আখ চাষে ঝুঁকছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা

ঠাকুরগাঁয়ে আখ চাষে মনোযোগী হচ্ছে কৃষকরা। চিনিকল বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় সেখানকার কৃষকরা আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেও গত কয়েক বছরে সেটি বাড়ছে। এবার দ্বিগুণ আখ চাষ হয়েছে এই জেলায়।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ মাড়াই মৌসুমে চিনিকলে জেলার চাষিদের ৬১ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন আখ মাড়াই হয়। চিনিকল বন্ধ হবে এমন গুঞ্জনে পরের মৌসুমে মাড়াই হয়েছিল ৫৩ হাজার ৮৭৯ টন। ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও সেতাবগঞ্জ মিলের আখ মাড়াই হয় ঠাকুরগাঁও চিনিকলে। এই মৌসুমে মাড়াই হয় এক লাখ ১৩ মেট্রিক টন আখ। ২০২১-২২ মাড়াই মৌসুমে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁওয়ের ৫৭ হাজার ৮৩৪ মেট্রিক টন আখ মাড়াই হয় চিনিকলে। গত বছর জেলার আখ চাষিরা উৎপাদন করেছিল ৩৬ হাজার মেট্রিক টন আখ।
ঠাকুরগাঁও চিনিকল সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমে দেশের ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ৬টি বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই সময় ঠাকুরগাঁও চিনিকলটি বন্ধের শঙ্কায় আখ চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন কৃষকরা। তবে কৃষকদের আখ চাষে ফেরাতে সক্ষম হয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ। গত বছরের চেয়ে এবার দ্বিগুণ আখ চাষ করেছেন চাষিরা।
ঠাকুরগাঁও চিনিকলের মহা-ব্যবস্থাপক (কৃষি) আবু রায়হান বলেন, চিনিকলের নিজস্ব জমি রয়েছে ৭২৭ হেক্টর। এ ছাড়াও বর্তমানে জেলার প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে আখ উৎপাদন করছে তিন হাজার কৃষক। চার হাজার হেক্টর জমিতে আখ চাষ হলেই চিনিকলের সুদিন ফিরবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
চাষীরা জানান, এক বিঘা জমিতে আখ রোপনের সময় খরচ হয় আট হাজার টাকা। এ ছাড়াও চিনিকলে মাড়াইয়ের জন্য পাঠাতে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। যত্ন নিয়ে আখের ফলন ভালো হলে প্রায় লাখ টাকায় বিক্রি হয় আখ।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান কবির বলেন, কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি আখ উৎপাদন করে তারা লাভবান হতে পারবেন ৷ আমরা কৃষকদের সার কীটনাশকের যোগান দিয়ে সহযোগিতা করছি। কৃষকরা আখ চাষে ঝুঁকছেন।
এর আগে ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চিনি শিল্পকে বাঁচাতে ৭ দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নামেন জেলাবাসী। সেই সময় আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহাবুব আলম রুবেল বলেছিলেন, বাজারে চিনির দাম ঊর্ধ্বগতি। আখের উৎপাদন বাড়িয়ে এই চিনিকলগুলো বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে আমাদের পুরোপুরিভাবে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়তে হবে।
এসআইএইচ
