পরীক্ষার ফলাফল জীবনের সামান্য অংশ
আমি যে বছর এসএসসি পাস করেছিলাম, আমার খুব কাছের দুই বন্ধু, সে বছর ফেল করেছিল। এসএসসিতে অকৃতকার্য হওয়ার খবর শুনেও তারা দুজন আমার সঙ্গে সেই সন্ধ্যায়ই ঘুরে বেড়িয়েছে। এলাকার প্রতিবেশীদের বাড়িতে যখন মিষ্টি দিয়েছিলাম, তখনো তারা আমার সঙ্গে ছিল। রেজাল্টের জন্য যে মন খারাপ হতে পারে, এটা যেন তাদের সম্পূর্ণ অজানা ছিল।
সেই সময় কেউ যদি তাদের জিজ্ঞেস করত, তোমাদের রেজাল্টের কী অবস্থা? প্রাণবন্তভাবেই বলত, অল্পের জন্য খারাপ হয়ে গেছে, সামনের বার ভালো করে দেব।
পরে তারা দুজনেই কিন্তু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একজন ব্যাংকে কর্মরত। অন্যজন সফটওয়্যার এর ব্যবসা দাঁড় করিয়ে খুব ভালো একজন উদ্যোক্তা। দুজনেই কর্মজীবনে সফল।
এই কথাগুলো বলার কারণ হচ্ছে, এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। বোর্ড পরীক্ষার এই ফলাফলের কারণে কেউ হঠাৎ করে আত্মহত্যা করে বসেছে, কেউ ভীষণ কান্নাকাটি করছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব পরীক্ষার ফলাফল জীবনে খুব বেশি প্রভাব রাখে না, সেটা হয়ত তারা বুঝতে পারেনি বা পারছে না। সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর বিশাল সুযোগ আছে, সেটাকে কাজে না লাগিয়ে আত্মহত্যা বা কান্নাকাটি কেন?
এসএসসি পরীক্ষায় সেকেন্ড ডিভিশন পাবার পরেও এইচএসসি পরীক্ষায় বোর্ডস্ট্যান্ড করেছে, এরকম রেকর্ড আমাদের দেশে আছে। আর এক বছর ফেল করে, পরের বছর পাস করা তো খুবই সাধারণ ব্যাপার।
লেখাপড়া করলে পরীক্ষা দিতেই হয়। এর মানে এই না যে, শুধু পরীক্ষার ফলাফল আমাদের জন্য নিশ্চিত আর আরামদায়ক কোনো ভবিষ্যৎ ঠিক করে দেবে। জীবনের উত্থান-পতন থাকবেই। সেটা পরীক্ষার ফলাফল কিংবা চলার পথ, যেটাই হোক। খারাপ সময় সবসময় থাকে না। কেটে যায়।
এবার যাদের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল মনের মতো হয়নি, সামনের বছর ভালো করুন। মনে রাখুন সবসময়, পরীক্ষার ফলাফল জীবনের সামান্য অংশ, পুরো জীবন নয়।
লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসএন