শ্রীলঙ্কাকে পাত্তাই দিল না আফগানিস্তান

এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি আসরের পর্দা উন্মোচন ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে পাত্তাই পায়নি শ্রীলঙ্কা। ৮ উইকেটের বড় ব্যাবধানে শুধু ম্যাচই জিতেনি, সেই সঙ্গে ৯.১ ওভার অব্যবহৃত রেখে নেট রান রেটও অনেক বাড়িয়ে নিয়েছে। আফগানিস্তানের নেট রান রেট +৫.১৭৫, শ্রীলঙ্কার -৫.১৭৫। গ্রুপ পর্বে যদি তিন দলের পয়েন্টই সমান হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের এই রান রেট তাদের সুপার ফোরে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বড় হাতিয়ার হয়ে উঠবে। এমন কি এই নেট রান রেট এক ম্যাচে জিতেই তাদের সুপার ফোরের রাস্তা অনেকটা মসৃন করে দিয়েছে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা ১৯.৪ ওভারে মাত্র ১০৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। আফগানরা সেই রান অতিক্রম করে ১০.১ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৬ রান করে।
এশিয়া কাপের এবারের আসরের স্বাগতিক ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতির কারণে পরে আর তাদের পক্ষে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। স্থানান্তরিত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে। কিন্তু আয়োজক শ্রীলঙ্কাই। সেই শ্রীলঙ্কাকেই এমন ‘বধ’ করেন প্রথমে আফগান পেস ও স্পিনাররা মিলে। বল হাতে পেসার ফজলহক ফারকী ১১ রানে নেন ৩ উইকটে। স্পিনার মুজিবুর রহমান ২৪ রানে নেন ২ উইকেট। আরেক স্পিনার মোহাম্মদ নবীও নেন ২ উইকেট মাত্র ১৪ রান। সবচেয়ে ভয়ংকর লেগ স্পিনার রশিদ খান কোনো উইকেট নিতে না পারলেও রান দেন মাত্র ১২। এমন আটোসাঁটো বোলিংয়ের কারণে ১২০ বলের মাঝে ৬০ বলই ছিল ডট। যে কারণে পরো ২০ ওভার খেলা সম্ভব হয়নি দ্বীপ রাষ্ট্রটির পক্ষে। সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে ভানুকা রাজাপাকসের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া চামিকা করুনারত্নে ৩১ ও দানুসকা গুনাতিলকে ১৭ রান করেন। আর কোনও ব্যাটসম্যান দুই অংকের রান করতে পারেননি। বল হাতে তোপের পড় শ্রীলঙ্কানরা পরে ব্যাটচ হাতে পড়ে রহমতউল্লাহ গুলবাজের তোপে। তিনি মাত্র ১৮ বলে ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন।
শুরুতে ফজল হক ফারকীর তোপে পড়ে ৫ রানে শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেট হারিয়ে ধুকছিল। সেখান থেকে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ভানুকা ও চামিকা মিলে হাল ধরে ৪৪ রান যোগ করে অবস্থার সামাল দিয়েছিলেন। কিন্ত ফজলহক ফারুকীর তোপের পর মুজিবুর রহমান ও মোহাম্মদ নবীর তোপের সঙ্গে দুইটি রান আউট যোগ হলে লঙ্কানদের অবস্থা আবার করুন হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তারা মাত্র ১৫ রানের ব্যবধানে ৬০ রান থেকে ৭৫ রানের মাঝে হারায় ৫ উইকেট। দলের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ৭৫। তাদের শতরান করাই কঠিন হয়ে পড়ে। পরে চামিকা শেষ উইকেট জুটিতে দিলশান মাধুশঙ্কাকে নিয়ে ৩০ রান যোগ করলে দলের সংগ্রহ শতরান অতিক্রম করে। এই ৩০ রানের মাঝে মাধুশঙ্কার অবদান ছিল মাত্র ১ রানের।
১০৫ রান খুব বড় টার্গেট না। কিন্তু আফগানরা যেভাবে জিতেছে তা ছিল এক কথায় অবাক করার মতোই। তাদের মারমুখি ব্যাটিং দেখে মনে হবে তারা ১০৫ রান নয়, ২০৫ রান তাড়া করতে নেমেছে। ব্যাটিং পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই তাদের রান আসে বিনা উইকেটে ৮৩ রান। বেশি আক্রমণাত্বক ছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান ওপেনার রহমতউল্লাহ গুলবাজ। তিনি মাত্র ১৮ বলে ৪ ছক্কা ৩ বাউন্ডারিতে ৪০ রান করে আউট হন পাওয়ার প্লে শেষে পরের ওভারের প্রথম বলেই। উদ্বোধনী জুটিতে তার সঙ্গী ছিলেন হযরতউল্লাহ জাজাই। তিনি শেষ পর্যন্ত ২৮ বলে ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ইব্রাহিম জাদরানের (১৫) সঙ্গে তিনি দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২০ রান যোগ করেন।
এমপি/এএস
