নিউ জিল্যান্ড থেকে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটাররা
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আছেন টানা খেলার মাঝে। করোনার কারণে আসর বা সিরিজ খেলতে গিয়ে ক্রিকেটারদের থাকতে হয়েছে জৈব সুরক্ষায়। যেখানে বাইরের জগত থেকে তারা এক প্রকার বিচ্ছিন্নই থাকেন। এমন কি পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকেও। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করেই ক্রিকেটাররা চলে গিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে। সেখান থেকে আসার পরপরই তারা খেলতে নামেন পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ করে দিবাগত রাতেই তারা রওয়ানা হয়ে যান নিউ জিল্যান্ডে। সেখানে গিয়েও আছেন তারা অনেকটা গৃহবন্দির মতোই। দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সমঝোতার কারণে কোয়ারেন্টিনের সময় ১৪ দিন থেকে কমিয়ে ৭ দিনে নিয়ে আসা হয়। এর মাঝে ছিল কিছু ছাড়। হোটেল জিম করার সুযোগ ছিল। কিন্তু দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গণা হেরাথ অমিক্রনে আক্রান্ত হলে সব কিছু আবার গোলমেলে হয়ে যায়। সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে গোটা দলকে এখন ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে থাকতে হচ্ছে।
এ রকম পরিস্থিতি দলের খেলোয়াড়রা দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। নিউ জিল্যান্ডে বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে আজ বিসিবির পরিচালকদের নিয়ে জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘অনেক খেলোয়াড় চিন্তা করছিল চলে আসা যায় কি না, সিরিজ বাদ দেওয়া যায় কি না। আসলে এটার কোনো সুযোগ নেই। যদি ২১ তারিখের পর আবার কোয়ারেন্টিন আবার বাড়ানো হলে তখন ওদের সাথে আলোচনায় যেতে পারব।’
অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় নিউ জিল্যান্ডের কোয়ারেন্টিন বেশি কঠোর উল্লেখ করে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘রঙ্গনা হেরাথ করোনা পজিটিভ। এ কারণে সবার কোয়ারেন্টিনের সময় বাড়ানো হয়েছে। প্রথমবারের মত অমিক্রন শনাক্ত হওয়ায় নিউ জিল্যান্ড কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, অন্যান্য জায়গার কোয়ারেন্টিনের চেয়ে নিউ জিল্যান্ডের কোয়ারেন্টিন বেশি কঠোর। নিউজিল্যান্ডে সবার জন্যই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের নিয়ম। আমাদের অনুরোধে সেটা কমিয়ে ৭ দিন করেছিল। ২১ তারিখ আবার টেস্ট করবে। নেগেটিভ হলে আশা করি কোয়ারেন্টিন থেকে বের হয়ে অনুশীলন করতে পারবে।’
নিউ জিল্যান্ডের কন্ডিশন এমনিতেই বাংলাদেশের জন্য সব সময় কঠিন। সেখানে গিয়ে এখন পর্যন্ত জিততে পারেনি কোনো ম্যাচ। মাঠের ভেতরের মতো এখন মাঠের বাইরের পরিবেশও কঠিন হয়ে উঠছে। এর আগে ২০১৯ সালে টেস্ট সিরিজ খেলতে গিয়ে ক্রাইস্টচার্চ সিরিজের আগে এক শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়ে সন্ত্রাসী আক্রমণের মুখে পড়েছিল গোটা দল। অল্পের জন্য দলের সবাই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন। তারপর সেই টেস্ট না খেলেই দল দেশে ফিরে এসেছিল। এবার পড়েছে করোনার ফাঁদে। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্যই আগেভাগে পাঠিয়েছিলাম। একে তো নিউ জিল্যান্ড, এর মধ্যে এত শর্ত। এই কন্ডিশনে ওদের খেলাটা কঠিন। ছেলেরা মানসিক ও শারীরিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। আমাদের কাজ হবে ওদের উদ্বুদ্ধ করা। তাও তো দুটি প্র্যাকটিস ম্যাচ ছিল। একটা তো হবেই। আমরা চেষ্টা করছি আরেকটা রাখা যায় কি না। দলের প্রত্যেকের জন্য খুব খারাপ লাগছে। খুবন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘২১ তারিখের পর যদি আবার ২/৪ দিন বাড়ায়? এজন্য ওরা কিছু বলতে পারছে না। তাই ২১ তারিখের আগে কেউই কিছু বলতে পারছি না। ওরা যদি সিরিজ ৩/৪ দিন পিছিয়ে দেয়, তাহলে তো আমাদের না করার কোনো পথ নেই। আমাদের পর্যাপ্ত অনুশীলন সুবিধা না দিলে খেলা কঠিন। এটা আমরা ওদের জানিয়ে দিয়েছি।'
এমপি/এমএমএ/