যা চান, তাই পাবেন তবে...
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় 'পথের পাঁচালী' উপন্যাস লিখে শেষ করার পরে প্রকাশের জন্য বিভিন্ন প্রকাশকের কাছে গিয়েছিলেন। কেউ তার উপন্যাসটি প্রকাশ করতে রাজি ছিলেন না। অনেকে তো মোটামুটি ভাবে অপমানও করেছিলেন। অথচ পথের পাঁচালী প্রকাশ পাবার পরে বিভূতিভূষণ অন্য মাত্রার লেখক। অনেক প্রকাশক তার বাসায় এসে অপেক্ষা করত নতুন বইয়ের জন্য।
সত্যজিৎ রায় ১৯৫২ সালে প্রথম 'পথের পাঁচালী' নিয়ে সিনেমার শুটিং শুরু করলেন। তার পরিকল্পনা ছিল, সিনেমার কিছু শুটিং করে প্রযোজকদের দেখাবেন যেন তারা সিনেমার জন্য টাকা লগ্নি করে। অথচ তিনি কোনো প্রযোজক পাচ্ছিলেন না। এই চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সমস্যা থাকায় নির্মাণ কাজ আটকে যায় এবং দীর্ঘ তিন বছর পরে তা সম্পূর্ণ হয়। কম খরচে সিনেমাটি নির্মাণ করার জন্য অপেশাদার অভিনেতা ও অনভিজ্ঞ শিল্পীদেরও নেওয়া হয়।১৯৫৫ সালে পথের পাঁচালী মুক্তি পায়। এরপরের ইতিহাস সবারই জানা। পরবর্তীতে সিনেমা তৈরি করার জন্য সত্যজিৎ রায়ের কখনোই প্রযোজকের অভাব হয়নি।
জে কে রাউলিং তার 'হ্যারি পটার' নিয়ে অনেক প্রকাশকের কাছেই গিয়েছিলেন। এটা কোন লেখার পর্যায়েই পড়ে না, এমন কথা বারবার জে কে রাউলিং কে শুনতে হয়েছে। রাউলিং নিজের লেখা পাণ্ডুলিপি ছিঁড়ে ফেলতেও চেয়েছিলেন। আর এখন শুধু বই প্রকাশক নয়, হলিউডের প্রযোজনা সংস্থাও অপেক্ষা করে, কখন হ্যারি পটার সিরিজের নতুন একটি লেখা আসবে।
প্রত্যেকের উচিত তার নিজের উপর আত্মবিশ্বাসী হওয়া। ধৈর্য ধারণ করা উচিত, পরিশ্রম করা উচিত। ভাগ্য সহায় হলে মানুষ যেটা চায়, সেটাই পেয়ে থাকে। সেজন্য প্রত্যাশা বড় হওয়া প্রয়োজন। প্রত্যাশা বড় করুন।
লেখক: রিয়াজুল হক, যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।