রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫ | ৭ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

রাজশাহীতে বহুগুণ বেড়েছে এমপিদের সম্পদ, সাথে স্ত্রীদেরও

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনের সংসদ-সদস্য (এমপি) প্রার্থীদের আয় ও সম্পদের পরিমাণ গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে বহুগুণ। কারও বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাংকে টাকা জমা রাখার পরিমাণ। কারও বেড়েছে জমি ও স্থায়ী সম্পদের পরিমাণ। আবার প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের স্ত্রীদেরও সম্পদ বেড়েছে।

আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন-রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ (সদর) আসনে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ (মোহনপুর-পবা) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ ও একই আসনে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যাংকে ফারুক চৌধুরীর ৯ কোটি টাকা : রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে ওমর ফারুক চৌধুরীর হাতে ২০১৮ সালে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ৬০২ টাকা। ওই বছরে তার স্ত্রীর হাতে ছিল ৩৩ লাখ ৯৭ হাজার ১১৪ টাকা। ওই বছরে তাদের ব্যাংক-হিসাবে কোনো অর্থ জমা ছিল না। তবে এ বছর ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমার দিন ফারুক চৌধুরীর তিনটি ব্যাংক-হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা। পাঁচ বছরে তার জ্ঞাত আয় ও আয়ের উৎস না বাড়লেও ব্যাংকে টাকার পরিমাণ বেড়েছে বহুগুণ। হলফনামায় তার আয়ের স্ফীতি সব ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। যদিও নগদ টাকা আগের চেয়ে সামান্য কমেছে। নগদ টাকার পরিমাণ ৮৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৬ টাকা উল্লেখ করেছেন তিনি। এ সময় স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ৪০ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০ টাকা। ২০১৮ সালে শেয়ারে কোনো টাকা না থাকলেও পাঁচ বছর পর বিনিয়োগ ২ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। নিজের ও স্ত্রীর চারটি গাড়ির দাম দেখানো হয়েছে ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে রয়েছে শত ভরি স্বর্ণালংকার।

ফারুক চৌধুরী নিজের নামে ৬০ বিঘা কৃষিজমি এবং এসব খাত থেকে বছরে সাত লাখ ৫৫ হাজার টাকা আয় উল্লেখ করেছেন। ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের নিজের নামে আবাসিক ভবন ছাড়াও ৯৬ লাখ ৮০ হাজার মূল্যের ফ্ল্যাট এবং স্ত্রীর নামে ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট থাকার কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে। এর বাইরে আরও ৫৪ লাখ ৬২ হাজার টাকার বাড়ি অথবা ভবন থাকার কথা বলা হয়েছে।

শূন্য থেকে শুরু করা কালামের সম্পদের ছড়াছড়ি : রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আবুল কালাম আজাদ মেয়র পদে নির্বাচনে (২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি) হলফনামায় সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছিলেন সে তুলনায় বর্তমানে তার সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ। ২০১১ সালে প্রথমবার এবং ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র পদে কালাম নির্বাচিত হন। সংসদ-সদস্য নির্বাচনে হলফনামায় কালাম কৃষি খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। তবে মাছচাষ থেকে বছরে আয় করেন এক কোটি এক লাখ টাকা। অন্যসব খাত থেকে এক বছরে আয় করেছেন চার লাখ ৮০ হাজার টাকা। মেয়র হওয়ার আগে কালামের হাতে কোনো নগদ টাকা, মাছের খামার ও কৃষি জমি ছিল না।

কালাম মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার ব্যবহার করেন। এসবের মূল্য ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬০৭ টাকা। এছাড়া তিনি এক কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের হার্ডজিপ ব্যবহার করেন। কালামের পিস্তল ও শর্টগানের দাম তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা। তার ৪ দশমিক ৪ একর কৃষি জমি রয়েছে। এর মূল্য ৬২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এছাড়া তার এক কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা দামের পাকা ভবন রয়েছে। তার স্ত্রীর নামেও রয়েছে ২০ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সম্পত্তি। ১৭ লাখ টাকা দামের আবাসিক ভবন, ৫০ লাখ টাকা দামের বাণিজ্যিক ভবন, ৮৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা দামের ৮৫ দশমিক ৫০ একর আয়তনের ১০টি মাছের খামারেরও মালিক কালাম। একক নামে বিভিন্ন ব্যাংকে তার এক কোটি ৩৯ হাজার ৪৪৫ টাকা এবং স্ত্রীর সঙ্গে যৌথ নামে ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৩৮ টাকা ঋণ রয়েছে।

১২ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া প্রসঙ্গে আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাছচাষ করে বছরে তিনি এক কোটি টাকা আয় করেন। বিভিন্ন দোকান ভাড়া ছাড়াও কৃষি থেকে তার আয় আছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে তিনি ব্যবসা করেন।

