২৯০ রান নিয়ে লড়তে হবে বাংলাদেশকে

দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সিরিজ বাঁচাতে হলে শক্ত, ভীত মজবুত করার মতো পুঁজি প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু সে পথে তারা যেতে পারেনি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সংগ্রহ করেছে ৯ উইকেটে ২৯০ রান। প্রথম ম্যাচে একইভাবে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ২ উইকেটে ৩০৩ রান করেও ম্যাচ জিততে পারেনি। এবার এই রান নিয়েই লড়াই করতে হবে। সিরিজে সমতা আনতে হবে।
আগের ম্যচে যখন ৩০৩ রান করেও হার ঠেকানো যায়নি তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে তাহলে এ রকম উইকেটে কত রান নিরাপদ? অন্তত আগের চেয়ে বেশি রান তো করতেই হবে। কিন্তু বাংলাদেশ দল তা করতে পারেনি। করেছে তার থেকে ১৩ রান কম। আবার সব সময় যে তিনশোর্ধ্ব রান নিরাপদ নয়, তা কিন্তু না। এর থেকে কম রানও জয়ের জন্য নিরাপদ হয়ে উঠে। বাংলাদেশের ২৯০ রানও নিরাপদ হয়ে উঠতে পারে, যদি বোলাররা নিজেদের সেরাটা দিয়ে তা ঠেকাতে পারেন।
প্রথম ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে রান আসে বিনা উইকেটে ৬২। দ্বিতীয় পাওয়ার প্লেতে রান আসে ৪ উইকেটে ১৪৪। শেষ ১০ ওভারে সেখানে যোগ হয় ৫ উইকেট হারিয়ে ৮৪। বাংলাদেশের ২৯০ রানের ইনিংস গড়ে তোলার মুখ্য কারিগর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবাল। দুজনই হাঁকিয়েছেন ফিফটি। তামিম পাক্কা ৫০ রান করে আউট হয়ে যান। এটি ছিল তার ক্যারিয়ারের ৫৫তম ফিফটি। মাহমুদউল্লাহর অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংস ছিল তার ক্যারিয়ারের ২৬তম। এ ছাড়া ছোট ছোট অবদান রেখে যান অফিফ হোসেন ৪১, নাজমুল হোসেন শান্ত ৩৮, মুশফিকুর রহিম ২৫, এনামুল হক বিজয় ২০, মিরাজ ১৫ রান করে।
জিম্বাবুয়ের কাছে আগের ম্যাচে ৩০৩ রান করেও কোনো রকম লড়াই ছাড়াই হারাটা তামিম ইকবালকে একটু বেশিই কষ্ট দিয়েছিল। তাইতো তার ব্যাটে আজ ছিল আগ্রাসী মনোভাব। দলীয় ৫০ রানে তার অবদান ছিল ৪২। তিনি যখন ফিফটি করেন তখন দলের রান ৬২। আর আউট হন দলীয় ৭১ রানে, তখন তার রান ছিল ৫০। তার আগুনে পুড়ে ছারখার হওয়ার আগেই তিনি আউট হয়ে যান চিভাঙ্গার বলে পুল করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে কাইটানোর হাতে ধরা পড়ে। ৪৩ বলে ফিফটি করার পর তিনি টিকে ছিলেন মাত্র দুই বল। তার আউটের কিছুক্ষণ পর এনামুল হক বিজয় ফিরে যান অসাবধানতা বশত রান আউটের শিকার হয়ে। চিভাঙ্গার বলে নাজমুল হোসেন শান্তর স্ট্রেট ড্রাইভ বিপরীতে প্রান্তেরর স্ট্যাম্প বরাবর ছুটে যাওয়ার সময় বোলার নিজেই হাতের স্পর্শ দিয়ে দেন। এনামুল (২৫ বলে ২০ রান) তখন ক্রিজ ছেড়ে বাইরে।
বাংলাদেশ আজ ৯ উইকেট হারালেও উইকেটের পড়ক লাগেনি। তাইতো নাজমুল ও মুশফিক জুটি বেঁধে দলকে ৫০ রান এনে দেন। কিন্তু ২১ রানের ব্যবধানে দুজনই বিদায় নিলে বাংলাদেশ কিছুটা চাপে পড়ে যায়। দুজনকেই ফিরিয়ে দেন মাধেভেরে। কিন্তু এই চাপ বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠে মাহমুদউল্লাহ ও আফিফের পঞ্চম উইকেট জুটিতে। তারা ৮১ রান যোগ করেন ১৩.৪ ওভারে। সিকান্দার রাজাকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শেষ হয় তার ৪টি চারে সাজানো ৪১ বলে ৪১ রানের ইনিংস। এরপর সিকান্দার রাজা মিরাজ ও তাসকিন ফিরিয়ে দিয়ে বাংরাদেশের বিপক্ষে নিজের মেলে ধরাটা অব্যাহত রাখেন।
একপ্রান্তে যখন এভাবে উইকেট পড়ছিল, অন্যপ্রান্তে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ দলের রানকে পেটমোটা করার চেষ্টায় রত। শুরুতে একটু ধীর গতি সম্পন্ন ছিলেন। ৩৬ বলে রান ছিল ১৪। কিন্তু পরে রান ও বলের ব্যবধান ক্রমেই কমাতে থাকেন। ফিরে আসার সময় সেই ব্যবধান নেমে এসেছিল ৪ বলে। হাফ সেঞ্চুরি করেন ৬৯ বলে। তার ইনিংসে ছিল তিনটি করে চার ও ছক্কা। মাহমুদউল্লাহ মারমুখী হয়ে উঠার কারণেই বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে সংগ্রহ করে ৮৪ রান। শেষ ৫ ওভারে আসে ৪৪ রান। জিম্বাবুয়ের হয়ে সিকান্দার রাজা একমাত্র ১০ ওভারের কোটা পূরণ করে ৫৬ রানে নেন তিন উইকেট। ওয়েসলি মাধেভেরে ৪০ রানে নেন দুই উইকেট।
এমপি/এসজি/
