রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

তৃণমূলের রাজনীতি: ঠাকুরগাঁও-৩

দলীয় কার্যালয়ে তালা, নেই সন্ধ্যা বাতি দেওয়ার কেউ

ঠাকুরগাঁওয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের রাজনীতিতে নিজ নিজ ঘর গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাজনৈতিক দলগুলো। জেলা আওয়ামী লীগ ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, উপজেলা সম্মেলন প্রায় শেষের দিকে। জেলার তিনটি আসনেই এবার দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।

পাশাপাশি দেড়যুগ ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপিও তাদের শক্তির মহড়া দিতে ওয়ার্ড, উপজেলা ও জেলা সম্মেলন করছে। হামলা-মামলা যতই হোক নেতা-কর্মীরা রাজপথে নতুন উদ্যমে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তৃতীয় শক্তি হিসেবে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও তাদের শক্তির জানান দিতে সাংগঠনিক কাঠামো শক্তিশালী করতে আটঘাট বেঁধে মাঠে নেমেছে।

তৃতীয় পর্ব

ঢাকাপ্রকাশ-এর সঙ্গে আলাপচারিতায় ঠাকুরগাঁও জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাজিউর রেজা স্বপন চৌধুরী বলেছেন, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জাতীয় পার্টি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন শুরু করেছি। দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মানুষের কল্যাণ ও ভাগ্য উন্নয়ন এবং আধুনিক বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করেছেন। এজন্য দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির সঙ্গে রয়েছে। আগের চেয়ে দলের নেতা-কর্মীরা এখন আরও সুসংগঠিত।

স্বপন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে যে হানাহানি এবং তাদের উগ্রতার ভিত্তিতে মানুষ চায় একটি সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ, রাজনীতি, সমাজ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা-চিকিৎসা ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা। যেটি সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের ৯ বছরের শাসনামলে নিশ্চিত করেছিলেন। নয় বছর যে তিনি রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন সেটি একটি স্বর্ণযুগ ছিল, মানুষ আজও সেটা মনে রেখেছেন বিধায় জাতীয় পার্টির সঙ্গে থাকতে চান।

মহাজোটের কারণে জাতীয় পার্টি সাংগঠনিকভাবে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্বীকার করে তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও সদরে মহাজোটের প্রার্থীকে ভোটে নির্বাচিত ও দলীয়ভাবে নির্বাচন না করার কারণে আমরা কিছু কিছু অঞ্চলে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পিছিয়ে রয়েছি। তবে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি যদি মহাজোটভিত্তিক নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে পল্লীবন্ধুর লাঙ্গল মার্কার প্রার্থী হিসেবে আমাকেই ঘোষণা করেছেন।

আর দল যদি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেন তাহলে আমিই ঠাকুরগাঁও-১ আসনে লড়ব। এর আগেও দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল কিন্তু মহাজোটের কারণে সেসময় আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলাম। সেই লক্ষ্যে সাংগঠনিক কাঠামো মাথায় রেখে আমি মাঠে কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলাকে রূপান্তারিত করতে গিয়ে ডিসি অফিস, জজ কোর্ট, উপজেলা ব্যবস্থা, জেলা পরিষদ ব্যবস্থা, আধুনিক হাসপাতাল, এবং রেডিও সেন্টার, টিভি সেন্টার, সার্কিট হাউজ, এলজিইডি, সরকারি কলেজ, পীরগঞ্জ সরকারি কলেজসহ হাজারো লক্ষ্য উন্নয়ন তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে করেছেন। বাংলাদেশের সর্বত্রই তিনি যে উন্নয়ন করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলায় সেভাবেই উন্নয়ন করেছেন পল্লীবন্ধু।

এ দেশে একমাত্র জাতীয় পার্টিই উন্নয়ন করেছে। অন্য কোনো দল এ দেশে মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারেনি। তাই আজও মানুষ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কার কথাই বলেন। নির্বাচনে লাঙ্গল মার্কার কোনো বিকল্প থাকবে না।

জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে যা দেখছেন সবই কিন্তু তার আমলেই হয়েছে। সেই জন্য দেশের মানুষ জাতীয় পার্টির দিকে এখনো তাকিয়ে আছে। লাঙ্গলকে ভোট দিতে চাই। আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মহাজোটভিত্তিক নির্বাচন হোক, এককভাবেই হোক, যেভাবেই হোক জাতীয় পার্টির লাঙ্গল মার্কার ভোট এবার করবেই। তবে আমার দল যদি এককভাবে নির্বাচন করে তাহলে তিন আসনেই আমাদের প্রার্থী রয়েছে। আর যদি আমরা জোট-মহাজোটভিত্তিক হই তাহলে সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক যেখানেই যাকে দিবে আমরা সেভাবেই কাজ করব।

