ফেরিওয়ালা খালেকের কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা

৬৬ বছর বয়সেও গ্রামে গ্রামে ফেরিতে করে চুড়ি, ফিতা, লিপস্টিক, আলতা, স্নো, পাউডারসহ নারীদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন রকম প্রসাধন সামগ্রী বিক্রি করেন আব্দুল খালেক। ফেরি কাঁধে নিয়ে সারাদিন এ গ্রাম ও গ্রাম ঘুরে যা বিক্রি হয় সেই সামান্য আয় দিয়েই কোন রকমে চলে তার সংসার।
খেয়ে না খেয়ে থাকলেও তার কপালে জোটেনি বয়স্ক ভাতা বা কোন সরকারি সুযোগ সুবিধা। জীবন জীবিকার তাগিদে অবিরাম ছুটে চলা বৃদ্ধ আব্দুল খালেকের সঙ্গে দেখা হয় সোমবার দুপুরে উপজেলার ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের ভদের বাজার এলাকায়। কথা বলে জানা যায় তার জীবন সংগ্রামের এক করুণ কাহিনী।
ফেরিওয়ালা আব্দুল খালেকের বাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত মজির উদ্দিনের ছেলে। এক ছেলে এক মেয়ের জনক আব্দুল খালেক ছেলে-মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন অনেক আগে। মেয়ে জামাই বাড়ীতে আর দিনমজুর ছেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে থাকেন আলাদা। সাড়ে তিন শতকের ভিটা বাড়ীতে স্ত্রী ছকিনা বেগমকে নিয়েই আব্দুল খালেকের সংসার।
ফেরিওয়ালা আব্দুল খালেক জানান, তার ফেরিতে ছয় থেকে সাত হাজার টাকার মালামাল আছে। সারাদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা বিক্রি করেন তিনি। ওটা থেকে যা আয় হয় তা দিয়েই চলে তাদের দুজনের সংসার। আগে কয়েক গ্রাম ঘুরতেন, বিক্রি বেশি হতো। এখন বয়স বেড়ে যাওয়ায় বেশিদুর যেতে পারেন না তাই বিক্রিও কমে গেছে।
বয়স্ক বা বৃদ্ধ ভাতা পান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল খালেক বলেন, ফটো আর আইডি কার্ড ধরি (নিয়ে) মেম্বার- চেয়ারমেনের (চেয়ারম্যান) পাছোত (পিছনে) অনেক ঘুরচোং (ঘুরেছি) বাহে, আর না ঘোরোং।
মুই (আমি) বোলে (নাকি) চলং (চলি) ভাল্ (ভালো), সেই জন্যে (সেজন্যে) মোক (আমাকে) না দেয় বাহে। তোমরা দোয়া করেন, মোক আল্লায় (আল্লাহ) চলাইবে (চালাবে) বাহে, আল্লায় চলাইবে।
এ বিষয়ে বড়ভিটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিন্টু জানান, ওই ফেরিওয়ালা চাচা আমার কাছে এসেছে বলে আমার মনে হয়না। তবে তার বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।
এএজেড
