রসিক নির্বাচনে রওশনপন্থী নেতার মনোনয়ন সংগ্রহ
রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে মঙ্গলবার মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন রওশন পন্থি বহিস্কৃত নেতা একেএম আব্দুর রউফ মানিক। জিএম কাদের মনোনিত মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা চূড়ান্ত হয়েছেন অনেক আগেই। তিনি জিএম কাদের-মজিবুল হক চুন্নু মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন। এবার জিএম কাদেরের সঙ্গে চলমান বিরোধে নতুন করে ঘি ঢেলে দিয়েছেন রওশন-পন্থী নেতা একেএম আব্দুর রউফ মানিক।
বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের প্রার্থী দাবি করে রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন সাবেক পৌর মেয়র ও জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান একেএম আব্দুর রউফ মানিক। মঙ্গলবার সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় থেকে আব্দুর রউফ মানিকের পক্ষে সোহেল আহমেদ লিটন নামের এক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে সোহেল আহমেদ লিটন বলেন, রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের মনোনিত প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পেয়েছেন একেএম আব্দুর রউফ মানিক। তার পক্ষে আমরা আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। সিটিকরর্পোরেশন নির্বাচনে দলের লাঙ্গল প্রতীক নিয়েই মানিক নির্বাচন করবেন।
জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত নেতা একেএম আব্দুর রউফ মানিকের মনোনয়ন সংগ্রহ করাকে ঘিরে দলের ভেতরে-বাইরে চলছে নানা গুঞ্জন। একই দলের দুই প্রার্থীর মনোনয়ন সংগ্রহ করায় ক্ষুব্ধ জাতীয়পর্টির তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তারা আশঙ্কা করছেন, দেবর-ভাবির দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠলে লাঙ্গলের ঘাঁটিতেই ঘটবে জাতীয় পার্টির ঘাটি রংপুরে নেমে আসবে চরম বিপর্যয়।
গত ১৫ নভেম্বর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের পক্ষে দলের মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু স্বাক্ষরিত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির রংপুর মহানগরের সভাপতি ও বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনিই লাঙ্গল প্রতীক পাবেন বলে জানান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনের একটি প্রজ্ঞাপন হয় সেই প্রজ্ঞাপনে কারা কারা মনোনয়ন দিতে পারবেন সেটা স্পষ্ট লেখা আছে। মহাসচিবের ওপর তো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া নাই। তাছাড়া মনোনয়নের ক্ষমতাবান লোক কে হবেন সেটা চেয়ারম্যান সাত দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছেন। যেহেতু দলের গঠনতন্ত্রে বলা আছে মহাসচিব মনোনয়ন দিতে পারবেন, তাই এ নিয়ে নতুন করে ভাববার কিছু নেই।
প্রতীক কারও ব্যক্তিগত নামেও না, এটা পার্টির নামে। এ কারণে আমি প্রতীক নিয়ে কোনো ঝুঁকি দেখছি না। জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্টপোষক রওশন এরশাদ। দলের গঠনতন্ত্রে পৃষ্ঠপোষকের ক্ষমতা ও কার্যক্রম সম্পর্কে স্পষ্ট বলা রয়েছে। দলের কোনো প্রয়োজনে হলে তিনি সহযোগিতা করবেন বা পরামর্শ দেবেন। রওশন এরশাদের নির্বাহী কোনো ক্ষমতা নেই। রংপুর সিটিতে জাতীয় পার্টি থেকে এখন আর অন্য কারো প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই।
গতকাল সোমবার রংপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে যেই প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক পাবেন তিনিই মেয়র নির্বাচিত হবেন। জাতীয় পার্টি মানেই লাঙ্গল। আর লাঙ্গল যার কাছে থাকবে সেই হবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী। দলের মহাসচিব রংপুরে যাকে মনোনয়নপত্র দিয়েছেন সেটা কোনো দিনও বৈধ হবে না। কারণ দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষমতা তার নেই।
রংপুরের সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে দুই জন মেয়র প্রার্থী প্রসঙ্গে জেলানির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, কোন দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিলেই তিনি লাঙ্গল প্রতিক পাবেন না। আমরা মনোনয়ন পত্র যাচাই করে দেখবো যার মনোনয়নে দলীয় প্রধানের সুপারিশ আছে সে দলীয় প্রতিক পাবেন।
এএজেড