সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ছাত্রদের চোখে একজন স্কুলশিক্ষক

আমরা যে জায়গায় অবস্থান করি না কেন, স্কুলশিক্ষকদের অবদান ভুলে যাবার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু তাদের মধ্য থেকেই কেউ কেউ হয়ে ওঠে আনপ্যারালাল অতিমানবীয় একজন। যিনি শুধু শিক্ষাই দেন না, শিক্ষার্থীদের সন্তানের মতো আপন করে নেন, অভিভাবকদের কাছে হয়ে ওঠেন অতি আস্থার কেন্দ্র। ঠিক এরকমই একজন শিক্ষক হ্যানে রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মো. মজিবর রহমান শেখ।

তিনি স্কুল থেকে অবসর নিয়েছেন ২০১২ সালে। অথচ আজও সেখানে তার অভাব পূরণ করা সম্ভব হয়নি। শুধু সেই স্কুল কেন, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মতে, মজিবর স্যারের মত শিক্ষক তো এমনিতেই চোখে পড়ে না।

ছাত্রদের চোখে মজিবর স্যার কেমন? এর উত্তর সত্যিই অবিশ্বাস্য। ৩০/৩৫ বছর আগে এসএসসি পাশ করা ছাত্ররা এখনো স্যারের কাছে অতি কৃতজ্ঞ। এখন তারা তাদের সন্তানদের জন্য মজিবর স্যারের মত শিক্ষক খুঁজে ফেরেন। মজিবর স্যারই যেন শিক্ষকতার মানদণ্ড।

শ্রদ্ধেয় মজিবর স্যারকে নিয়ে আর্টিকেল লেখার পর, তার সাবেক ছাত্ররা পিতৃসম স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা প্রকাশ করে যে মতামত দিয়েছেন, সেগুলো সত্যিই অবিস্মরণীয়। সবার সবটুকু মতামত দিতে গেলে, লেখাটা ৩ ফর্মার বই হয়ে যাবে। তাই দুই শতাধিক মতামত থেকে শুধুমাত্র কয়েকজনের মতামতের চুম্বক অংশ দেওয়া হলো এবং তাদের সকলেই ২৫/৩০ বছর আগে এসএসসি পাশ করে স্কুল ছেড়েছিলেন-

মাহমুদ হোসেন রাজিব: আজ মনে পড়ে স্যারের সেই অটল সাহসী পদক্ষেপে চলন যেন মুক্ত এবং অপার সম্ভবনাময় নতুন প্রজন্মের বিকশিত হওয়ার প্রতিকৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যা উজ্জীবিত করে গোটা জাতির মাথা তুলে দাঁড়াবার শক্তি। তার চওড়া বুকের ছাতি গর্বিত হবার অফুরান্ত শক্তি অবিচল আত্মার আন্তরিকতায় ভরপুর আর শিশুর মত হাসি মমের মত মন পাইনি আজও আর একটি। তিনি নির্ভীক, তিনি ইউনিক। মাঝে মাঝে বলি, সময়, স্থান কাল পাত্রে পুরুষ যদি হও, এমনই ব্যাঘ্র তবহে। টাকা সম্পদের মোহ থেকে থেকে দুরে থাকার শিক্ষা পেয়েছি স্যারের কাছ থেকে। সকল অবস্থায় বেঁচে থাকার স্পৃহা পাই স্যারের বিভিন্ন উপদেশ থেকে। কৈশোরের উদ্দিপনায় যৌবনের উন্মাদনয় বিপদগামী হতে মুক্ত হতে পারার কৌশল পেয়েছিলাম স্যারের কাছ হতে।

খুরশিদ আলম: বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ে আমি আজও আমার এই মহান স্যারকে স্মরণ করি। আমাকে স্যার শুধু ছাত্র নয়, সন্তানের মতোই ভালোবাসতেন। মজিবর স্যার একালে একজনই হয়। স্যারের ভালোবাসা, শাসন, অনুপ্রেরণা সবসময় মিস করি। ছাত্রদের প্রতি গভীর ভালোবাসা, যত্নের সহিত পড়ানো ও বুঝানোর পদ্ধতি স্যারকে অন্য স্যারদের থেকে আলাদা করেছে। আমি গর্বিত স্যারের মতো একজন শিক্ষক পেয়েছিলাম। তিনি ছিলেন এমন একজন শিক্ষক যার কলমের তুলি দিয়ে অনেক হারিয়ে যাওয়া ছাত্রকে নতুন জীবন দিয়েছেন। এই মহান স্যারের সম্বন্ধে আমি যত লিখি তা সত্যিই কম হয়ে যাবে।

আনোয়ার সাদাত: স্যারের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। উনি শুধু আমার স্যারই ছিলেন না, বন্ধুও ছিলেন বটে। আমি ভাগ্যবান মজিবর স্যারকে শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলাম।

আতিক জামান: স্যারের কাছে আমার কখনো কোনো টাইম ছিল না। কখনো সকালে কখনো সন্ধায়। স্যার ভীষণ ভালবাসত আমাকে। স্যারের আদরমাখা শাসন আর ভালবাসা ভীষন মিস করি।

শাহজালাল: আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় স্যার। ইচ্ছে করে স্যারের পায়ে চুমু খেতে। আমি গর্বিত স্যারের মতো একজন শিক্ষক পেয়েছিলাম। আমি গণিতে কাঁচা ছিলাম। নবম শ্রেণির আগে যখন স্যারের কাছে পড়া শুরু করলাম, দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে অবাক হলাম আমি। একজন শিক্ষক কীভাবে দক্ষ করে তুলতে পারেন তার ছাত্রকে। আমি যখন নবম থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলাম তখন গণিতে ১০০ পেয়েছিলাম।

মাসুদ রানা: স্যার আমাকে তার সন্তানের মত দেখতেন। স্যার শুধু পড়াতেন না, পড়ানোর সময় যতবার আজান হতো ততবার সঙ্গে করে মসজিদে নিয়ে যেতেন নামাজের জন্য। অঙ্কের পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষাটাও স্যারের কাছ থেকে পেয়েছি। আল্লাহ স্যারকে নেক হায়াত দান করুন।

নূর-এ-আলম বাদল: স্যারের অসংখ্য ছাত্রের মাঝে আমি তার নিকট বিশেষ স্নেহভাজন ছিলাম,যেটা কখনো ভুলতে পারব না।

শফিকুল ইসলাম: আমি খুব ভাগ্যবান এমন একজন স্যারের ছাত্র ছিলাম। আমরা ছয় ভাই বোনের মধ্যে পাঁচ জন স্যারের সান্নিধ্য পেয়েছি।

মিজানুর রহমান: দক্ষ মানুষ গরার কারিগর ছিলেন আমাদের মজিবর স্যার।মহান আল্লাহর দরবারে স্যারের জন্য অনেক অনেক দোয়া শুভকামনা ও ভালোবাসা রইল।

জিকরুল হক: স্যারের অবদানের কথা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না । যতই বলি কম বলা হবে। তাই লিখে শান্তি পাচ্ছি না, মনও ভরছে না । শুধু প্রাণ খুলে আল্লাহর কাছে স্যারের সকল প্রকার মঙ্গলের জন্য দোয়া করছি।

শহিদুল ইসলাম: একজন শিক্ষক যখন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর ব্র্যান্ড হয়ে ওঠেন তখন কী আর তাকে কোন সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায়? খুলনা বিভাগে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে কি না আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে জানা নেই যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একজন শিক্ষকের বিজ্ঞাপনে চলেছে। তার জ্ঞানের দীপ্তি এতই ব্যাপক ছিল যে, একজন ‘মজিবর স্যার’ ছাপিয়ে গিয়েছেন একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। স্যার একজন মহান কামার ছিলেন, তিনি জানতেন একখণ্ড লোহাকে কীভাবে হাতিয়ার করা যায়।উনি ছিলেনএকজন শৈল্পিক স্বর্ণকার, উনি জানতেন কীভাবে সোনাকে ডিজাইন করতে হয়। উনি ছিলেন একজন মহান রেস্টোরার, উনি জানতেন কীভাবে নস্ট হয়ে যাওয়া, রঙ জ্বলে যাওয়া মহামুল্যবান শিল্পকর্মকে স্বরূপে ফিরিয়ে আনতে হয়।

আশরাফুল রনি: যে ভাষায় স্যারের প্রশংসা করি না কেন তা কমই মনে হবে। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হয় এই ভেবে যে, এ রকম একটা মহান স্যারের সান্নিধ্যে অনেক সময় কাটিয়েছি। স্যারের হাতের ঘুশি একটা অন্যরকম ব্যাপার ছিল। এত এত স্মৃতি যা লিখে শেষ করা যাবে না।

