মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি তেহরান তার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সমঝোতায় না আসে, তবে দেশটির ওপর সামরিক হামলা চালানো হতে পারে। পাশাপাশি, নতুন করে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হবে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।
রবিবার (৩০ মার্চ) মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের কর্মকর্তাদের মধ্যে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, "তারা যদি চুক্তিতে না আসে, তাহলে বোমা হামলা হবে। তবে সম্ভাবনা রয়েছে যে, চুক্তি না করলে তাদের ওপর শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপ করব, যেমনটা আমি চার বছর আগে করেছিলাম।"
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন। ওই চুক্তির আওতায় ইরান তার পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি বাতিল করার পর ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার ফলে দেশটি আরও উচ্চমাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে।
এখন পর্যন্ত ইরান নতুন কোনো সমঝোতায় রাজি হয়নি। ইরানের পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন একটি পরমাণু চুক্তি করতে আগ্রহী এবং এ বিষয়ে ওমানের মাধ্যমে ইরানে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে চিঠির জবাব ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির গোপন পরিকল্পনার অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছে। তাদের দাবি, দেশটি যে মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, তা বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি।
তবে ইরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তেহরানের দাবি, তাদের পরমাণু কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ এবং এটি শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাম্প্রতিক হুঁশিয়ারির পর ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, ইরান যদি নতুন কোনো সমঝোতায় না আসে, তাহলে ওয়াশিংটন কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। এখন দেখার বিষয়, তেহরান ও ওয়াশিংটন শেষ পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে কি না।