পাকিস্তানের পর ভারতেরও বিদায়, ফাইনালে জাপান-কোরিয়া
প্রথম সেমি ফাইনালে কোরিয়ার কাছে হেরে পাকিস্তানের বিদায়ে আরেকটি পাক-ভারত ফাইনাল হওয়ার সুযোগ ছিল না। তাই বলে দুই দলকে ছাড়াই ফাইনাল। হ্যাঁ শেষ পর্যন্ত তাই হতে চলেছে। দ্বিতীয় সেমিতে ভারতকে ৫-৩ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠে গেছে জাপান।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকির সেরা হওয়ার লড়াইয়ে বুধবার (২২ ডিসেম্বর) মুখোমুখি হবে জাপান ও কোরিয়া। মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবে সন্ধ্যা ৬ টায়। আর ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণি ম্যাচে।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকির আসর শুরু হওয়ার পর থেকেই যেন ভারত-পাকিস্তানের আসরে পরিণত হয়েছিল। আগের পাঁচ আসরের কোনটিই এই দুই দলের একটি ছাড়া হয়নি। চারবারই দুই দল মুখোমুখি হয়েছে। একবার দুই দলই যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বাকি তিনবারের দুইবার ভারত আর একবার পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন ছিল। ২০১৩ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত আসরে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল জাপান। ৩-১ গোলে জিতে শিরোপা জিতেছিল পাকিস্তান।
সেমিফইনালে উঠে আসা চারটি দলই থাকে শক্তিশালী। এখানে কোনো দলকেই খাটো দেখার সুযোগ থাকে না। তারপরও কিন্তু ভারত-জাপান ম্যাচে সেই ব্যবধান ছিল। আর এই ব্যবধান তৈরি হয়েছিল দুই দলের লিগ পর্বের খেলাতে। যেখানে ভারত জিতেছিল ৬-০ গোলে। সেই বিবেচনায় সেমি ফাইনালে ভারতের হারকে অঘটনই বলা যায়। কারণ ভারত জিতেছিল ৪৮ ঘন্টা আগে। এর মাঝে ভারত মুদ্রার উল্টো পিঠেরও দেখা পেলো।
সেমি ফাইনালের জাপানকে আর লিগ পর্বের জাপানকে মেলানোই যাবে না। ছিল দিন-রাত তফাৎ। ভারতকে তারাই পাত্তাই দেয়নি। ৫-৩ গোলের ম্যাচে জাপান ৫-১ গোলে এগিয়ে ছিল।
প্রথম কোয়ার্টার (০-২)
গতি ও বল নিয়ন্ত্রণে পারদর্শীতা দেখিয়ে খেলার শুরুতেই জাপান গোল আদায় করে নেয়। শুরুতেই পায় পেনাল্টি কর্নার। তা প্রতিহত করতে গিয়ে ভারত প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি স্ট্রোক দিতে বাধ্য হয়। ভারতের গোলরক্ষক সুরাজ কেরকেরাকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান শোতা ইয়ামাদা। জাপান ব্যবধান দ্বিগুণ করে রাজকি ফুজুশিমার ফ্লিকে। প্রথম কোয়ার্টারে জাপানকে একবারের জন্যও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারেনি লিগ পর্বে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা ভারত।
দ্বিতীয় কোয়ার্টার (১-৩)
দ্বিতীয় কোর্য়াটারেও জাপানও ছেড়ে কথা বলেনি। এই কোয়ার্টারে ভারতের সান্ত্বনা ছিল ১-১ গোলে সমতা রাখা। জাপান এগিয়ে থাকে ৩-১ ব্যবধানে। ১৭ মিনিটে ধারার বিপরীতে দিলপ্রিত সিংয়ের ফিল্ড গোলে ব্যবধান কমায় ভারত। গোলের পর ভারত ম্যাচে ফিরে আসে। ১৯ মিনিটে জাপান গোলরক্ষক কিরিশিতা তাকুমি দারুণ দক্ষতায় ভারতের পেনাল্টি কর্নার রুখে দেন। ২৪ মিনিটে জাপানের আক্রমণে ভারত গোলরক্ষক সুরাজ কেরকেরা পরাস্ত হলেও গোল হয়নি। গোলমুখ থেকে বল প্রতিহত করে ভারতকে ম্যাচে রাখেন বদলি গোলরক্ষক ক্রিশান পাথাক। ২৯ মিনিটে জাপান গোল করে পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে। কেনতা তানাকাকে সার্কেলে ট্যাকল করেন ভারত গোলরক্ষক সুরাজ কেরকেরা। আম্পায়ার পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন। রিভিউর সিদ্ধান্ত জাপানের পক্ষে যায়। পেনাল্টি স্ট্রোক থেকে স্কোর লাইন ৩-১ করেন ইউশিকি কিরিশিতা।
তৃতীয় কোয়ার্টার (১-৫)
তৃতীয় কোয়ার্টার জাপান নিজেদের করে নেয় দুই গোল করে। ৫-১ গোলে এগিয়ে গিয়ে ভারতকে কোনঠাসা করে রাখে। এই কোয়ার্টারে জাপানের আধিপত্য ছিল একচেটিয়া। ভারত ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেও সফল হতে পারেনি। ৩৫ মিনিটে কোশেই কাওয়াবেই ফিল্ড গোল করে জাপানকে ৪-১ গোলে এগিয়ে নেন। ৪১ মিনিটে রায়োমা ওকার ফিল্ড গোল জাপান লিড পায় ৫-১ গোলে।
চতুর্থ কোয়ার্টার (৩-৫)
চতুর্থ কোর্য়াটার ছিল ভারতের। এই সময় তারা দুইটি গোল পরিশোধ করে ব্যবধান ৩-৫ এ নিয়ে আসে। কিন্তু প্রথম কোয়র্টারে যে ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল সেই ব্যবধান আর কমিয়ে আনতে পারেনি। ৫৩ মিনিটে পেনাল্টি কর্নার থেকে হারমানপ্রিত সিংয়ের গোলে ব্যবধান কমায় ভারত ১-৪। ৫৮ মিনিটে ভারতের দুটি পেনাল্টি কর্নার পেয়ে গোল করতে পারেনি। ৫৯ মিনিটে আরেকটি পেনাল্টি কর্ণার পায় ভারত। এবার হারদিক সিং গোল করে ব্যবধান আরো কমিয়ে আনেন (৩-৫)।
এমপি/এএস