ঠাকুরগাঁওয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পে হরিলুট
ঠাকুরগাঁওয়ে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য কর্মসৃজন প্রকল্পের ৪০ দিনের কাজে শ্রমিক অনুপস্থিতি, তদারকির অভাব ও অনুপস্থিত শ্রমিকদের হাজিরা দেখিয়ে মজুরির টাকা সংশ্লিষ্টরা হরিলুট করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অতি দরিদ্রদের নিয়মিত কর্মসংস্থানের মাধ্যমে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টের আশপাশ, স্কুল, কলেজ, ধর্মীয়সহ সব সরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে মাটি ভরাট কাজ বাস্তবায়নে প্রকল্পটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। তেমনি ঠাকুরগাঁওয়ের প্রতিটি ইউনিয়নে চলছে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের অর্থ হাতিয়ে নিতে নানা অনিয়ম করছেন ইউনিয়ন সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নে মাটি ভরাট কাজ চলমানের সময় দেখা গেছে, রাস্তাঘাট কিংবা কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান চত্বরের মাটি ভরাট নয় বরং অর্থের বিনিময়ে অন্যের বাড়ির উঠানে মাটি ভরাট হচ্ছে। অন্যদিকে ৯নং ওয়ার্ডে ৩৫ জন কাজ করার কথা থাকলেও কাজে যোগ দেন ১৭-২০ জন। কাজ না করে তালিকায় থেকে শ্রমিকদের দৈনিক হাজিরা তুলে নিচ্ছেন তারা। এ ছাড়া নামে বেনামে এ প্রকল্পের আওতায় থাকা আকচা ইউনিয়নের ওয়ার্ডের হাজিরা খাতায় নাম দেখিয়ে সরকারের অর্থ লুটপাট করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তারা জানান, সরকারের কর্মসৃজন প্রকল্পের নামে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। কেউ ঠিকমতো কাজ করে না। সময় শেষ না হওয়ার আগেই চলে যায়। তালিকায় নাম আছে ৩৫ জনের কিন্তু কাজ করছে ১০-১৫ জন। মেম্বার-চেয়ারম্যানরা দেখেও দেখে না। এক ঘণ্টা কাজ করলে দুই ঘণ্টা বসে থাকে। শ্রমিকরা রাস্তার কাজ না করে অন্যের বাড়ির উঠান ভরাট করছে।
অথচ অনেকেই আবার হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে দিন হাজিরা পাচ্ছেন। এভাবে সরকারের টাকা লুটপাটের পাশাপাশি ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে এমন অনিয়ম হয়ে আসলেও মাঠপর্যায়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য কুলু রাম রায় বাড়িতে মাটি ভরাটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, যারা প্রকল্পের কাজ বাদ দিয়ে অন্যের বাড়ির উঠানে মাটি ভরাট করতে গিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, অনিয়মের বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। যারা কাজ করে না তাদের বিল বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর শ্রমিকরা ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা দেখভালের জন্য দুই জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এসজি