কুইনিন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে?
জিম্বাবুয়ের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের ক্ষত সারানোর দাওয়াই ছিল ওয়ানডে ক্রিকেট। কিন্তু সেই দাওয়াইয়ে কাজ হয়নি। উল্টো নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ যেন সৈয়দ মুজতবা আলীর 'কুইনিন জ্বর সারাবে বটে, কিন্তু কুইনিন সারাবে কে?' এতদিন ওয়ানডে ক্রিকেটের সাফল্য দিয়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্যর্থতা ঢাকা হয়েছে। এখন ওয়ানডে ক্রিকেটের ব্যর্থতা ঢাকা হবে কী দিয়ে? এখন তাদের সারাবে কে? প্রয়োজন উচ্চতর চিকিৎসার। সেই চিকিৎসার পরবর্তী শিডিউল ৭ আগস্ট (রবিবার) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ।
অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানান তারা শক্তভাবে ফিরে আসবেন। তিনি বলেন, ‘যে ভুলগুলো করেছি আমরাও জানি। আপনারাও দেখেছেন। পুরো দেশও দেখেছে। এগুলো আমাদের অবশ্যই সংশোধন করতে হবে এবং আমরা খুবই ভালোভাবে কামব্যাক করব।’ এই কামব্যাকই হতে পারে ‘কুইনিন’, যদি সারে, তবেই পার। নতুবা পড়তে হবে খাদের কিনারায়। হাত ছাড়া হবে সিরিজ। তাল মেলাবে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির সঙ্গে ওয়ানডেও!
একটা সময় ওয়ানডে ক্রিকেটে আগে ব্যাট করা দল আড়াইশ রানের বেশি করলে অনেকটা ম্যাচ জেতা নিশ্চিত হয়ে যেত। এখন তিনশো রানও নিরাপদ নয়। তবে তিনশোর্ধ্ব রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড কিন্তু আবার অহরহ নেই। তাই তিনশোর্ধ্ব রান করতে পারলে অনেকটা নির্ভরতা পাওয়া যায়। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশও তিনশোর্ধ্ব রান করার পর অনেক নির্ভার ছিল। তারপর আবার দুই ওভারে ছয় রানে নেই দুই উইকেট। ৬২ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন হওয়ার পর বাংলাদেশের জয় ছিল সময়ের ব্যাপার। সেখান থেকে বলা যায় বাংলাদেশের মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছেন জিম্বাবুয়ের দুই ব্যাটসম্যান ইনোসেন্ট কাইয়া ও সিকান্দার রাজা। এভাবে ম্যাচ হারের পর তামিম ইকবাল মনে করেন ১৫-২০ রান কম হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আরও ১৫-২০ রান বেশি করা উচিত ছিল। আমরা এক উইকেটে ২৫০ রানের মতো অবস্থায় ছিলাম। এ অবস্থায় থাকলে একটু দ্রুত রান তোলা দরকার ছিল, যেন আমরা ওই অতিরিক্ত ১৫-২০ রান করতে পারি।’ কিন্তু জিম্বাবুয়ে যেখানে ১০ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতেছে পাঁচ উইকেটে, আগ্রাসী সিকান্দার রাজা ছিলেন ১৩৫ রানে অপরাজিত। ১০৯ বলে ছয়টি ছক্কা আর আটটি চার মেরেছিলেন, সেখানে ১৫-২০ রান আরও করতে পারলেও কি বাংলাদেশ জিততে পারত?
এই ১৫-২০ রান কম হওয়াটাকে কারণ হিসেবে দেখা ছাড়াও তামিম ইকবাল ক্যাচ মিসের মহড়াকেও মোটা দাগে সামনে এনেছেন। দুই সেঞ্চুরিয়ানই একাধিকবার জীবন পেয়েছেন। অনেক মিস ফিল্ডিংও হয়েছে। এ নিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমি সব সময়ই বলি, হারের পর অনেক কিছুর দিকেই আঙুল তোলা যায়। কিন্তু এই কথাগুলো আমি জিতে এসেও অধিনায়ক হিসেবে বলতাম। জেতার পরও আমি সব সময় বলি, এটা ভুলে গেলে হবে না যে আমরা কী কী জায়গায় ভুল করেছি। আজকের দিনটা ভালো একটা উদাহরণ-এতদিন যে আমরা ক্যাচ ফেলে, বাজে ফিল্ডিং করেও জিতেছি, একদিন না একদিন এর মূল্য দিতেই হতো আপনাকে। আজকেই (শুক্রবার) ছিল সেই দিনটা।’
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন ক্যাচিংয়ের কথা বলি। কোনো না কোনো দিন তো এটা আমাদের হারের কারণ হতো। কারণ টি-টোয়েন্টিতে আমরা অনেকবার ক্যাচ ফেলেছি। কিন্তু ম্যাচ জিতে গিয়েছি। কিন্তু যখন এমন ভালো উইকেটে আপনি ৪টা ক্যাচ ফেলবেন, তাহলে আপনি বেশি ম্যাচ জিতবেন না। এখন মনে হচ্ছে এটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে পরের ম্যাচের আগে।’
মিস ফিল্ডিং নিয়ে তামিম বলেন, ‘অনেক সহজ রান দিয়েছি। এই মাঠে দুই রান হবে। কারণ এক পাশটা বিশাল। এটা নিয়ে আমি ভাবছি না। কিন্তু সহজগুলো, যেগুলো সহজেই ডট বল হতে পারত, সেগুলো থামাতে পারলে আমরা আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারতাম। এগুলো অবশ্যই কষ্ট দেয়।’
এমপি/এসজি/