সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ছাত্রদের চোখে একজন স্কুলশিক্ষক

আমরা যে জায়গায় অবস্থান করি না কেন, স্কুলশিক্ষকদের অবদান ভুলে যাবার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু তাদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ হয়ে ওঠে আনপ্যারালাল অতিমানবীয় একজন। যিনি শুধু শিক্ষাই দেন না, শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো আপন করে নেন, অভিভাবকদের কাছে হয়ে ওঠেন অতি আস্থার কেন্দ্র। ঠিক এরকমই একজন শিক্ষক হ্যানে রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মো. মজিবর রহমান শেখ।

তিনি স্কুল থেকে অবসর নিয়েছেন ২০১২ সালে। অথচ আজও সেখানে তার অভাব পূরণ করা সম্ভব হয়নি। শুধু সেই স্কুল কেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মতে, মজিবর স্যারের মত শিক্ষক তো এমনিতেই চোখে পড়ে না।

ছাত্রদের চোখে মজিবর স্যার কেমন? এর উত্তর সত্যিই অবিশ্বাস্য। ৩০/৩৫ বছর আগে এসএসসি পাশ করা ছাত্ররা এখনো স্যারের কাছে অতি কৃতজ্ঞ। এখন তারা তাদের সন্তানদের জন্য মজিবর স্যারের মত শিক্ষক খুঁজে ফেরেন। মজিবর স্যারই যেন শিক্ষকতার মানদণ্ড।

শ্রদ্ধেয় মজিবর স্যারকে নিয়ে আর্টিকেল লেখার পর, তার সাবেক ছাত্ররা পিতৃসম স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা প্রকাশ করে যে মতামত দিয়েছেন, সেগুলো সত্যিই অবিস্মরণীয়। সবার সবটুকু মতামত দিতে গেলে, লেখাটা ৩ ফর্মার বই হয়ে যাবে। তাই দুই শতাধিক মতামত থেকে শুধুমাত্র কয়েকজনের মতামতের চুম্বক অংশ দেওয়া হলো এবং তাদের সকলেই ২৫/৩০ বছর আগে এসএসসি পাশ করে স্কুল ছেড়েছিলেন-

মাহমুদ হোসেন রাজিব: আজ মনে পড়ে স্যারের সেই অটল সাহসী পদক্ষেপে চলন যেন মুক্ত এবং অপার সম্ভবনাময় নতুন প্রজন্মের বিকশিত হওয়ার প্রতিকৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা উজ্জীবিত করে গোটা জাতির মাথা তুলে দাঁড়াবার শক্তি। তার চওড়া বুকের ছাতি গর্বিত হবার অফুরান্ত শক্তি অবিচল আত্মার আন্তরিকতায় ভরপুর আর শিশুর মত হাসি মমের মত মন পাইনি আজও আর একটি। তিনি নির্ভীক, তিনি ইউনিক। মাঝে মাঝে বলি, সময়, স্থান কাল পাত্রে পুরুষ যদি হও, এমনই ব্যাঘ্র তবহে। টাকা সম্পদের মোহ থেকে থেকে দুরে থাকার শিক্ষা পেয়েছি স্যারের কাছ থেকে। সকল অবস্থায় বেঁচে থাকার স্পৃহা পাই স্যারের বিভিন্ন উপদেশ থেকে। কৈশোরের উদ্দিপনায় যৌবনের উন্মাদনয় বিপদগামী হতে মুক্ত হতে পারার কৌশল পেয়েছিলাম স্যারের কাছ হতে।

খুরশিদ আলম: বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ে আমি আজও আমার এই মহান স্যারকে স্মরণ করি। আমাকে স্যার শুধু ছাত্র নয়, সন্তানের মতোই ভালোবাসতেন। মজিবর স্যার একালে একজনই হয়। স্যারের ভালোবাসা, শাসন, অনুপ্রেরণা সবসময় মিস করি। ছাত্রদের প্রতি গভীর ভালোবাসা, যত্নের সহিত পড়ানো ও বুঝানোর পদ্ধতি স্যারকে অন্য স্যারদের থেকে আলাদা করেছে। আমি গর্বিত স্যারের মতো একজন শিক্ষক পেয়েছিলাম। তিনি ছিলেন এমন একজন শিক্ষক যার কলমের তুলি দিয়ে অনেক হারিয়ে যাওয়া ছাত্রকে নতুন জীবন দিয়েছেন। এই মহান স্যারের সম্বন্ধে আমি যত লিখি তা সত্যিই কম হয়ে যাবে।

আনোয়ার সাদাত: স্যারের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। উনি শুধু আমার স্যারই ছিলেন না, বন্ধুও ছিলেন বটে। আমি ভাগ্যবান মজিবর স্যারকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম।

আতিক জামান: স্যারের কাছে আমার কখনো কোনো টাইম ছিল না। কখনো সকালে কখনো সন্ধায়। স্যার ভীষণ ভালবাসত আমাকে। স্যারের আদরমাখা শাসন আর ভালবাসা ভীষন মিস করি।

শাহজালাল: আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় স্যার। ইচ্ছে করে স্যারের পায়ে চুমু খেতে। আমি গর্বিত স্যারের মতো একজন শিক্ষক পেয়েছিলাম। আমি গণিতে কাঁচা ছিলাম। নবম শ্রেণির আগে যখন স্যারের কাছে পড়া শুরু করলাম, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে অবাক হলাম আমি। একজন শিক্ষক কীভাবে দক্ষ করে তুলতে পারেন তার ছাত্রকে। আমি যখন নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলাম তখন গণিতে ১০০ পেয়েছিলাম।

মাসুদ রানা: স্যার আমাকে তার সন্তানের মত দেখতেন। স্যার শুধু পড়াতেন না, পড়ানোর সময় যতবার আজান হতো ততবার সঙ্গে করে মসজিদে নিয়ে যেতেন নামাজের জন্য। অঙ্কের পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাটাও স্যারের কাছ থেকে পেয়েছি। আল্লাহ স্যারকে নেক হায়াত দান করুন।

নূর-এ-আলম বাদল: স্যারের অসংখ্য ছাত্রের মাঝে আমি তার নিকট বিশেষ স্নেহভাজন ছিলাম,যেটা কখনো ভুলতে পারব না।

শফিকুল ইসলাম: আমি খুব ভাগ্যবান এমন একজন স্যারের ছাত্র ছিলাম। আমরা ছয় ভাই বোনের মধ্যে পাঁচ জন স্যারের সান্নিধ্য পেয়েছি।

মিজানুর রহমান: দক্ষ মানুষ গরার কারিগর ছিলেন আমাদের মজিবর স্যার।মহান আল্লাহর দরবারে স্যারের জন্য অনেক অনেক দোয়া শুভকামনা ও ভালোবাসা রইল।

জিকরুল হক: স্যারের অবদানের কথা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না । যতই বলি কম বলা হবে। তাই লিখে শান্তি পাচ্ছি না, মনও ভরছে না । শুধু প্রাণ খুলে আল্লাহর কাছে স্যারের সকল প্রকার মঙ্গলের জন্য দোয়া করছি।

শহিদুল ইসলাম: একজন শিক্ষক যখন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর ব্র্যান্ড হয়ে ওঠেন তখন কী আর তাকে কোন সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায়? খুলনা বিভাগে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে কি না আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে জানা নেই যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একজন শিক্ষকের বিজ্ঞাপনে চলেছে। তার জ্ঞানের দীপ্তি এতই ব্যাপক ছিল যে, একজন ‘মজিবর স্যার’ ছাপিয়ে গিয়েছেন একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্যার একজন মহান কামার ছিলেন, তিনি জানতেন একখণ্ড লোহাকে কীভাবে হাতিয়ার করা যায়।উনি ছিলেনএকজন শৈল্পিক স্বর্ণকার, উনি জানতেন কীভাবে সোনাকে ডিজাইন করতে হয়। উনি ছিলেন একজন মহান রেস্টোরার, উনি জানতেন কীভাবে নস্ট হয়ে যাওয়া, রঙ জ্বলে যাওয়া মহামুল্যবান শিল্পকর্মকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনতে হয়।

আশরাফুল রনি: যে ভাষায় স্যারের প্রশংসা করি না কেন তা কমই মনে হবে। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয় এই ভেবে যে, এ রকম একটা মহান স্যারের সান্নিধ্যে অনেক সময় কাটিয়েছি। স্যারের হাতের ঘুশি একটা অন্যরকম ব্যাপার ছিল। এত এত স্মৃতি যা লিখে শেষ করা যাবে না।

আনিসুর রহমান: স্যারের মতো শিক্ষক এখন লাখে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। বিজ্ঞানের একজন পণ্ডিত ব্যক্তি। এত সহজভাবে অঙ্ক বোঝাতে পারতেন সত্যিই অবিশ্বাস্য। স্যারের কারণেই সম্মানের সঙ্গে কিছু করে খেতে পারছি। এখনো স্যারের সেই ট্রেডমার্ক ঘুসি মিস করি। ছাত্রদের জন্য সব সময় নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। সকল অভিভাবক স্যারের উপর ভরসা করত।

