ডোমিঙ্গোর কাছে গোমর ফাঁসের কারণ জানতে চাইবে বিসিবি!
টি-টোয়েন্টি দলের প্রধান কোচ থেকে অপসারিত হওয়ার পর ডোমিঙ্গো জানিয়েছিলেন তিনি খোলা মনের মানুষ। বিষয়টিতে তিনি সহজভাবেই নিয়েছেন।এমনকি এই সিদ্ধান্তের কারণে তিনি এখন থেকে পরিবারকেও বেশি বেশি সময় দিতে পারবেন। কিন্তু ৪৮ ঘন্টা পার না হতেই একটি জাতীয় দৈনিককে তিনি দলের ভেতরের অনেক খবর জানিয়েছেন, যা একদিকে বিসিবির জন্য বিব্রতকর, তেমনি এমন কথা বলার পর তার অবস্থান আরও নড়বড়ে হয়ে উঠবে। যদিও তিনি এখনো টেস্ট ও ওয়ানডে দলের দায়িত্বে আছেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার পরিণতি কী হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ ডোমিঙ্গোর এমন কথায় বিসিবি তার কাছে লিখিত জানতে চাইবে। তবে এটিকে কারণ দর্শানো হিসেবে দেখা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।
সাক্ষাৎকারে ডোমিঙ্গোর কথা নিয়ে জালাল ইউনুস বলেন, ‘অবশ্যই এটা কাম্য নয়। এখনও তার সঙ্গে আমাদের চুক্তি রয়েছে এবং সরাসরি কিছু অভিযোগ আছে। এই অভিযোগগুলো আমি খন্ডন করছি না। আমরা নিজেদের মাঝে আলাপ আলোচনা করবো। আমি সভাপতিকে জানিয়েছি, উনিও দেখেছেন নিউজটা। সিইও সাহেবও জানেন। আমাদের নিজেদের মাঝে আলাপ আলোচনা করা দরকার। তারপর আমরা বলতে পারবো কি জানতে চাইবো তার কাছে। এটা আমরা পরে সিদ্ধান্ত নেবো।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বললাম তো জিনিসটা আগে খতিয়ে দেখি এবং এটা নিয়ে আমার কাছে মনে হয় বোর্ড থেকে তার কাছে একটা চিঠি যাওয়া উচিত যে বক্তব্যগুলো আসলে কি বুঝাতে চেয়েছেন। যদি আমাদের পরিস্কার করে তাহলে আমরা বুঝতে পারবো কোথায় সমস্যা হচ্ছে।’
ডোমিঙ্গোর কাছে লিখিত জানতে চাওয়াটাকে জালাল ইউনুস শোকজ বা কারণ দর্শানো হিসেবে দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘এটা আসলে শোকজ নয়, আমরা আসলে জানতে চাইবো। এজন্যই বললাম, এই মুহূর্তে আমি কমেন্ট করতে চাচ্ছি না। আমরা নিজেদের মাঝে আলাপ করে দেখি। আলাপ করার পরে পরবর্তী অ্যাকশনটা কি হবে সেটা আপনাদের জানাতে পারবো।’
দলে বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করা নিয়ে ডোমিঙ্গোর অভিযোগ প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমি আসলে সবার সঙ্গে আলাপ করে মন্তব্য করতে চাই। এই সময় আমি মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। তবে কিছু কিছু জিনিস আছে যেটা বললেন আপনি, খেলোয়াড়দের ব্যাপারে। সেটা খেলোয়াড়দের জিজ্ঞেস করলেই হবে কারা হ্যাম্পারিং করে না করে। তাহলেই তো পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা সত্য নয়। যদি কোনো মেসেজ দেওয়ার থাকে মেসেজ দেয়। এটা আমরা চাই, এভাবে আমরা চাই। এটা একেবারে খোলামেলা।'
সাক্ষাৎকারে ডোমিঙ্গো বলেছিলেন, ‘যখন ওরা ভুল করে, তখন বাজেভাবে সমালোচনা করলে ক্রিকেটারদের সেরাটা পাওয়া যাবে না। আমি এটাই করতে চাইনি। ক্রিকেটাররা ভুল করবে, তাদের সেটা থেকে শিখতে হবে। সে জন্য নিজের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। কিন্তু তারা সেটা করতে পারে না। কারণ, তাদের সারাক্ষণ পরামর্শের ওপর রাখা হয়, ধমক দেওয়া হয়। এটা যে একদিক থেকে আসে, তা নয়। চারদিক থেকেই আসে। যে কারণে নিজেদের ক্রিকেটীয় জ্ঞান বাড়ে না। নিজেরা চিন্তা করতে পারে না। ছেলেরা এতে এতই অভ্যস্ত হয়ে গেছে যে সব সময় এখন পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকে।’ তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ আমাকে সব সময় বলা হতো, ওদের সারাক্ষণ ধমকাতে হবে। কঠোর হতে হবে। এভাবেই নাকি ক্রিকেটারদের সঙ্গে সব সময় আচরণ করা উচিত।
আরেক জায়গায় ডোমিঙ্গো বলেছিলেন, ‘বোর্ড তাদের কথা শোনায়, ডিরেক্টর অব ক্রিকেট কথা শোনায়, সবাই শোনায়। যদি ক্রিকেটারদের প্রতি পদে পদে বলে দেওয়া হয় কীভাবে কী করতে হবে, তাহলে ওরা শিখবে কীভাবে? ক্রিকেটাররা নিজেরা ভাবতে পারে না। কারণ, সব সময় তাদের বলে দেওয়া হয় কী করতে হবে। এটাই বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।'
এমপি/এএস