আনিসুর রহমান: স্যারের মতো শিক্ষক এখন লাখে খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। বিজ্ঞানের একজন পণ্ডিত ব্যক্তি। এত সহজভাবে অঙ্ক বোঝাতে পারতেন সত্যিই অবিশ্বাস্য। স্যারের কারণেই সম্মানের সঙ্গে কিছু করে খেতে পারছি। এখনো স্যারের সেই ট্রেডমার্ক ঘুসি মিস করি। ছাত্রদের জন্য সব সময় নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। সকল অভিভাবক স্যারের উপর ভরসা করত।

গোলাম কিবরিয়া সুমন: মানুষ গড়ার একজন দক্ষ কারিগর আমাদের প্রিয় মজিবর স্যার। তার মতো একজন মহান শিক্ষকের ছাত্র হতে পেরে আমি গর্বিত।

লতিফা হেলেন হীরা: প্রকৃতপক্ষে স্যার তার সকল ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের সন্তানের মতো করে দেখতেন। স্যারের অঙ্ক করানোর ধরনই ছিল অন্যরকম। পাঁচ দিস্তা কাগজ দিয়ে খাতা বানাতাম। কম কাগজের খাতা স্যার একদমই পছন্দ করতেন না। অঙ্ক যদি একটু ভুল হতো সেটা আমাকে পাঁচ বার করতে হতো, আর কোনো দিন যেন আমার অঙ্ক ভুল না হয়। উৎপাদকে বিশ্লেষণ এমনভাবে করাতেন মনে হতো যেন আরও আরও অঙ্ক করি। আশ্চর্য বিষয় এখনো যদি উৎপাদক আমাকে করতে দেওয়া হয় আমার ইনশাআল্লাহ কোথাও ভুল হবে না। এটা নিশ্চয়ই স্যারের কৃতিত্ব। আর পাঁচ দিস্তা কাগজ পাঁচ দিনেই শেষ। স্যারের কাছে আমি অবশ্যই কৃতজ্ঞ। স্যারের প্রচেষ্টার জন্য আমি নিশ্চয়ই ভালো রেজাল্ট করেছিলাম।

কেএম ওলিউর রহমান: সত্যিই স্যার অনেক মহান। আমার আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকার কারণে স্যার কোেনাদিন বেতন চাইতেন না।

আবু বকর সিদ্দীকি: বর্তমান সমাজে একজন মজিবর স্যারের বড্ড অভাব । মুখ দেখে ছাত্রদের মনে ভাষা পড়ার মত স্যারদের আজকাল আর পাওয়া যায় না। শাসনের সঙ্গে সঙ্গে স্যারদের মায়া মমতাগুলোও যেন ডিজিটালাইজেশনের মধ্যে হারিয়ে গেছে। কিরে মুখ শুকনো কেন, সকালে খেয়ে আসিসনি-এ রকম কথা ডিজিটাল যুগের স্যারেরা বলে কিনা আমি জানি না। পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতার কথা বলতেন। বলতেন যেতে হবে অনেক দূর।

শাহজাহান আলী: স্যারের ভালোবাসা, শাসন, অনুপ্রেরণা সবসময় মিস করি। স্যারের সঙ্গে দেখা হলেই ভালোবেসে কাছে টেনে হাতে আলতো করে হাসি মুখে ‘ঘুষি’ মেরে কেমন আছিস বল, কথাটা আজ ও মনে পড়ে।

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি ফেসবুকে ফ্রেশের একটি বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে। যেখানে একটি স্কুলের একজন শিক্ষককে নিয়ে কিছু বলতে বলা হয়েছিল? সেই বিজ্ঞাপনের মতামতেও দেখলাম, শ্রদ্ধেয় মজিবর স্যারকে নিয়ে শিক্ষার্থীরা মন্তব্য করেছে। ভাবা যায়! শিক্ষার্থীরা মজিবর স্যারকে কতটা ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে। এই হচ্ছেন মজিবর স্যার, যিনি সবসময় হৃদয় দিয়ে অনুভব করতেন তার ছাত্রদের, যেন ছাত্রদের জন্যই জীবন।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

