পুলিশ কর্মকর্তা বাবাকে জবাই করে হত্যা চেষ্টায় মেয়ে গ্রেপ্তার

রংপুরের পীরগাছায় বর পছন্দ না হওয়ায় জোড় করে মেয়েকে বিয়ে দেবার সময় এন্টিকার্টার দিয়ে পুলিশ বাবাকে হত্যার চেষ্টা করেছে মেয়ে। এঘটনায় মেয়ে কলেজ ছাত্রী কন্যা ফারজানা আখতার শাম্মি তার পুলিশ কর্মকর্তা বাবা ফজল মাহমুদকে জবাই করে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগে ঘাতক কন্যাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গুরতর আহত পুলিশ কর্মকর্তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঘটনাটি রংপুর জেলার পীরগাছা সদর ইউনিয়নের তালুকইসাদ গ্রামে শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে। এ ঘটনায় আহত বাবা নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ঘাতক মেয়েকে আদালতে সোপর্দ্দ করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। পীরগাছা থানার ওসি তদন্ত মোঃ সেলিম মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
পীরগাছা থানা পুলিশ জানায়, তিনমাস পুর্বে নৌবাহিনীতে কর্মরত রংপুর নগরীর তামফাট এলাকার সোলাইমান আলীর ছেলে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে রংপুর রেঞ্জ রিজার্ভ পুলিশের এস আই ফজল মাহমুদ তার বড় মেয়ে কলেজ ছাত্রী ফারজানা আখতার শাম্মির সঙ্গে তিন মাস আগে বিয়ে রেজিষ্টারী করে রাখেন।
শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কলেমা পড়িয়ে বিয়ে দিয়ে বিদায়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কাজী এসে বিয়ে পড়ানোর সময় কনে ফারজানা আখতারের সম্মতি নেবার জন্য গেলে কনে তার বাবার সঙ্গে কথা বলার পর সম্মতি দেবে বলে জানায়।
এরপর কনে ফারজানা নিজেই তার বাবা পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে একাকী কথা বলার জন্য একটি ঘরে যায়। সেখানে বাবা মেয়ের মাঝে তর্ক বাঁধে এক পর্যায়ে মেয়ে ফারজানা তার হাতে থাকা এন্টিকাটার দিয়ে বাবা পুলিশের এস আই ফজল মাহমুদের গলায় আঘাত করে জবাই করে হত্যা করার চেষ্টা করে।
এ সময় বাবার আত্মচিৎকারে স্বজনরা এগিয়ে এসে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বিয়ে করতে আসা বর পক্ষের গাড়িতে করে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে বাবাকে হত্যার চেষ্টাকারী মেয়ে ফারজানাকে আটক করে কিন্তু থানায় নিয়ে যাবার সময় সে বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় তাকে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে সেখানে পুলিশী পাহারায় চিকিৎসা চলার পর শনিবার দুপুরে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়।
এদিকে বিয়ে না হওয়ায় বর ও তাদের স্বজনরা তাদের বাড়িতে ফিরে আসে। এ ব্যাপারে বর আরিফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে পীরগাছা থানার ওসি তদন্ত মোঃ সেলিম মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান পুলিশ কর্মকর্তা এস আই ফজল মাহমুদ নিজেই বাদী হয়ে মেয়ে ফারজানা সহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে দন্ড বিধি আইনের ৩২৬/৩০৭ ধারায় মামলা দায়ের করেছে।
তিনি জানান মেয়েটি থানায় বলেছে যে ছেলের সঙ্গে তার বাবা বিয়ে ঠিক করেছিলো তাকে তার পছন্দ হয়নি। তার পরেও তার বাবা জোর করে বিয়ে দেবার চেষ্টা করলে সে ক্ষুব্ধ হয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ওসি তদন্ত জানান শনিবার বিকেলে আসামী ফারজানাকে আদালতে সোপর্দ্দ করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান।
এএজেড