গোলাম কিবরিয়া সুমন: মানুষ গড়ার একজন দক্ষ কারিগর আমাদের প্রিয় মজিবর স্যার। তার মতো একজন মহান শিক্ষকের ছাত্র হতে পেরে আমি গর্বিত।

লতিফা হেলেন হীরা: প্রকৃতপক্ষে স্যার তার সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের সন্তানের মতো করে দেখতেন। স্যারের অঙ্ক করানোর ধরনই ছিল অন্যরকম। পাঁচ দিস্তা কাগজ দিয়ে খাতা বানাতাম। কম কাগজের খাতা স্যার একদমই পছন্দ করতেন না। অঙ্ক যদি একটু ভুল হতো সেটা আমাকে পাঁচ বার করতে হতো, আর কোনো দিন যেন আমার অঙ্ক ভুল না হয়। উৎপাদকে বিশ্লেষণ এমনভাবে করাতেন মনে হতো যেন আরও আরও অঙ্ক করি। আশ্চর্য বিষয় এখনো যদি উৎপাদক আমাকে করতে দেওয়া হয় আমার ইনশাআল্লাহ কোথাও ভুল হবে না। এটা নিশ্চয়ই স্যারের কৃতিত্ব। আর পাঁচ দিস্তা কাগজ পাঁচ দিনেই শেষ। স্যারের কাছে আমি অবশ্যই কৃতজ্ঞ। স্যারের প্রচেষ্টার জন্য আমি নিশ্চয়ই ভালো রেজাল্ট করেছিলাম।

কেএম ওলিউর রহমান: সত্যিই স্যার অনেক মহান। আমার আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে স্যার কোেনাদিন বেতন চাইতেন না।

আবু বকর সিদ্দীকি: বর্তমান সমাজে একজন মজিবর স্যারের বড্ড অভাব । মুখ দেখে ছাত্রদের মনে ভাষা পড়ার মত স্যারদের আজকাল আর পাওয়া যায় না। শাসনের সঙ্গে সঙ্গে স্যারদের মায়া মমতাগুলোও যেন ডিজিটালাইজেশনের মধ্যে হারিয়ে গেছে। কিরে মুখ শুকনো কেন, সকালে খেয়ে আসিসনি-এ রকম কথা ডিজিটাল যুগের স্যারেরা বলে কিনা আমি জানি না। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলতেন। বলতেন যেতে হবে অনেক দূর।

শাহজাহান আলী: স্যারের ভালোবাসা, শাসন, অনুপ্রেরণা সবসময় মিস করি। স্যারের সঙ্গে দেখা হলেই ভালোবেসে কাছে টেনে হাতে আলতো করে হাসি মুখে ‘ঘুষি’ মেরে কেমন আছিস বল, কথাটা আজ ও মনে পড়ে।

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি ফেসবুকে ফ্রেশের একটি বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে। যেখানে একটি স্কুলের একজন শিক্ষককে নিয়ে কিছু বলতে বলা হয়েছিল? সেই বিজ্ঞাপনের মতামতেও দেখলাম, শ্রদ্ধেয় মজিবর স্যারকে নিয়ে শিক্ষার্থীরা মন্তব্য করেছে। ভাবা যায়! শিক্ষার্থীরা মজিবর স্যারকে কতটা ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে। এই হচ্ছেন মজিবর স্যার, যিনি সবসময় হৃদয় দিয়ে অনুভব করতেন তার ছাত্রদের, যেন ছাত্রদের জন্যই জীবন।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

Header Ad
Header Ad

ভারত থেকে ৪০টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান আমদানি করছে সেনাবাহিনী

রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভারত থেকে ৪০টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান আমদানি করছে। রোববার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রথম চালানে ৪০টির মধ্যে ১০ টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে বেনাপোল বন্দরের কার্গোভেহিকেল টার্মিনালে প্রবেশ করেছে।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি ৩০ টি মিল্ক ভ্যান ঢুকবে বলে জানা গেছে। রেফ্রিজারেটেড ভিল্ক ভ্যানের আমদানিকারক ডাইরেক্টোরেট জেনারেল পারসেজ বিডি। রফতানি কারক ভারতের অশোক লিলেন্ড লিমিটেড।

১০টি মিল্ক ভ্যানের আমদানি মূল্য দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩ ইউ,এস ডলার। পণ্য চালানটি বন্দর থেকে ছাড়করণের কাজ করছেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এম আর লজিস্টিক।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) রাসেদুল সজীব নাজির জানান, আমদানিকৃত ১০টি মিল্কভ্যান বন্দরের কার্গোভেহিকেল টার্মিনালে নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দাখিল করলে দ্রুত খালাসে সহযোগিতা করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১১টি মাইন প্রটেকটেড ভেহিকেল আমদানি করেছিলেন।

Header Ad
Header Ad

ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল: ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন জানাতে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত পাঁচ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ ৪০০ বিদেশি শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এই শিক্ষার্থীরা গত দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা ও হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্ক রুবিও শুক্রবার এক ঘোষণায় জানান, ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করার সময় সহিংস কার্যকলাপে জড়িয়েছিলেন। প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর সহযোগিতায় তাদের চিহ্নিত করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন শুধু বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েই থেমে থাকেনি; সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিকত্ব গ্রহণ করা অনেকেরও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করার কারণে চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

গত ৭ দিনের মধ্যে ৪০০ বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে, যার মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। তাদের মধ্যে সিলেটের ২ জন, ঢাকা ও বগুড়ার ১ জন করে শিক্ষার্থী রয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

গত বছর ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিলের অংশ হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। এদের মধ্যে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া করছেন, যেখানে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে পড়াশোনা করছেন।

বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী জানান, একজন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল হয়েছে এবং তিনি তার আইনগত সহায়তার জন্য আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। মঈন চৌধুরী আরও বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তাদের কোনও আইন ভঙ্গ বা অপরাধে জড়ানো যাবে না এবং স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ শেষ না হওয়ার বিষয়টি নজর রাখতে হবে।

এছাড়া, গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের প্রখ্যাত হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ জন শিক্ষার্থী ও ২ জন সদ্য গ্র্যাজুয়েটের ভিসা বাতিল করে এবং তাদের গ্রেফতার করে ডিপোর্টেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। একইভাবে, কেন্ট স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন এবং ইউনিভার্সিটি অব অ্যাক্রন এর ২ জন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া, মিনেসোটার স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে, যাদের আগামী ৬০ দিনের মধ্যে ডিপোর্ট হতে বলা হয়েছে।

বিভিন্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ জন শিক্ষার্থীর ভিসাও বাতিল করা হয়েছে, অনেককে গ্রেফতার করে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। ইমিগ্রেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান বিরোধী বলে দাবি করেছে।

Header Ad
Header Ad

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: পাঁচ জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর

বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর। ছবি: সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে সোমবার (৭ এপ্রিল) দেশের পাঁচটি জেলায় বিক্ষোভ মিছিল থেকে অন্তত ১৫টি রেস্তোরাঁ ও শো-রুমে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সিলেট, গাজীপুর এবং বগুড়ার বিভিন্ন এলাকায় আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের শো-রুম ও রেস্টুরেন্টগুলোকে লক্ষ্য করে এই হামলা হয়। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পণ্য রাখার অভিযোগে ফাস্ট ফুড চেইন কেএফসি, পিৎজা হাট, বাটার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা করে।

সিলেট:
সিলেট নগরীতে সোমবার বিকালে একটি বিক্ষোভ মিছিল কেএফসি ও বাটার শো-রুমে হামলা চালায়। মিছিলকারীরা কেএফসির ভেতরে থাকা কোমল পানীয়গুলো ফেলে দেয় এবং লাঠি দিয়ে গ্লাস ভেঙে ফেলে। পাশের বাটা শো-রুমেও হামলা করে তাদের গ্লাস ভাঙচুর করা হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা অভিযোগ করেন, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া হবে না।

সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. জিয়াউল হক জানান, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে এবং দোকানে ভাঙচুর চালিয়েছে।’’

কক্সবাজার:
কক্সবাজারের পর্যটন এলাকায় পাঁচটি রেস্টুরেন্টে হামলা হয়। বিক্ষোভকারীরা কেএফসি, পিৎজা হাট, কাঁচা লংকা এবং মেরিন ফুড রেস্টুরেন্টে হামলা করে। পুলিশ জানায়, মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা সাইনবোর্ড নামানোর জন্য বললে, পরিস্থিতি শান্ত রাখা যেত। তবে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তির কারণে ভাঙচুর ঘটে। এতে কয়েকজন পর্যটক আহত হন।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মো. ইলিয়াস খান বলেন, “পুলিশ মিছিলের আগে-পিছে ছিল। তবে, মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের একাংশ ইসরায়েলি পণ্য রাখার অজুহাতে কিছু রেস্টুরেন্টে ঢিল ছোড়ে। পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণ করে।”

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাবেদ ইকবাল জানান, “আমরা ফিলিস্তিনের প্রতি সবসময় সংহতি জানাই। কিন্তু কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি রেস্টুরেন্টে হামলা করেছে, যা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের জন্য অশনি সংকেত। আমরা প্রশাসনের কাছে বিচার চাই।”

চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রামে কেএফসির দুটি শাখার সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়, পাশাপাশি জিইসি মোড়ে কোকাকোলার সাইনবোর্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মিছিল থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং রেস্তোরাঁগুলোতে সামান্য ক্ষতি হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এসব ক্ষতি রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ থাকায় কোন বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়নি।

পাঁচলাইশ থানার ওসি মো. সোলায়মান বলেন, “ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে করা মিছিল থেকে কেএফসি রেস্টুরেন্টে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে রেস্টুরেন্টটি বন্ধ ছিল।” কোতোয়ালি থানার ওসি আব্দুল করিম বলেন, “চেরাগী পাহাড় মোড়ে কেএফসির সাইনবোর্ডে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। ভেতরে কোনো সমস্যা হয়নি।”

গাজীপুর:
গাজীপুরের বোর্ড বাজার এলাকায় বাটা শো-রুমের বাইরের বিলবোর্ড ও ব্যানার ভাঙচুর করা হয়। তবে, শো-রুমে কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বিক্ষোভকারীরা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের দাবি জানায়, এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) নূর মোহাম্মদ নাসিরুদ্দীন বলেন, "বিক্ষোভকারীরা বাটা শো-রুমের বাইরের ব্যানার ভাঙচুর করেছে, তবে শো-রুমের ভেতরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।”

বগুড়া:
বগুড়ায় বিক্ষোভকারীরা বাটা শো-রুমে হামলা করে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে গ্লাস ভাঙচুর করে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে তারা স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানায়। পুলিশ জানায়, ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় কিছু ক্ষতি হয়েছে, তবে শহরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।

বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম মঈনুদ্দিন বলেন, “মিছিলের সামনে ও পিছনে পুলিশ ছিল। মিছিল থেকে কে বা কারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে তা বোঝা যায়নি। তাতে বাটার দোকানের অল্প কিছু ক্ষতি হয়েছে।”

বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন জায়গায় স্লোগান দেওয়া হয়, “ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ” এবং “ইসরায়েল বয়কট বয়কট”। দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ এবং ইসলামী সংগঠনগুলো এই প্রতিবাদে অংশ নেয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারত থেকে ৪০টি রেফ্রিজারেটেড মিল্ক ভ্যান আমদানি করছে সেনাবাহিনী
ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল: ৫ বাংলাদেশিসহ ৪ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করলো যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: পাঁচ জেলায় বাটা-কেএফসিতে হামলা-ভাঙচুর
ঈদের ছুটি শেষে দর্শনা বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু
নওগাঁয় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ
লাঠিপেটা না করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ, রাষ্ট্রপতি পদক পাচ্ছেন সেই পুলিশ কনস্টেবল
ইন্ডিয়ান আইডলের শিরোপা জিতলেন কলকাতার মানসী ঘোষ
প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা পেলেন বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী
নতুন শুল্ক প্রস্তাব স্থগিত করতে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি
ঢাকায় মার্কিন নাগরিকদের জন্য চলাচলে সতর্কতা জারি
ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার নিন্দা জানালো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অন্নপূর্ণা–১ জয় করলেন বাবর আলী
বৈশাখে যারা ইলিশ কিনে খাবেন তারা আইনের লঙ্ঘন করবেন: উপদেষ্টা ফরিদা
ঢাকা-রংপুর ৪ লেন প্রকল্পে পলাশবাড়ীতে এক জমি দুইবার বিক্রি, গাইবান্ধা ডিসি অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ১৫ কোটি টাকার অধিক লুটপাটের চেষ্টা
ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোয় ভারতে বিদ্যুৎ বিভাগের 'মুসলিম কর্মী' বরখাস্ত
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে বেনাপোল ও শার্শায় বিক্ষোভ মিছিল
গাজার কর্মসূচি নিয়ে হুমকি, চাকরি হারালেন ড্যাফোডিলের সেই শিক্ষিকা
নওগাঁয় নিজ বাড়ি থেকে ভাই-বোনের মরদেহ উদ্ধার
ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার আইসিসিতে পাঠানোর কথা ভাবছে সরকার: প্রেস সচিব