বর্ডার হাট খোলায় স্বস্তি ফিরছে ব্যবসায়ীদের

করোনার বৈশ্বিক মহামারী কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া কুড়িগ্রামের রাজীবপুরের বালিয়ামারী বর্ডার হাট খুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বালিয়ামারী বর্ডার হাটটি খুলে দেওয়ায় স্বস্তি ফিরছে দুই দেশের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে। তবে আগের নিয়মে সপ্তাহে দুই দিন (সোম ও বুধবার) বসবে এ হাট।
বর্ডার হাট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সুরুজ্জামান বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে বর্ডার হাটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বেকার হয়ে পড়েছিলাম। এতে অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করতে হয়েছে আমাদের। হাটটি পুনরায় খুলে দেওয়ায় দুই দেশের ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে এবং আমরা অনেক আনন্দিত।
বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিত চক্রবর্তী বলেন, করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ দিন ধরে বালিয়ামারী বর্ডার হাটটি বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) হাটটি পূনরায় চালুর বিষয়ে দুই দেশের ডিসি পর্যায়ে আলোচনা সভা এবং দুই দেশের প্রতিনিধি দল বর্ডার হাটটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন। এরই প্রেক্ষিতে সার্বিক প্রস্তুতি শেষে বুধবার (৩০ নভেম্বর) বর্ডার হাটটি খুলে দেওয়া হয়েছে। এ হাটটিতে দুই দেশের ৩৭ ধরণের পণ্য কেনা-বেচা করতে পারবেন। এতে দুই দেশের ক্রেতা-বিক্রেতারা অনেক উপকৃত হবেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশের ২৫ জন বিক্রেতা ও ৫৮৭জন ক্রেতা এবং ভারতের ৫০জন বিক্রেতা ও ২৫১জন ক্রেতা রয়েছেন। এদের সবাইকে হাটে আসা-যাওয়ার জন্য অনুমতিপত্র দেওয়া আছে।
এর আগে গত বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১২টার দিকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বালিয়ামারী বর্ডার হাটে দুই দেশের জেলা প্রশাসক পর্যায়ের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরে বর্ডার হাট এলাকা পরিদর্শন করেন ভারতের ২০ সদস্য বিশিষ্ট ও বাংলাদেশের ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। ওইসময় ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মেঘালয় রাজ্যের দক্ষিণ-পশ্চিম গারো পাহাড় আমপাতি জেলা প্রশাসক শ্রী জি খারমাওফ্লাং (আইএএস) ও বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী এবং ভারতের মেঘালয়ে রাজ্যের আমপাতি জেলার মহেন্দ্রগঞ্জ থানার কালাইয়েরচর সীমান্তের ১০৭২ মেইন পিলারের ১৯ নম্বর সাব-পিলারের পাশে উভয় দেশের ৭৫ মিটার করে ৪বিঘা জমিতে ২০১১সালের ২৩ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে হাটটি চালু করা হয়। তখন থেকে সপ্তাহে একদিন প্রতি বুধবার সকাল ১০ থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই হাট বসতো।
এরপর ২০১৯ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও ভারতের বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বর্ডার হাট বসানোর দিন বাড়িয়ে দুই দিন করা হয়। এরপর ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর থেকে সপ্তাহে দুই দিন সোমবার ও বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত হাটে কেনা-বেচা চলে আসছিল। পরে ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা মহামারীর কারণে এ হাটটি প্রশাসনিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এএজেড
