বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর পর কেন চান না রাষ্ট্রীয় সম্মান

গত রবিবার (১৯ মার্চ) ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলাম। আবেদন পত্রে তিনি লিখেন যুদ্ধ না করেও অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। সরকারি ভাতা পাচ্ছেন এবং মৃত্যুর পর তাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হচ্ছে। তাই আমার মৃত্যুর পর আমাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দিবেন না।
তিনি তার পত্রে আরও লিখেন, মুক্তিযোদ্ধার বহর দেখে মুক্তিযোদ্ধারা দুঃখিত, ব্যথিত, লজ্জিত ও অপমানিত। মৃত্যুর পর আমি আর অপমানিত হইতে চাই না। আমাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করবেন না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা দবিরুল ইসলামের বাড়ি জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়নের ছোট পলাশবাড়ী গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত সফিজ উদ্দীনের ছেলে। তাঁর মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর-৮৯৭, এফ এফ নম্বর-২০৭৭, লাল মুক্তিবার্তা নম্বর-০৩১০০৩০০৬০।
কেন মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চান না এমন প্রশ্ন জবাবে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেই অনেকে গত কয়েক বছরে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। সরকারি ভাতা পাচ্ছেন এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হচ্ছে। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ করেননি, তাঁদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়া আমাদের (প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা) জন্য অপমানের। তাই এর প্রতিবাদে আমি ডিসি বরাবরে আবেদন করেছি, আমাকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত না করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমি যে রাষ্ট্রের পক্ষে থেকে বোনাসগুলো পাই তা স্থানীয় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিলিয়ে দেয়। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা নীলকান্ত সিংহ বলেন, প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা সবারই এমন। তিনি মনের দুঃখে এমনটা করেছেন। দবিরুল ইসলাম একজন প্রতিবাদী বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর মতো সবাই হলে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা কখনো স্বীকৃতি পেতো না।
তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুবরণ করলে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করি। তা ছাড়া আবেদনটি তিনি হয়তো দপ্তরে এসে দিয়ে গেছেন।
এএজেড
