রংপুরে জামায়াত সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা
ছবি : সংগৃহীত
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (জামায়াত সমর্থিত) মাহবুবার রহমান মাহাবকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় হারুন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। রোববার (৫ নভেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে পায়রাবন্দ বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত হারুন ওই ইউনিয়নের সদরপুর গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী হাকিম আলীর দোকানে মাছ কাটার কাজ করতেন বলে জানা গেছে। তাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান (ওষুধের দোকান) বন্ধ করে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন চেয়ারম্যান মাহবুবার রহমান। দোকানের সামনে দাঁড়াতেই তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় হারুন নামে এক ব্যক্তি। এ সময় হারুন তার হাতে থাকা মাছকাটা বটি দিয়ে চেয়ারম্যানের ঘাড়ে উপর্যপুরি আঘাত করেন। পরে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন চেয়ারম্যান। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক চেয়ারম্যানকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পায়রাবন্দ বাজারে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান, রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (ডি-সার্কেল) আবু হাসান মিয়া ও মিঠাপুকুর থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান।
এ সময় উত্তেজিত জনতা জানায়, চেয়ারম্যান জামায়াতপন্থী হওয়ায় রাজনৈতিক কারণে ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। হামলাকারীকে বাঁচাতে পাগল উপাধি দিচ্ছে চেয়ারম্যানের বিরোধী ক্ষমতাসীনরা। যতক্ষণ হামলাকারী কী জন্য হামলা করেছে জানাবে না, ততক্ষণ হামলাকারীকে পুলিশ নিয়ে যেতে পারবে না।
এ সময় পুলিশের সামনে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। প্রশাসনের সাথে ঘণ্টা দুয়েক পাল্টা-পাল্টি তর্কবিতর্কের পর 'অপরাধীকে কঠিন শাস্তির আশ্বাস' দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরে হামলাকারীকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।
চেয়ারম্যানকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সে থাকা স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী আবু সাঈদ ও রায়হান কবির বলেন, পায়রাবন্দ থেকে রংপুর মেডিক্যালে নেওয়ার পথে মর্ডান মোড়ের কাছাকাছি গেলে চেয়ারম্যান আল্লাহকে স্মরণ করে কলেমা পড়েন। এরপর আমরা বুঝতে পারি তিনি আর নেই। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বজনদের আহাজারিতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদসহ এ বিষয়ে তদন্ত চলমান আছে। নিহতের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।