মাছচাষি আয়েন কিনেছেন ৭৫ বিঘা জমি : রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে আয়েন উদ্দিন গত পাঁচ বছরে এলাকায় ৭৫ বিঘা জমি কিনেছেন। ২০১৪ সালে প্রথমবার ও ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন। এবার তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৮ সালে তার নামে চার লাখ টাকা দামের দুই বিঘা জমি ছিল। এখন তার নামে জমির পরিমাণ ৭৭ বিঘা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে তিনি ৭৫ বিঘা জমি কিনেছেন। এসব জমির দাম তিন কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার ৩২৬ টাকা দেখানো হয়েছে। এবারও তিনি ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮০ টাকায় রাজধানীর পূর্বাচলে তিন কাঠার একটি প্লট কিনেছেন। ২০১৩ সালে স্ত্রীর নামে কোনো ফ্ল্যাট ছিল না। ২০১৮ সালে ৩০ লাখ টাকায় তিনি একটি ফ্ল্যাট কেনেন। এবার স্ত্রীর নামে দুটি ফ্ল্যাট দেখানো হয়েছে। দাম আনুমানিক প্রায় ৮৬ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে আয়েনের স্ত্রীর হাতে নগদ এক লাখ টাকা ছিল। স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা ছিল না। এখন তার শিক্ষক স্ত্রীর হাতে নগদ ১৮ লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ টাকা আছে। সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ টাকার। আয়ের খাত হিসাবে এমপি হিসাবে পাওয়া সম্মানি ছাড়াও আয়েন মাছচাষ দেখিয়েছেন। ৭৭ একর জমি লিজ নিয়ে তিনি মাছ চাষ করেন বলে উল্লেখ করেছেন। এ খাত থেকে তার বার্ষিক আয় ১১ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। তার হাতে নগদ ৩ লাখ টাকা।

এনামুলের কমেছে নগদ টাকা : রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হকের নগদ টাকা কমেছে। তবে ব্যাংকে টাকার পরিমাণ বেড়েছে। ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবারের এমপি এনামুল এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ২৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় হাতে ছিল ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮ টাকা। স্ত্রীর ছিল এক কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৯ টাকা। এখন তার স্ত্রীর হাতে আছে তিন লাখ টাকা। তবে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৮ সালে এনামুলের ব্যাংকে ছিল সাত লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকা, স্ত্রীর ছিল চার লাখ দুই হাজার ৩২৫ টাকা। ব্যবসা খাতে তার বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে।

ডা. মনসুর গড়েছেন টাকার পাহাড় : রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে ডা. মনসুর রহমান পাঁচ বছরে টাকার পাহাড় গড়েছেন। ২০১৮ সালে তিনি প্রথমবার এমপি হন। এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তবে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। পাঁচ বছরে মনসুরের বার্ষিক আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৭ গুণ। ব্যাংকে জমা হয়েছে বিপুল টাকা।

২০১৮ সালে শিক্ষকতা ও শেয়ার থেকে তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১৪ লাখ ৯ হাজার ৯৬১ টাকা। এখন তার বার্ষিক আয় ৯২ লাখ ৭০ হাজার ২৮৯ টাকা। বছরে তিনি কৃষি খাতে ২৭ লাখ টাকা, দোকান ও মার্কেট ভাড়া আদায় ৮৪ হাজার, ব্যবসা থেকে ছয় লাখ ৬০ হাজার, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র থেকে ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৬৩৪ টাকা, চাকরি থেকে তিন লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৩ টাকা এবং অন্যসব খাত থেকে ৩৮ লাখ টাকা আয় করেন। তার হাতে নগদ এক লাখ ৯ হাজার ১৬২ টাকা। ২০১৮ সালে ছিল ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ৮৩৪ টাকা। ব্যাংকে ছিল তিন লাখ ১১ হাজার ১২৪ টাকা। এখন ব্যাংকে দুই কোটি ১৯ লাখ ৯৭ হাজার ১৭৬ টাকা। আগে সঞ্চয়পত্র ছিল ৩৫ লাখ টাকার। এখন তা বেড়ে দুই কোটি ৪৬ লাখ ৯৭ হাজার ৭৬৭ টাকা হয়েছে। মনসুরের আগে ঋণ ছিল ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৬১ টাকা। ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ৯৫ হাজার ১৮ টাকায় নেমে এসেছে। আগে স্থাবর সম্পদ হিসাবে মনসুরের ৩০ লাখ টাকার জমি ছিল। এবার তার নামে সাড়ে ৩২ বিঘা কৃষিজমি ও ৬ বিঘা পুকুর দেখানো হয়েছে।

শাহরিয়ারের আয় বেড়েছে আড়াইগুণ : রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে এমপি শাহরিয়ার আলমের পাঁচ বছরে আয় আড়াইগুণের বেশি বেড়েছে। ২০০৮ সাল থেকে এ আসনের এমপি শাহরিয়ার এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল তিন কোটি চার লাখ ৫৩ হাজার ৩৮৮ টাকা। এখন আড়াইগুণ বেড়ে তা ৭ কোটি ৯২ লাখ ৯১ হাজার ২৫৪ টাকা হয়েছে। তার নগদ টাকাও বেড়েছে। ২০১৮ সালে হাতে নগদ ছিল ছয় কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ টাকা। এখন ২১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৫৩ টাকা।

