প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সই জাল করলো নাপিত
পঞ্চগড়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের স্বাক্ষর জাল করে প্রতারনা চক্রের সদস্য মো.মোজাম্মেল হক (৪৮) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে পঞ্চগড় পৌরসভার জালাসি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের পানিমাছ পুকুরি এলাকায়। সে ওই এলাকার মৃত ফয়জুল হকের ছেলে। পানিমাছ পুকুরি এলাকায় সেলুনে নাপিতের কাজ করছিল মোজামেম্মল।
বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায়। এ সময় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল রাকিবুল হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কনক কুমার উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মোজাম্মেল হক প্রধানমন্ত্রীর কার্য্যালয় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্য্যালয়ে বাড়িঘর হাঁস মুরগি ছাগল পোড়ানো বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের জন্য বিচারপ্রার্থী হিসেবে আসামীদের বিরুদ্ধে শাস্তির জন্য আবেদন জানায়। ওই আবেদনগুলোর স্বপক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞা এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের স্বাক্ষর জাল করে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এবং জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পরে দরখাস্তগুলোতে সিল সই দেখে সন্দেহ হলে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী কার্য্যালয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে খোঁজ নেয়। খোঁজ নিয়ে জানতে পারে মোজাম্মেল হকের দরখাস্তের জন্য কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। বরং মুখ্য সচিবের দপ্তর এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নিশ্চিত হয় সিলমোহর এবং সই জাল করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন এরই মধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মোজাম্মেল হক দরখাস্তগুলো তিনি নিজে আবেদন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে পত্র গুলোতে মোজাম্মেল নিজে সই করেন নি তবে তার পরিচিত একজন সই করেছেন। আমি মনে করি এখানে একটি চক্র কাজ করেছেন।
আমাদের ধারণা সরকারের মন্ত্রী এবং উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সুপারিশকে প্রতারনামূলকভাবে জাল স্বাক্ষর ও সিলমোহরের ব্যবহার করে এরকম আরও ঘটনা করতে পারে এজন্য পূরো চক্রটিকে সনাক্ত করার চেস্টা করছি। আশা করছি পূরো চক্রটিকে আমরা সনাক্ত করতে পারবো।
এদিকে মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে গত ০৫ এপ্রিল পঞ্চগড় সদর থানার উপ পরিদর্শক মাসুদ রানা এবং উপ পরিদর্শক মো. রশিদুল আলম চৌধূরী বাদি হয়ে মো. মোজাম্মেল হক ও তার সহযোগী অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করেন। সেই সাথে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশ কৌশলে অভিযান চালিয়ে আজ দুপুরে জালাসি এলাকা থেকে মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
শুক্রবার মোজাম্মেল হককে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের মাধ্যমে রিমান্ড আবেদন করবে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পঞ্চগড় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাজ্জাদুর রহমান সহ জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিল।
এএজেড