কনওয়ের অনেক ‘প্রথম’র এক সেঞ্চুরি
কনওয়ের সেঞ্চুরিকে কী বলা যায়? নতুন বছরে প্রথম দিনই এক অনন্য উপহার! উপহারই বটে। আগের রাতে নতুন বছরকে যে যার মতো করে বরণ করে নিয়েছে।
পরের দিন সকালেই টেস্ট ম্যাচ থাকায় নিউ জিল্যান্ড ও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পক্ষে রাত জাগা সম্ভব হয়নি। সকালে খেলতে নেমেই তিন অংকের মালা পরা-নতুন বছরের প্রথম দিনই এ রকম প্রাপ্তি হৃদয়ের অনুভূতিতে অন্য রকম দোলা দিয়ে যায়।
কল্পনার চোখ অনেক বেশি বিস্তৃত হয়ে যায়-সারা বছরটা তাহলে ভালোই যাবে।
কনওয়ের এই সেঞ্চুরিতে শুধু নতুন বছরের প্রথম দিনের প্রথম সেঞ্চুরিই নয়, আরও অনেক ‘প্রথম’ জড়িয়ে আছে। ঘরের মাঠে তার ছিল প্রথম টেস্ট। আর সেখানেই পেলেন সেঞ্চুরি। তার অভিষেক হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে ২০২১ সালের জুনে। অভিষেকেই তিনি হাঁকিয়েছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি। সেই ডাবল সেঞ্চুরি ছিল আবার প্রথম দিনই। দেশের বাইরে প্রথম দিনই সেঞ্চুরি (ডাবল সেঞ্চুরি) আবার ঘরে মাঠে প্রথম দিনই সেঞ্চুরি-টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে এমন নজির দ্বিতীয়টি নেই খুব সম্ভবত।
আবার বছরে প্রথম দিনই টেস্ট ম্যাচ সেটিও ছিল ৬৭ বছর আগে। কনওয়ের সেঞ্চুরিতে যেখানে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নাম, তেমনি ৬৭ বছর আগে বছরের প্রথম দিনের টেস্টেও জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নাম। না, এখানে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সে সময় বাংলাদেশ প্রতিপক্ষ হিসেবে ছিল না। ছিল ভেন্যু হিসেবে। পাকিস্তান ভারতের পাঁচ টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্টে। এবারও দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্ট।
কনওয়ের এই টেস্ট ছিল আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে আবার ফিরে আসা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইনজুরির কারণে ছিটকে পড়েছিলেন। এরপর এই টেস্ট দিয়ে আবার ফিরলেন। আর ফিরেই বাজিমাত। নববর্ষে কি চমৎকার উপহারই না দিলেন সবাইকে।
কনওয়ে যেভাবে খেলছিলেন তাতে করে তার ইনিংসে ১২২ রানে না থেমে আরও বহদুর যাওয়ার কথা ছিল। দলীয় ১ রানে নিয়মিত দলপতি কেন উইলিয়ামসনের বিদায়ের পর কনওয়ে উইল ইয়াংকে সঙ্গে নিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। নিজের শতকের দেখা পেয়ে এগুচ্ছিলেন আরও সামনের দিকে। কিন্তু তিনি যেভাবে খেলছিলেন, আর যে বল আউট হয়েছিলেন তা ছিল সম্পূর্ণ বেমানান।বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল বল হাতে তুলে নেনই না। আর উইকেট পাওয়াতো অনেক পরের কথা। সেই মুমিনুলই ফিরিয়ে দেন কনওয়েকে। তার একটি নিরামিষ বল গ্লান্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে জমা পড়ে। মুমিনুল টেস্ট উইকেট পেলেন প্রায় আড়াই বছর পর।
নিরামিষ বলে আউট হলেও অনেক ‘প্রথম’র জন্ম দিয়ে বিদায় নেন ডেভন কনওয়ে।
এমপি/এমএমএ/