেটে ৪৫ রান থেকে দলের রান দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৬৭। ম্যাচ পুরোই বাংলাদেশের গ্রিপে। কিন্তু সেই এবদাত আবার যখন আক্রমণে ফিরে আসেন, তখন তার সেই ক্ষুরধার বোলিং আর থাকেনি।
প্রথম ৩ উইকেটই তিনি পেয়েছিলেন শট বল থেকে। ফিরে এসেও সেই শট বল করেন। এখানে তিনি তাল হারিয়ে ফেলেন। শট বলগুলো হয়ে যাচ্ছিল ওয়াইড। তৃতীয় ওভারেই দেন দুইটি ওয়াইড। সঙ্গে একটি নো বল। রান দেন ২২। পরের ওভারে আবারও একটি করে নো ও ওয়াইড বলসহ ১৭ রান দেন ১৭। প্রথম দুই ওভারে ১৩ রানে ৩ উইকেট। পরের দুই ওভারে ৩৯ রানে শূন্য উইকেট। এভাবেই মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ের নায়ক এবাদত অভিষেক ম্যাচে দেখে ফেলেন মুদ্রার দুই পিঠই। এমনটি হওয়ার কারণ হিসেবে সাকিব মনে করেন অভিজ্ঞতার অভাব।
তিনি বলেন, ‘দেখুন এবাদতের জন্য যেটা হয়েছে, আমার ধারণা এ রকম প্রেসারে সে আগে কখনো খেলেনি। দিস ইজ দি ফার্স্ট টাইম অভিষেক। ওডিআই একটা/দুইটা খেলেছে। টেস্ট খেলেছে রেগুলার। কিন্তু এ রকম প্রেসার গেম এ রকম বড় স্টেজে তার জন্য প্রথম ছিল। তাই ওর অনেক কিছু শেখার আছে।’
এবাদতের প্রশংসা করে সাকিব বলেন, ‘প্রথম দুই ওভার যেভাবে বল করেছে আমাদের পুরো ম্যাচেই এনে দিয়েছিল। তাই স্বাভাবিকভাবে আমরা ভেবেছি যে আজ ওর দিনটা যেতে পারে বা ওই আমাদের সবথেকে ভালো বোলার হবে। এটা প্রত্যাশাই করা যায়, যেহেতু একটা বোলার প্রথম দুই ওভারে তিনটা উইকেট নিয়ে দিয়েছে। তার রিদম ভালো থাকবে। সে অনেক পজেটিভ অবস্থায় থাকবে। মেন্টালি অনেক ভালো অবস্থায় চলে আসে এ রকম পরিস্থিতিতে। কিন্তু আনফরচুনেটলি হয়নি। আমরা ধারণা অনেক কিছুই সে এই ম্যাচ থেকে শিখতে পারবে।’
এমপি/এসএন