বিজয়ের আকাশে ঈদের চাঁদ
আরবি বছরের প্রতিটি মাসই চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল। এই চাঁদ দেখা বেশি বুঝা যায় শাওয়াল মাসে। যখন রমজান মাসের পর ঈদুল ফিতরের চাঁদ উঠে। কখনো ২৯ রমজানের পর উঠে। আবার কখনো উঠে থাকে ৩০ রমজানের। একদিন আগে পরে। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটে না। কিন্তু এনামুল হক বিজয়ের আকাশে চাঁদ উঠি উঠি করেও যেন উঠছিল না। তার চাঁদ ছিল ওয়ানডে দলে ফেরা নিয়ে। ঘরোয়া ক্রিকেটে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে বিশ্বের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাজার রান করে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে এনামুল তার জাতীয় দলে ফেরাটা মজবুত করেন। পরে তিনি ফেরেনও উইন্ডিজ সফরে। এদিকে সতীর্থদের ইনজুরিতে তিনি ওয়ানডে দলের পরে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলেও ফেরেন। কিন্তু সুযোগ মেলে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি একাদশে খেলার। আর ওয়ানডে খেলাটা আকাশ-কুসুম কল্পনাই থেকে যায়। অধিনায়ক তামিম ইকবাল নতুন হিসেবে বিজয়ের জন্য অপেক্ষার দরজা দেখিয়ে দেন। অবশেষে সেই অপেক্ষার দরজা দিয়ে তিনি ঢুকে পড়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে।
এনামুল হক বিজয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরুই হয়েছিল ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে। সেটি ২০১২ সালের নভেম্বরের ৩০ তারিখ উইন্ডিজের বিপক্ষে খুলনায়। দ্বিতীয় ম্যাচেই পেয়ে যান তিন অংকের ম্যাজিক ফিগারের দেখা। খেলেন ১২০ রানের ইনিংস। এরপর দ্রুতই আরও দুইটি সেঞ্চুরি করেন পাকিস্তান (১০০) ও উইন্ডিজের বিপক্ষে (১০৯)।
ওয়ানডে ক্রিকেটের পর তার টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও পথ চলা শুরু হয়। কিন্তু ওয়ানডের মতো নিজেকে মাতিয়ে তুলতে পারেননি। টেস্টে অভিষেকের পর চার ম্যাচের আট ইনিংসে তিনি সাকুল্যে করেন ৭৩ রান। ফিরে এসে করেন দুই ইনিংসে ২৭ রান।
টি-টোয়েন্টিতে ছিল টেস্টের তুলনায় কিঞ্চিৎ ভালো। আবার ফিরে আসার আগে ১৩ ম্যাচ খেলে একটি হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। চল্লিশের ঘরে ইনিংস ছিল চারটি। ফিরে এসে খেলেন ছয়টি ম্যাচ। রান করেন ৮৫ রান। আর ওয়ানডে থেকে বাদ পড়ার আগে তার ব্যাটে ছিল ভয়াবহ রান খরা। শেষ ১০ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান ছিল ৩৫। শূন্য ছিল দুইটি।
উইন্ডিজ সফরে যখন অপ্রত্যাশিতভাবে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ফেলেন, তখন ওয়ানডে খেলাটা সময়ের ব্যাপার ছিল। তা যেমন এনামুল হক বিজয়ের কাছে, তেমনি সবার কাছে। কিন্তু অধিনায়ক তামিমের পরিকল্পনা তিনি না থাকাতে তার অপেক্ষায় বেড়ে যায। এমনকি প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর শেষ ম্যাচে ধারণা করা হয়েছিল বিজয়কে খেলানোর। কিন্তু সেখানেও ভাগ্য তার পক্ষে কথা বলেনি। বেড়ে যায় অপেক্ষা।
জিম্বাবুয়ে সফরেও তার খেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল। কারণ উইন্ডিজ সফরে মুশফিকুর রহিম দলে ছিলেন না। এবার তিনি দলে ফিরেছেন। সে কারণে তার ফেরার সম্ভাবনা ছিল কম।কিন্তু তার ফেরার রাস্তা করে দেন নাজমুল হোসেন শান্তই। উইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচে তিনি রান করেছিলেন ৩৭, ২৯০ ও ১। এদিকে আবার এনামুলকে ওয়ানডে দলে ফেরানোরও একটা চাপ ছিল। সব মিলিয়ে খুলে যায় এনামুল হক বিজয়ের রাস্তা। তিন বছর ফেরেন আবার প্রিয় ওয়ানডে ফরম্যাটে।
এমপি/এসএন