২০২৩ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। নির্বাচনী প্রচারকালীন সময় সাকিবের কার্যক্রম কভার করেছিলেন তখনকার এএফপি বাংলাদেশ ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম। সেই সময় তোলা একটি ছবি সম্প্রতি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যা ফলাও করে প্রচার করছে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সাবেক আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
ছবিটি ভাইরাল হওয়ার প্রেক্ষিতে বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালনকারী শফিকুল আলম নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এক পোস্টে তিনি জানান, “আমি জানি ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ যুগের ১৬ বছরে আমি কী করেছি। ফেসবুকে আমার যেকোনো ছবি ও মন্তব্য খুঁজে পেতে আপনাকে স্বাগত জানাই। এটি আমার স্মৃতি তাজা করতে এবং ভবিষ্যতে একটি বই লেখার অনুপ্রেরণা দেবে।”
তিনি তার পোস্টে লিখেছেন, সাকিব আল হাসানের প্রচারণা কভার করার জন্য ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মাগুরা সফর করেছিলেন তিনি। প্রচারণাকালে সাকিবকে অনুসরণ করা, ভোটারদের সঙ্গে কথা বলা এবং ছবি তোলাই ছিল তার দায়িত্বের অংশ। তিনি উল্লেখ করেন, সাকিবের পোস্টার সর্বত্র ছিল—চায়ের দোকান থেকে শুরু করে রাস্তার মোড়ে, এমনকি প্রতিটি দেয়ালেও। বিরোধী দলের—বিশেষ করে বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির—কিছু পোস্টারও দেখা গিয়েছিল, যা সেই নির্বাচনকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা ছিল।
শফিকুল আরও বলেন, “২০১১ সাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আছি। হাজার হাজার ছবি তুলেছি, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় বহু চরিত্রের সঙ্গে আমার ছবি রয়েছে। এর মধ্যে কিছু ভাইরাল হয়েছে, যেমন গত বছর মুজিব জাদুঘরে তোলা একটি পেঙ্গুইন জ্যাকেট পরা ছবি।” তিনি সমালোচকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আমাকে জনসাধারণের শত্রু নম্বর ওয়ান বানানোর চেষ্টাও করা হয়েছে।”
এছাড়াও তিনি আরও একটি দীর্ঘ পোস্টে সাকিবের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। সেখানে তিনি লেখেন, “সাকিবের আওয়ামী লীগে যোগদান শুধু একটি ভুল নয়, বরং এটি বিশ্বাসঘাতকতা ছিল।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, একজন নাগরিক হিসেবে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের অধিকার থাকলেও, যে সময়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন, জোরপূর্বক গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, দুর্নীতি, এমনকি ব্যাংক ডাকাতির মতো গুরুতর অভিযোগ ছিল—সে সময়ে সাকিবের ওই সিদ্ধান্ত একটি শাসনব্যবস্থার প্রতি নীরব সমর্থন হিসেবে পরিগণিত হয়।
পোস্টের শেষে প্রেস সচিব লেখেন, “আপনারা আমার ছবি খুঁজে বের করে যা করছেন, তা আমাকে আমার অতীত স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। একদিন সেই অভিজ্ঞতাগুলো দিয়েই হয়তো একটি বই লিখব।”