কারিগরি ত্রুটির অজুহাতে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার রেল কোচ

কারিগরি ত্রুটির অজুহাতে চালু না হওয়ায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপের ইয়ার্ডে দুটি এবং পার্বতীপুর রেল ইয়ার্ডে দুইটিসহ মোট ৪টি নন-এসি প্রথম শ্রেণির কোচ। কোচগুলো আমদানি করা হয় ইন্দোনেশিয়া থেকে। প্রতিটি কোচ দুই কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হয়।
করোনা মহামারিতে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে কোচগুলো খুলে রাখা হয়। পরে আবার চলাচল স্বাভাবিক হলেও এগুলো আর রেলবহরে যুক্ত করা হয়নি।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৬ সালে ব্রডগেজ লাইনের ৫০টি কোচ আমদানি করে। এগুলোর মধ্যে ছিল চারটি নন-এসি প্রথম শ্রেণির স্লিপার কোচ। আধুনিক এই কোচগুলো ইন্দোনেশিয়ার রেলওয়ে কারখানা পিটি ইনকায় তৈরি। এসব কোচ চিলাহাটি-ঢাকা পথে চলাচলকারী নীলসাগর এক্সপ্রেসসহ চারটি ট্রেনে যুক্ত করা হয়।
করোনার পর থেকে কোচগুলোর মধ্যে দুটি সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপে ও দুটি পার্বতীপুর রেলইয়ার্ডে পড়ে আছে। এগুলো মেরামত করে আবার রেলবহরে যুক্ত করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, দুটি কোচ পড়ে আছে ওয়াগন শপের ইয়ার্ডে। এগুলোতে মরিচা ধরে গেছে। আশপাশে আগাছা গজিয়েছে। কোচগুলোর ভেতরের অবস্থাও নাজুক।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলের এক কর্মচারী বলেন, এমন দামি কোচগুলোর এভাবে পড়ে থাকা দেখে খারাপ লাগে। এরই মধ্যে এসব কোচ থেকে চাকা খুলে নেওয়া হয়েছে। যেগুলো অন্য কোচ মেরামতের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
রেলওয়ে শ্রমিক লীগ নেতা ও সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, কোচগুলো এভাবে তিন বছর ধরে পড়ে আছে। অথচ এসব রেলবহরে যুক্ত হলে অনেক টাকার রাজস্ব আয় হবে।
লালমনিরহাটের বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই) মো. তাসরুদ জামান বলেন, ওই কোচগুলোতে কিছু কারিগরি ত্রুটি আছে। একটি কোচের সঙ্গে আরেকটি কোচ যুক্ত করতে আমাদের দেশে যে সংযোগের ব্যবস্থা আছে, কোচগুলোতে তার ভিন্নতা রয়েছে। যেমন দুটিতে স্ক্রু কাপলিং এবং দুটিতে রয়েছে সিভিসি ব্যবস্থা। কাজেই সব ট্রেনের সঙ্গে এগুলো যুক্ত করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এ ত্রুটি অপসারণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এ বিষয়ে সৈয়পুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমানের বলেন, নন-এসি কোচগুলো ভালো অবস্থাতেই আছে। সংশ্লিষ্টরা চাহিদাপত্র দিলে সামান্য মেরামত করে কোচগুলো রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে।
এসএন
