ডা. সাবরিনা এখন এলএলবি পড়ছেন, বানান ব্লগ ভিডিও
ছবি: সংগৃহীত
‘একটা সময় আমি ভাবতাম মানুষের জীবন সবচেয়ে জরুরি। তাই আমি মেডিকেলে পড়েছিলাম। কিন্তু একটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমার মনে হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে জীবনের চাইতেও মানুষের মানস্মানটা অনেক বেশি জরুরি। এজন্য এখন আমি ল' পড়ছি। আমি এখন এলএলবি ফার্স্ট ইয়ার।’ একটি ভিডিওতে এমন মন্তব্যই করেছেন বহুল আলোচিত ডা. সাবরিনা।
করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় দণ্ডিত হন ডা. সাবরিনা। করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা শারমিন হোসেন বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
নিম্ন আদালতের দেওয়া কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সাবরিনাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তিন বছরেরও বেশি সময় কারাগারে থাকার পর এ বছরের ১৬ জুন জামিনে মুক্তি পান তিনি। মুক্তির পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।
#Thinktwice #extramaitalaffairs #Lifewith#Sabrinamishti
Posted by Sabrina Mishti on Saturday, December 2, 2023
ফেসবুক রিলসের মাধ্যমে দিতে শুরু করেন বিভিন্ন সচেতনতামূলক বার্তা। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি রিলস ও ব্লগ ভিডিও পোষ্ট করেন। কখনও ঘুম, কখনও প্রেম, কখনও স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে রিলস ও ব্লগ ভিডিও করতে দেখা যায়।
#Eveningin #BotanicalGarden #ProgramofLawyers
Posted by Sabrina Mishti on Saturday, December 23, 2023
সম্প্রতি কটি ফেসবুক রিলসে সাবরিনা জানান, তিনি এখন আইন পেশায় যুক্ত হতে চাইছেন। আর এজন্য তিনি আইন কলেজে ভর্তিও হয়েছেন।
রিলস ভিডিওতে সাবরিনা বলেন, “একটা সময় আমি ভাবতাম মানুষের জীবন সবচেয়ে জরুরি। তাই আমি মেডিকেলে পড়েছিলাম। কিন্তু একটা ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমার মনে হয়, কোনো কোনো ক্ষেত্রে জীবনের চাইতেও মানুষের মানস্মানটা অনেক বেশি জরুরি। এজন্য এখন আমি ল' পড়ছি। আমি এখন এলএলবি ফার্স্ট ইয়ার।”
এসময় তিনি তার সঙ্গে থাকা তিনজনকে নিজের সহপাঠী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে জানান তারা ল' কলেজের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছেন।
এরপর তিনি বলেন, “এলএলবি পাশ করে বার কাউন্সিলে পরীক্ষা দিয়ে আমার অ্যাডভোকেট হওয়ার ইচ্ছা। এমন মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর ইচ্ছা, যারা আইন সম্পর্কে নিতান্তই কম বোঝে এবং বিনা অপরাধে দিনের পর দিন জেল খাটছে।”
এর আগে, ২০২০ সালের ২৩ জুন করোনাভাইরাসের ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে সাবরিনার স্বামী ডা. আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ।
#Hypertensivepatients #Keepyourselvesaware #healthtipsby #DrSabrina
Posted by Sabrina Mishti on Tuesday, December 5, 2023
অভিযোগ ওঠে, জেকেজির কর্ণধার স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনাভাইরাসের টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করেছেন।
এরপর ১২ জুলাই সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে আনা হয়। এরপর তাকেও প্রতরণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায় জেকেজির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন সাবরিনা।
এরপর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক লিয়াকত আলী। একই বছরের ২০ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন আদালত।
করোনাভাইরাসের ভুয়া রিপোর্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধার আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ছিলেন। মামলার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
২০২১ সালে সাবরিনা শারমিন এবং প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল চৌধুরীসহ আটজনকে তিনটি পৃথক অভিযোগে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন।
সাবরিনা, আরিফুল ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে আপিল করেন আসামিরা। সেখানে জামিন না পেয়ে পরবর্তীকালে হাইকোর্টে আবেদন জানান ডা. সাবরিনা।
আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৫ জুন বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ তার জামিনের আদেশ দেন।