বাংলাদেশ শিবিরে ইনজুরির মিছিল
উইলিয়াম শেক্সপিয়ার লিখেছেন, ‘অভাব যখন দরজায় এসে দাঁড়ায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়।’ তার এই কথাটু ঘুরিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য লেখা যায়, সময় যখন বাজে যায়, সাফল্য তখন দূরে চলে যায়।’
এমনিতেই টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছিল না বাংলাদেশের সবেধন নীলমনি হয়ে ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের ক্রমাগত সাফল্য। কিন্তু সেখানেও ছেদ পড়েছে। জিম্বাবুয়ের মতো খর্ব শক্তির দলের কাছে হারতে হয়েছে। তাও ৩০৩ রান করে। তিন মাচের সিরিজ হওয়াতে এখনো সুযোগ আছে ফিরে আসার। কিন্তু সেই ফিরে আসার পথেও আরেক দফা কাঁটা বিঁধেছে। এ মুহুর্তে তিন ফরম্যাটেই বাাংলাদেশের একমাত্র সেরা ব্যাটসম্যান লিটন দাসের ইনজুরিতে পড়ে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়াটা। সিরিজের পরের দুই ম্যাচে তার শূন্যতা দূর করার মতো কোনো ক্রিকেটার দলে নেই। এই অভাব কিভাবে টিম ম্যানেজমেন্ট পূরণ করবে তা হয়তো ভেবে তারা নিজেরাই কুল কিনারা পাবে না। লিটনের আগে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইনজুরিতে পড়ে জিম্বাবুয়ে সিরিজ থেকেই ছিটকে গেছেন নুরুল হাসান সোহান। এই দুই জনেরই এশিয়া কাপও খেলা হবে না?
লিটন দাসের ইনজুরি নিয়ে দলের ফিজিও মোজাদ্দেদ আলফা সানি বলেন, ‘আজকে আমাদের ওপেনার লিটন কুমার দাস ব্যাটিং করতে গিয়ে হ্যামিস্ট্রিংয়ে আঘাত প্রাপ্ত হন এবং ম্যাচ মধ্যবর্তী সময়ে আমরা তাকে স্ক্যান করতে পাঠাই। স্ক্যানে তার রিপোর্ট এস গ্রেড-২ মাসল স্ট্রেন। এ ধরনের চোটের জন্য মোটামুটি ৩-৪ সপ্তাহ লেগে যায়। তাই এ সিরিজে আমরা তাকে পাচ্ছি না।’ এদিকে লিটন দাসের ইনজুরি নিয়ে তামিম ইকবাল বলেন, আমি নিশ্চিত লিটন এই সিরিজ থেকে আউট। আমি জানি না তার এই ইনজুরি কতোটা দীর্ঘায়িত হবে। তবে পরের দুই ম্যাচে আমরা তাকে পাচ্ছি না।’
ফিজিওর ভাষ্য মতে লিটন দাসের তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় যদি সুস্থ হয়ে উঠতে সময় লাগে তা’হলে তার এশিয়া কাপ খেলাও হবে না। কারণ এশিয়া কাপ শুরু হবে এ মাসের ২৭ তারিখ। দল ঘোষণার শেষ তারিখ ৮ আগষ্ট।
লিটন দাস ইনিংসের ৩৪তম এবং সিকান্দার রাজার পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়েই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মাসল পুল হওয়াতে। এ সময় তার রান ছিল ৮৯ বলে ৮১ রান। পরে আর তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি। স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন। সেই ছাড়াই তার হয়ে পড়ে এবারের সিরিজে শেষ গন্তব্য।
দলের বাজে সময়ে ছিটকে গেছেন দুই সেরা ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহান ও লিটন দাস। দল ভারি করার তালিকায় আছেন শরিফুল ইসলামও। তিনিও আঘাত প্রাপ্ত। তিনি খেলতে পারবেন কি না, তা জানা যাবে শনিবার। ফিজিও মোজাদ্দেদ বলেন, ‘শরিফুলের ইনজুরি তাৎক্ষনিক আঘাত থাকার কারণে কিছুটা অবশবোধ করছিল। আশা করি ইনশাল্লাহ কালকের (শনিবার) মধ্যে আমরা ভালো কিছু নিউজ দিতে পারবো।’ এদিকে ইনুজরিতে আছেন মুশফিকুর রহিমও। তবে তার আঘাত ততোটা বেশি নয়। তিনি দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে পারবেন বলে জানান ফিজিও। তিনি বলেন, ‘আজকে (শুক্রবার) ব্যাটিংয়ের সময় আমাদের মুশফিক ভাইও বৃদ্ধাংগুলিতে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এইটা খুব বড় ধরনের কোনো কিছু মনে হচ্ছে না এই মুহুর্তে। আশা করি পরবর্তি ম্যাচে তাকে আমরা পাচ্ছি।’
বাংলাদেশের শিবিরে এখন ইনজুরির ভয়াবহ থাবা। এই থাবা সামলে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর মিশনে নামতে হবে তামিম ইকবালের দলকে?
এমপি/এএস