ঐতিহ্যবাহী পুকুর ইজারা, অবৈধ স্থাপনা করে দখল!
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার জমিদার বাড়ির ৪০০ বছরের পুরনো একটি পুকুর ঘোষাল সরোবর মাছ চাষের জন্য স্থানীয় বাসিন্দার কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। তবে পুকুরের পাড় মাটি দিয়ে ভরাট করে তিনি অবৈধভাবে শতাধিক দোকান নির্মাণ করেছেন।
পুকুরটি এখন ছোট হয়েছে, চারপাশ বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। এই হারে, ওয়াটারবডির ঐতিহ্যের মূল্য কেবল নামেই থাকবে। অবৈধভাবে গড়ে তোলা বাজারে খাবারের দোকান, চায়ের স্টল, নাপিতের দোকান, ইলেকট্রনিকের দোকানসহ আরও অনেক কিছু রয়েছে। এখান থেকে উৎপাদিত বর্জ্য প্রতিদিন পুকুরে ফেলা হয়, যা ঐতিহাসিক জলাশয়কে দূষিত করে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন দুই বছর আগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলেও অজ্ঞাত কারণে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময়ে, মাত্র তিন বা চারটি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন পুকুরটি রাশেদ খান নামে এক ব্যক্তিকে তিন বছরের জন্য মাছ চাষের জন্য আট লাখ টাকায় ইজারা দিয়েছেন। কিন্তু ইজারাদাররা অবৈধ স্থাপনা থেকে ভাড়া আদায় করে প্রতিমাসে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা আয় করছেন বলে সূত্র জানায়।
ভূমি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, পুকুরের আয়তন ১১৪ দশমিক ১৪ (১.১৪ একর)। তবে তুষভান্ডার ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের পর থেকে এলাকা পরিমাপ করা হয়নি, তাই বর্তমান পরিমাপ জানা যায়নি। ইজারা দিয়ে সরকার প্রত্যাশিত রাজস্ব পাচ্ছে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইজারা বাতিল করা হবে কি না তা কেবল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষই জানেন, তিনি যোগ করেন। পুকুরটি ইজারামুক্ত রেখে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি স্থানীয়দের।
ঘোষাল সরোবরের ইজারাদার রাশেদ খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
কালীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল মান্নান জানান, পূর্ববর্তী কর্মকর্তাদের এ ধরনের পদক্ষেপের বিষয়ে তিনি অবগত নন। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা ব্যবস্থা নেব। পুকুরটি ইজারা থেকে মুক্ত করে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হবে কিনা সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এএজেড