মেয়াদ উত্তীর্ণ ক্রিকেটাররাই কী ফিরছেন এশিয়া কাপে?
বাংলাদেশের ক্রিকেটের উপর দিয়ে বেশ ভালোই একটা ‘সুনামী’ বয়ে যাচ্ছে। এর আঘাতে বেশ লন্ডভন্ড দেশের ক্রিকেট। আবার বেশ উত্তপ্তও! ঝড় যেন থামছেই না। একদিকে ইনজুরির কারণে জিম্বাবুয়ের মতো দলের কাছেও ছিন্ন ভিন্ন। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর গর্বের ওয়ানডে ক্রিকেটেও পতন। কিন্তু এই আঘাত সহ্য করতে না করতেই বেটউইনারের সঙ্গে সাকিবের চুক্তি নিয়ে উত্তাল দেশ। এ নিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে তোলপাড়। বিসিবি সোচ্চার আর ইস্পাত কঠিন। অবশেষে সাকিবের চুক্তি বাতিল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়। সামনে এশিয়া কাপের টি-টোয়েন্টি আসর। কিন্তু দল সাজাতে হিমসিম খাচ্ছেন নির্বাচকরা। জিম্বাবুয়ে সফরে ইনজুরিতে পড়েন লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান। এর আগে থেকে ইনজুরিতে ইয়াসির আলী রাব্বি। এরা সবাই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলের ‘জুহুরি’। কিন্তু তাদের কাউকেই এশিয়া কাপের দলে পাওয়া যাবে না। তাদের শূন্য স্থান পূরণ করার মতো বিকল্প ক্রিকেটারও হাতে নেই নির্বাচকদের। অগত্যা নির্বাচকদের ফিরে যেতে হচ্ছে সৌম্য সরকার-সাব্বির রহমানের মতো ক্রিকেটারদের কাছে? যারা বাজে খেলার কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনও নিজেদের সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। বলা যায় নির্বাচকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই এসব মেয়াদ উত্তীর্ণ ক্রিকেটারদের নিয়ে ভাবছেন। যদি শেষ পর্যন্ত এই দুই ক্রিকেটার দলে সুযোগ পান তাহলে প্রমাণ হবে জাতীয় দলের পাইপ লাইনের দৈন্যদশা। এদের কাছে ভালো কিছু আশা করা যাবে না। শুধু নেয়ার জন্য নেওয়া, শূন্য স্থান পূর্ণ করা। আর যদি ভালো খেলেই ফেলেন তাহলে তা হবে ‘যদি লাইগ্যা যায়’।
সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান যখন জাতীয় দলে খেলেছেন তাদের ব্যাটের ঝিলিকে ছিল আলোর বিচ্ছুরণ। দেখে মনে হবে ২২ গজের উইকেটে তারা নৃত্য করছেন। দুজনেই তিন ফরম্যাটে খেলেছেন। তবে সাব্বিরের তুলনায় সৌম্যর ঝিলিক ছিল বেশি। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তান, ভারত আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার এক একটি ইনিংস ছিল ঝকঝকে। কিন্তু সেই সৌম্য পরে নিজেকে হারিয়ে ফেলেন। রানের দেখা পেতে নির্বাচকরা তাকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তিন ফরম্যাটেই খেলিয়েছেন। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। ওয়ানডে থেকে বাদ পড়ার আগে তার চারটি ইনিংস ছিল ৭, ০, ৩২, ১। টি-টোয়েন্টির অবস্থা আরও বাজে। শেষ ১০ ইনিংসে দুই অংকের ঘরে যেতে পেরেছিলেন মাত্র দুইবার। সর্বোচ্চ রান ছিল মাত্র ১৭। টেস্টে শেষ তিন ম্যাচের ছয় ইনিংসে করেছিলেন ২০, ২৮, ১৭, ১৫,০ ও ১৩। এই তিন ফরম্যাটের মাঝে সর্বশেষ দুবাইয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এরপর বিপিএল এবং ডিপিএলেও তিনি রান খরা কাটাতে পারেননি। তার রান খরা এমনই বেড়ে গিয়েছিল যে ডিপিএলে মোহামেডানের হয়ে সেরা একাদশে জায়গাও হারিয়েছিলেন। সেই সৌম্য সরকারকে নিয়ে ভাবছেন নির্বাচকরা! সৌম্য এখন পর্যন্ত ১৬ টেস্ট, ৬১ ওয়ানডে ও ৬৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।
সাব্বিরের আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু হয় সৌম্য সরকারের আগেই ওয়ানডে ক্রিকেট দিয়ে। এখন পর্যন্ত ১১ টেস্ট, ৬৬ ওয়ানডে ও ৪৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৯ সালের ১৯ জুলাই কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। টেস্ট দল থেকে বাদ পড়ার আগে শেষ ছয় ইনিংসে তার রান ছিল ৩০, ৪,০,৪,০,১। ওয়ানডেতে শেষ ইনিংসে করেছিলেন ০, ০, ৩৬, ৬০, ১১, ৭। টি-টোয়েন্টি থেকে বাদ পড়ার আগে খেলেছিলেন ৭৭, ০, ১৩, ১৫, ২৪, ১। অবশ্য ডিপিএলে তিনি শুরুতে ভালো করতে না পারলেও শেষের দিক বেশ ভালো করেছিলেন। শেষ পাঁচ ইনিংসে তিনি করেছিলেন ১২৫, ২৬, ৩৮, ৯০, ৩৬।
শুধু সৌম্য-সাবিবর নয় এ রকম আরও কিছু ক্রিকেটারকেও দেখা যেতে পারে দলে?
এমপি/এসআইএইচ