ঘরে ভাইয়ের মরদেহ পাহারায় দুই বোন!

বাড়ির প্রধান দরজা আটকানো। ধারনা করা হচ্ছে ওই বাসার একটি কক্ষে গত তিন দিন থেকে পড়ে রয়েছে ছোটভাই বখতিয়ারের মরদেহ। ছোট ভাইয়ের এই মরদেহের পাহারায় আছেন তাঁরই বড় দুই বোন। শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি টের পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, এই পরিবারের সদস্যরা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় ভাই মারা যাওয়ার খবরটি তারা বুঝতেই পারেননি।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের পুরোনো বাবুপাড়ায়। মৃত যুবক বখতিয়ার হোসেন (৪০) মহল্লার দারুল উলুম মাদ্রাসা সড়কের মৃত সালামত আলীর ছেলে। তাঁর বাসাসংলগ্ন নিজস্ব একটি লন্ড্রির দোকান রয়েছে। বখতিয়ারের সঙ্গে একই বাসায় থাকেন তাঁর দুই বোন মাহাতারা আকতার (৪৬) ও রোকসানা বেগম (৪৫)। বখতিয়ার অবিবাহিত ছিল।
প্রতিবেশীরা বলেন, তিন দিন ধরে দোকান বন্ধ থাকায় কাপড় লন্ড্রি করতে পারছিল না মহল্লার বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে দোকান বন্ধ পেয়ে স্থানীয় এক বাসিন্দা বাড়িতে যান। বাড়িতে গেলে তিনি বাড়ীর ভিতর বিকট দুর্গন্ধ পান। পরে বাসার একটি কক্ষের বিছানায় বখতিয়ারের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়দের অবগত করেন।
বখতিয়ারের বড় ভাই এখলাক মিয়া শহরের মুন্সিপাড়ায় সস্ত্রীক ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি বলেন, ছোট ভাই দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। বোন দুটি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তাঁরা ভাইয়ের মৃতের সংবাদটি কাউকে জানাতে পারেননি। তিনি বলেন, বুধবার কোনো এক সময় ছোট ভাই মারা গেছেন।
সৈয়দপুর পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বেলাল হোসেন জানান, পুরো পরিবারটি মানসিক রোগে আক্রান্ত। তাঁরা কারও সঙ্গে মেলামেশা করেন না। অনাহারে থাকলেও কারও কাছ থেকে সাহায্য নেন না।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিবারের সদস্যরা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে জেনেছি। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এএজেড