Header Ad
Header Ad

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের অ্যাকশনধর্মী সিনেমায় ভারতীয় সেনারা সবসময়ই বিজয়ী। কখনো পাকিস্তানি ঘাঁটি ধ্বংস, কখনো আফগানিস্তানে অভিযান—সবখানেই তারা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় জয়ী। তবে বাস্তবতা যে এতটা সহজ নয়, তা কাশ্মীরে সাম্প্রতিক হামলায় আবারও স্পষ্ট হলো।

এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৬ জন। অথচ হামলা ঠেকাতে বা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি ভারতীয় সেনারা। হামলার জন্য কোনো পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ছাড়াই পাকিস্তানকে দায়ী করে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার চেষ্টা করছে তারা। ঘটনাটির রেশে সীমান্তে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে, ভারী অস্ত্রসহ মোতায়েন করা হয়েছে সেনা, মাঝেমধ্যেই হচ্ছে গোলাগুলি।

নেটিজেনরা বলিউড সিনেমার বাহাদুর সেনাদের সঙ্গে বাস্তবের ব্যর্থ ভারতীয় সেনাদের তুলনা করে রীতিমতো ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছে। সিনেমার মতো বাস্তবে অজয় দেবগান বা অক্ষয় কুমারের মতো নায়কোচিত সেনা যে নেই, তা এখন স্পষ্ট।

কেবল স্থলবাহিনী নয়, বিমানবাহিনীর ব্যর্থতাও হাস্যরসের জন্ম দিয়েছে। কাশ্মীর হামলার পর পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে ভারতীয় বিমানবাহিনী ভুল করে নিজের দেশের একটি বাড়ির ওপর হামলা চালায়। এই ঘটনার ভিডিও ও প্রতিবেদন সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হামলার পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও ভারতীয় সেনারা যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি। হামলার ২০ মিনিট পর তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন হামলাকারীরা নিরাপদে পালিয়ে যায়।

২০১৯ সালের ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সময় মিগ-২১ নিয়ে পাকিস্তানে ঢুকে পড়া ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানের ঘটনাও আবার আলোচনায় এসেছে। সেবার তার বিমান ভূপাতিত হয় এবং তাকে আটক করে পাকিস্তান পরে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

নেটিজেনরা বলছেন, বলিউডের সিনেমার কল্প-কাহিনীর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। যুদ্ধ লাগলে তা হবে সমান শক্তির লড়াই, সিনেমার মতো একপাক্ষিক নয়। অধিকাংশই আবার যুদ্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছেন, মানবিক বিপর্যয়ের ভয় দেখিয়ে শান্তির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

বলিউডের রঙিন পর্দায় ভারতীয় সেনারা 'অপরাজেয়' হলেও বাস্তবে কাশ্মীর হামলার ব্যর্থতা প্রমাণ করেছে, বাস্তব যুদ্ধ সিনেমার গল্পের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন এবং অপ্রত্যাশিত।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪

ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে বরুড়া ও মুরাদনগরে পৃথক দুইটি ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়।

জানাযায়, কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে সোমবার দুপুরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মৃত দুইজন বড়হরিপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পয়ালগছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান বিপ্লব।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হালকা মেঘের মধ্যে শিশুরা মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিল। হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হয়। স্থানীয়রা দ্রুত তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত কিশোর দুজন হলেন পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন(১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন (১৩)।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগাছা গ্রামে দু স্কুল ছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। হাসপাতাল থেকে নিহত দুজনের লাশ স্বজনরা বাড়িয়ে নিয়ে যান।

অপরদিকে কুমিল্লার মুরাদনগরে জমির ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার সকালে উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর গ্রামের মৃত বীরচরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬৪) ও আন্দিকুট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসীম উদ্দীন ভুইয়ার ছেলে জুয়েল ভুঁইয়া (৩০)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত নিখিল দেবনাথ ও জুয়েল ভূঁইয়া কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে পাশাপাশি জমিতে ধান কাটার সময় বজ্রপাতের শিকার হয়। পরে তাদেরকে আশেপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে দেখে তারা ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বর্তমানে দুজনের মরদেহ নিজ নিজ বাড়িতে আছে।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মুঠোফোনে তারা ঘটনাটি জানতে পারেন। এ ব্যাপারে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা