আরও দু-একটা উইকেট পেলে ভালো লাগত শরিফুলের
ভয় ছিল, ছিল শঙ্কা। থাকাটাই স্বাভাবিক। প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড। যেখানে গত ২১ বছরে পাওয়া হয়নি কোনো জয়। নতুন বছরের প্রথম দিন তাই ভয় নিয়েই খেলতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু পুরাতনকে মুছে ফেলে নতুন রচনা লেখার তাড়নায় বিভোর মুমিনুল বাহিনী সব ভয় আর শঙ্কা দূর করে সমান তালে লড়ে প্রথম দিনে নিজেদের কর্তৃত্বের সমান ভাগ বসিয়েছে। আর এ কাজটি করতে যিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তিনি হলেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম।
ইনিংসের শুরুতেই স্বাগতিকদের ইনিংসে আঘাত। নেই দলপতি টম লাথামের উইকেট। শিকারি এই শরিফুল। তখন ইনিংসের দৈর্ঘ্য আর কতো হয়েছে। ৩.৩ ওভার বা ২১ বল। শরিফুল শিকার ধরেন নিজের দ্বিতীয় ওভারেই। শুধু উইকেটই পেয়েই থেমে থাকেননি। প্রথম ঘণ্টায় তিনি আর তাসকিন মিলে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরে বেশ ভুগিয়েছেন। যে কারণে প্রথম সেশনে রান উঠেছিল ১ উইকেটে মাত্র ৬৬। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে উইকেট আবার ব্যাটসম্যানদের পক্ষে কথা বলতে থাকে। কমতে থাকে বোলারদের আধিপত্যও।
শরিফুলের কর্মযজ্ঞ পরে আরও ছিল। জীবনের শেষ টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন রস টেলর। তার ইনিংসকে তিনি মেলে ধরতে দেননি। ব্যক্তিগত ৩১ রানে আউট করে টেলরকে হতাশায় ডুবান। সারাদিন ২০ ওভার বোলিং করে ২ উইকটে নেওয়ার পাশাপাশি বোলিং করেছেন ইকোনমি। ওভার প্রতি ২.৬৫ গড়ে রান দিয়েছেন ৫৩।
নিউ জিল্যান্ডের বাউন্সি উইকেটে বাংলাদেশের পেসাররা যথেষ্ট ফায়দা নিয়েছেন প্রথম দিনই। যে ৮৭.৩ ওভার খেলা হয়েছে, সেখানে তিন পেসার মিলেই করেছেন ৫৫ ওভার। এমনটি সচরাচর বাংলাদেশের ইনিংসে দেখাই যায় না। শরিফুল ও তাসকিন ২০ ওভার করে এবং এবাদত ১৫ ওভার বোলিং করেন।
শরিফুলের কিন্তু ক্যারিয়ারের এটি দ্বিতীয় টেস্ট। অভিষেক হয়েছিল এ বছরই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে। পেয়েছিলেন ১ উইকেট। আজ ২ উইকেট নিয়ে করেছেন সেরা বোলিং। এই বোলিংকে আরও ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ অবারিত আছে আগামীতে। আগামীকালই হয়ে যেতে পারে তা!
শরিফুল অবশ্য আজ ২ উইকেট নিতে পেরে বেজায় খুশি। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ খুশি, তবে মনের ভেতর কিন্তু শব্দটা থাকেই। যদি আরও একটা বা দুইটা উইকেট পাওয়া যেত, তা’হলে আরো খুশি লাগত।’ পিচ নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথম ঘন্টায় বোলিং করে ভালো লেগেছে। বল ভালো সুইং করেছিল। গতি ছিল। বোলিং উপভোগ করেছি বেশ। তবে মধ্যাহ্ন বিরতির পরে পিচ একটু ভিন্ন ছিল। অনেকটা ফ্লাট হয়ে গেছিল এবং বল সুজাসুজি যাচ্ছিল। যখন এ রকম দেখলাম, তখন আমরা লাইন-লেন্থ একটু পিছিয়ে বোলিং করেছি, যেন রান তোলা কঠিন হয়।’ সেঞ্চুরিয়ান ডেভন কনওয়ের উইকেটকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, এখন স্বাগতিকদের অলআউট করার ভাবনা শরিফুলদের। তিনি বলেন,‘কনওয়ের উইকেটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সে ভালো খেলছিল। মমিনুল ভাই এসে ব্রেকথ্র এনে দিলেন। ইনশাআল্লাহ আমরা চেষ্টা করব এ রকম রানরেট ধরে রেখে তাদেরকে তাড়াতাড়ি অলআউট করার।’
এমপি/এমএমএ/