চাপ নিতে পারছেন না ক্রিকেটাররা: সুজন
টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপ বাংলাদেশের জন্য এই ফরম্যাটে দিন বদলের গান। চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। তাই গত দুই আসরের রানার্সআপ হওয়ার পরও এবার সুপার ফোরে খেলতে পারাটাই হবে অনেক বড় প্রাপ্তি। তাই এই আসর নিজেদের মেলে ধরার। টার্গেট অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়াতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সে রকম কোনো কিছুই ছিল না।
ব্যাটসম্যানদের অ্যাপ্রোচ ছিল খুবই নেগেটিভ। টি-টোয়েন্টি মানেই চার-ছক্কার মিলন মেলা। কিন্তু বাংলাদেশে ব্যাটসম্যানদের মাঝে তার অভাব ছিল প্রকট। চেষ্টা করতেই দেখা যায়নি কাউকে। সেখানে আফগানরা ফসকে যাওয়া ম্যাচ বের করে নিয়ে এসেছে ছক্কার বৃষ্টিতে। ১৬ থেকে ১৯ এই চার ওভারে তারা ছয় ছয়টি ছক্কা মেরে ম্যাচ জিতে নেয়। এ নিয়ে আক্ষেপ ঝরেছে দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদের কণ্ঠে।
তিনি বলেন, 'আমরা যে মানসিকতার পরিবর্তনের কথা বলছিলাম, সেটা আমি দেখতে পাইনি (আফগানিস্তানের বিপক্ষে) বলে আমি বেশি হতাশ। হারটার জন্য বড় হতাশ না। হারতেই পারি। এমন না যে, বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত জিতি বলে আমাদের খারাপ লাগছে জিততে পারিনি। আমার কথা হচ্ছে, আমরা যদি জিততে চাই। জেতার জন্য প্রথম যে শর্ত, সেগুলো আমরা মানছি না আসলে। আমার কাছে চেষ্টাটাই সবচেয়ে বড় জিনিস। এই চেষ্টাই কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না। যদি প্রথম বলেই কেউ মারতে গিয়ে আউট হয়ে যায়, আমি মেনে নেব। কিন্তু কেউ ডিফেন্স করে করে আউট হয়ে যাচ্ছে, সেটা মানব না। ১৪-১৫ বল খেলে ৩০-৪০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করে আউট হয়ে যাচ্ছে, এটা খুব ব্যথিত করে। আপনি যদি ইনটেন্ট দেখিয়ে আউট হন, আমরা এটা মেনে নেব। কিন্তু আপনি যদি ইনটেন্ট না দেখান, তাহলে মনে হয়, আপনার দলে থাকার যোগ্যতাই নাই।’
আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইনিংসে একমাত্র ছক্কা মেরেছিলেন মোসাদ্দেক। কিন্তু এই ছক্কা মারতে গিয়ে তিনিও আউট হতে গিয়ে বেঁচে গেছেন। খালেদ মাহমুদ এ রকম ইচ্ছেটাই চান দলের ব্যাটসম্যানদের মাঝে। তিনি বলেন, 'যদি কোনো নতুন শট তাদের খেলতে হয়, তো খেলবে। মোসাদ্দেক যেটা ছয় মেরেছে, ম্যাচে আমাদের একমাত্র, সেটা ক্যাচই হয়েছিল। বাউন্ডারি রোপে পা না দিলে তো আউটই। সেটা হলে আমরা মন খারাপ করতাম না। কারণ, আমি বুঝতাম সোজা ব্যাটে ছয় মারার চেষ্টা করেছিল। আমার কাছে এই চেষ্টাটাই সবচেয়ে বড় জিনিস। আমি এই চেষ্টাটাই কিন্তু দেখতে পাচ্ছি না। আমি চাই এই চেষ্টাটা দেখতে। যদি প্রথম বলেই কেউ মারতে গিয়ে আউট হয়ে যায়, আমি মেনে নেব। কিন্তু কেউ ডিফেন্স করে করে আউট হয়ে যাচ্ছে সেটা মানব না।'
আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অলিখিত সেমি ফাইনালে খালেদ মাহমুদ দলের খেলোয়াড়দের মাঝে সে রকম চেষ্টাটাই দেখতে চান।
২২ গজে গিয়ে ব্যাটসম্যানরা না পারার সম্পর্কে বলতে গিয়ে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সমস্যা হচ্ছে মাঠে গিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারছি না, যেটা অনুশীলনে পারছি। অনুশীলন হচ্ছে এমন একটা জায়গা যেখানে স্বাধীনতা থাকে, আপনি আউট হলেও আউট না। ম্যাচে তো এটা থাকে না। চাপ, গণমাধ্যম, দর্শক যতই বলেন, প্রেসারটা নিতে আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। খেলোয়াড়দের চিন্তা করতে হবে কীভাবে আমরা চাপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারি এবং কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি।’
এখান থেকে বের হয়ে আসার জন্য তিনি মানসিক পরিবর্তনটা সবার আগে প্রয়োজন বলে জানান। তিনি বলেন, 'আমাদের ব্যাটিংয়ের উন্নতিটা খুব প্রয়োজন। আমাদের টপ অর্ডারে সবচেয়ে বড় সমস্যা, উদ্বোধনী জুটি ক্লিক করছে না কোনোভাবেই। আমি আশা করি, যারাই খেলবে ওপেনিংয়ে, তাদের যে পরিকল্পনা থাকবে, সেটা অনুযায়ী ব্যাট করবে।’
এসএন