অন্যদিকে ঠাকুরগাঁও জাতীয় পার্টির সভাপতি আজিজুল ইসলাম বলেন, আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে জেলার প্রায় সব আসনেই চমক দেখাবে জাতীয় পার্টি। ঠাকুরগাঁওয়ে আমরা দল গোছানোর কাজ করে যাচ্ছি। ইউনিয়নগুলোতে সমাবেশ করছি। কমিটিগুলো করে যাচ্ছি। আমাদের দল আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। আশা করি আগামী নির্বাচনের আগে আমাদের দল পুরো প্রস্তুত থাকবে।

তিনি বলেন, দলে কোনো কোন্দল নেই। জেলায় সব নেতা-কর্মী নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি তিনটি আসনেই বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটগত নির্বাচন করলেও তারা সঠিক মূল্যায়ন করেনি। তাই দল প্রস্তুতি নিচ্ছে এককভাবে নির্বাচন করার। এই মুহূর্তে ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি আসনেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টি।

ঠাকুরগাঁও জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা চায় না জাতীয় পার্টি কারও ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হোক। সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার পরিকল্পিত ও সুষম উন্নয়নের কারণে অমর হয়ে আছেন। দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন জাতীয় পার্টির আমলেই হয়েছে। ওই আমলই উন্নয়নের স্বর্ণযুগ। জাতীয় পার্টি মানেই উন্নয়ন আর সমৃদ্ধি।

এই নেতা বলেন, দুটি দলের দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের কারণে দেশের মানুষ আবার জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আনতে চাইছে। জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলেই দেশে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। সরকার সমস্যায় পড়লেই জাতীয় পার্টির সহযোগিতা নিয়ে নানা সুযোগ নিয়েছে। ভেতরে ভেতরে পার্টিকে শেষ করার গভীর ষড়যন্ত্র করে চলেছে। ঠাকুরগাঁও জাতীয় পার্টির প্রতিটি ইউনিট অত্যন্ত সুসংগঠিত। আগামী নির্বাচনে সঠিকভাবে ভোট হলে জাতীয় পার্টি জয়ী হবে।

জাতীয় পার্টির তৃণমূলের রাজনীতি নিয়ে সুশীল সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়। তারা (নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক) ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, এরশাদপত্নী রওশন এরশাদকে ঘিরে নতুন করে ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে দলে। জি এম কাদেরের সঙ্গে তার দ্বৈরথ বাড়ছে দিন দিন। এর মধ্য দিয়ে দলের টানাপোড়েন দৃশ্যমান হচ্ছে নানাভাবে। মহাজোটের সঙ্গে জাতীয় পার্টির থাকা না থাকা নিয়েও নতুন আলোচনা শোনা যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়েও নেতারা চুপ। চার বছরে বিরোধীদলের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হলেও গৃহপালিত বিরোধীদল হিসেবে সফল হয়েছেন তারা।

তারা বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি আর আগের মতো নেই। দেবর-ভাবির চেয়ারের দ্বন্দ্বে দলটি থেকে সাধারণ মানুষ মুখ ফিরে নিচ্ছে। বিগত চার বছরে সংসদে বিরোধীদলের আসনে বসে জনগণের চাহিদা ও সমস্যার কথা বলতে ব্যর্থ হয়েছে। শুধু ঠাকুরগাঁও নয়, সারা দেশে জাতীয় পার্টির তৃণমূলের রাজনীতির অবস্থা বেহাল।

তারা আরও বলেন, জেলা চেয়ারম্যান-সেক্রেটারি ছাড়া তেমন কাউকে পাওয়া যায় না। তাদের দলীয় কার্যালয়ের অবস্থা দেখলে মনে হবে দরজায় ঝুলানো তালার চাবিটা মনে হারায় ফেলছে। সামনে ভোট তাই কিছু নেতাকে মাঠে দেখা যাচ্ছে। আমাদের মতে জাতীয় পার্টিকে সব ভেদাভেদ ভুলে রাজনীতির মাঠ গোছানোর দরকার।

আর পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বলছেন, জাতীয় পার্টি সরকারি দল না বিরোধীদল সেটা চার বছরেও দেশের মানুষ পরিষ্কার নন। তারা নিজেদের বিরোধীদল দাবি করলেও গ্যাস বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির দাবিতে কোনো প্রতিবাদ বা মিছিল-মিটিং করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অনেক। যদিও এই দলকে সবাই সরকারের ঘর-জামাই বলে আখ্যায়িত করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে দশম সংসদে জাতীয় পার্টি দেখিয়েছে, কীভাবে 'সরকারি-বিরোধী দল' হতে হয়। দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এরশাদের মৃত্যুর পরে মূল দলের নেতৃত্ব নিয়েই এখন দেবর-ভাবির লড়াই চলছে....।

তৃণমূলের রাজনীতিতে জাতীয় পার্টি অন্যান্য দলের চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। তাদের কার্যক্রম বিগত চার বছরে চোখে পড়েনি। এ দলের নেতা-কর্মীদের মাঠে তেমন দেখা যায় না। দলীয় কার্যালয়ে ঝুলছে তালা। সন্ধ্যা বাতি দেওয়ারও কেউ নেই। একমাত্র স্বপন চৌধুরীকেই মাঠে-ঘাটে দেখা যায়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীরা ঘর গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

এএজেড

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি