বেটিং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি, সাকিবকে বুঝানোর চেষ্টা করছে বিসিবি!
বিশ্বব্যাপী জুয়া খেলার প্রতিষ্ঠান বেট উইনার। তাদেরই অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বেট উইনার নিউজ। সাকিব সেই প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়া নিয়ে বেশ বিব্রত বিসিবি। চারিদিকে চলছে সমালোচনা ঝড়। তীর্যক কথা। সাকিবের চুক্তি বাতিল করার রব উঠেছে সর্বত্র। এ নিয়ে খুবই সতর্ক বিসিবি।
একদিকে আইনগত বিষয়, অন্যদিকে নৈতিকতা। আইনের দৃষ্টিতে বেটউইনার নিইজ নিয়ে কোনো ঝামেলা নেই। কিন্তু তাদের মাদার প্রতিষ্ঠান বেটউইনার বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ একটি প্রতিষ্ঠান। কারণ জুয়া খেলা বাংলাদেশের আইনে নেই। কিন্তু নৈতিকতার বিষয়টি সামনে আনলে সাকিবের মতো ক্রিকেটার, যিনি কি না অসংখ্য কিশোর আর তরুণের আদর্শ, অনেক পিতা-মাতাই চান তাদের ছেলেরা যেন সাকিবের মতো হয়ে উঠেন। তাদের জন্য এটি একটি বিরাট হোচট।
বিদ্যমান ঘটনায় বিসিবি এগুচ্ছে সতর্কতার সঙ্গে। সাকিব বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। তার সঙ্গে চলছে ই-মেইলে চিঠি চালাচালি। যোগাযোগ আছে সার্বক্ষণিক। কিন্তু অগ্রগতি কতটুকু এ বিষয়ে বিসিবির মুখে কুলুপ। বিষয়টিকে সাকিব ও বিসিবির বলে অগ্রগতির কোনো কিছু জানাতে নারাজ বিসিবি। সময় হলে সবকিছু জানানো হবে।
এ ব্যাপারে বিসিবির পরিচালক ও ক্রিকেট অপরেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। কী কথা হচ্ছে, তা আমরা আপনাদের (মিডিয়া) জানাতে পারব না। তবে এতটুকু বলতে পারি বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই কনসার্ন। সময় হলে আমরাই আপনাদের জানাব।’
কথা হয় বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনের সঙ্গে। ঢাকাপ্রকাশ-কে তিনি বলেন, ‘সাকিবকে আমরা ই-মেইল করেছি কি না বা কীভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে তা আমরা বলব না। বিষয়টি সাকিব ও বিসিবির। তার সঙ্গে যোগযোগ হচ্ছে। আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি এবং খুবই গুরুত্ব দিয়ে। আশা করি দ্রুতই আমরা আপনাদের জানাতে পারব।’
এদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, সাকিবকে বিসিবির পক্ষ থেকে ই-মেইল করে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। এ ছাড়া তার সঙ্গে ফোনেই যোগাযোগ হচ্ছে বেশি। কথা বলেছেন প্রধান নির্বাহী, ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান। সাকিব তাদের বারবার বুঝানোর চেষ্টা করেছেন তার চুক্তি হয়েছে নিউজ পোর্টালের সঙ্গে, বেটিং উইনারের সঙ্গে নয়। চুক্তি করার আগে তিনি এ বিষয়টি বেশ ভালোভাবেই খোঁজ নিয়ে জেনেছেন। এখানে আইনত কোনো সমস্যা নেই। বিসিবির পক্ষ থেকে এ বিষয়টি সম্মতি দিলেও তারা মূল প্রতিষ্ঠানকে বারবার সামনে নিয়ে এসে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাকিবকে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সাকিব ঘুরে-ফিরে তার কথাতেই থাকছেন। কিন্তু বিসিবি চুক্তি বাতিলের পক্ষে। প্রয়োজনে তারা কঠোর হতে বাধ্য হবে।
ঘটনার এ রকম অবস্থায় বিসিবি নিজস্ব আইনজীবী দিয়ে আইনগত বিষয়টি দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিসিবির এক পরিচালক বলেন, ‘এখানে বিষয়টি নৈতিকতার। সে দৃষ্টিকোন থেকে সাকিবের মতো ক্রিকেটারের এখান থেকে সরে আসা উচিত। কারণ মানুষের জীবনে টাকা পয়সাই সব নয়। এই চুক্তি বাতিল করলে সাকিব তো আর পথে বসে যাবে না। হয়তো সে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’
এমপি/এসএন