শাহরিয়ার শেয়ারবাজারে ৬৬ কোটি ৪১ লাখ ৩২ হাজার ৭০০ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। আগে শেয়ার ছিল ৫৮ কোটি ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০ টাকার। আগে সঞ্চয়পত্র ছিল ১০ লাখ, এবার বেড়ে হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে শাহরিয়ারের গাড়ির দাম ছিল ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৫ টাকা। এখন লাক্সারি কারের দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ তিন হাজার ১০০ টাকা। ২০০৮ সালে তার হাতে নগদ টাকা ছিল এক কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৫ টাকা। ব্যাংকে ছিল চার হাজার ১৩৬ টাকা। ২০১৩ সালের নির্বাচনের সময় তার ব্যাংক-হিসাবে কোনো টাকা ছিল না। এখন স্ত্রী-সন্তানদের নামেও বিপুল সম্পদ হয়েছে। কোম্পানির শেয়ার, কৃষি খাত, প্রতিমন্ত্রী হিসাবে পাওয়া সম্মানি ও দোকান এবং অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়াকে আয়ের উৎস হিসাবে দেখিয়েছেন শাহরিয়ার।

বাদশার টাকা বেড়েছে পাঁচগুণ : রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ফজলে হোসেন বাদশার টাকা পাঁচ বছরে পাঁচগুণ বেড়েছে। জোট শরিক হিসাবে টানা ১৫ বছর ধরে বাদশা এ আসনে এমপি। এবার ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিসাবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাদশা তার ব্যাংক-হিসাবে জমা দেখিয়েছিলেন ২৫ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০ টাকা। এখন তার ব্যাংকে আছে এক কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার ২৪৫ টাকা। আগে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা ও ৩৮ লাখ টাকার দুটি গাড়ি থাকলেও এখন একটি জিপের দাম ৭০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে বাদশার হাতে নগদ ছিল ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৮৬ টাকা। এখন ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকারের মালিক হয়েছেন তিনি। আগে দোকান ভাড়া থেকে কোনো আয় না থাকলেও এখন মার্কেট ভাড়া থেকে বছরে আয় ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৮২৩ টাকা। এমপি হিসাবে বছরে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা সম্মানি পান। বছরে তিনি ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩ টাকা আয় দেখিয়েছেন।

Header Ad
Header Ad

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি

ছবি: সংগৃহীত

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনুষ্ঠিত বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, গত ১৫ বছরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রার্থীদের, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের এবং যারা অনিয়মে যুক্ত ছিল, তাদের তদন্ত করে বিচার করতে হবে।

রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে ফ্যাসিস্ট কাঠামোয় নিয়ে গেছে এবং মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে, যার দায় নির্বাচন কমিশনেরও রয়েছে।

বৈঠকে এনসিপির পক্ষ থেকে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে রয়েছে—মনোনয়নপত্র জমা দিতে সশরীরে আসার বিধান প্রবর্তন, প্রার্থীদের হলফনামা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা নিরূপণ, নির্বাচনে সহিংসতা রোধে আচরণবিধি সংস্কার, ঋণখেলাপিদের প্রার্থিতা বাতিল, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মনিটরিং করা।

এছাড়া একই নামে একাধিক দলের নিবন্ধন, অফিসবিহীন দলকে বৈধতা দেওয়া এবং এসব বিষয়ে সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়। এনসিপি মনে করে, এসব বাস্তবায়ন না হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরউদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও তাজনুভা জাবীন।

Header Ad
Header Ad

এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

ছবি: সংগৃহীত

চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১৯ দিনেই দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানা গেছে, ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রবাসীরা ১৭১ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে যার পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার ৯৬৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা।

রেমিট্যান্সের বড় একটি অংশ এসেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে—৯৮ কোটি ৫৪ লাখ ২০ হাজার ডলার। এছাড়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো দিয়ে ৯ কোটি ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

এর আগেও চলতি বছরের মার্চ মাসে দেশে এক মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসে—৩২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও যথাক্রমে ২১৯ কোটি ও ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা, ডলারের ভালো বিনিময় হার এবং রমজান ও ঈদ উপলক্ষ্যে প্রবাসীদের বাড়তি পাঠানোর প্রবণতা—এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, এপ্রিল শেষে এই প্রবাহ ৩৫০ কোটি ডলারের বেশি হতে পারে, যা নতুন একটি রেকর্ড হবে।

Header Ad
Header Ad

দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত

আজ রবিবার দুপুরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

কোনো ব্যক্তি যেন টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হতে পারেন—এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও বিএনপি বলছে, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে চিরতরে প্রধানমন্ত্রিত্বের পথ বন্ধ করা উচিত নয়।

রোববার (২০ এপ্রিল) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, “এক ব্যক্তি টানা দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না—এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত। তবে দুই মেয়াদের পর যদি জনগণ আবারও কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়, সেই সুযোগ রাখা উচিত। এক বছর বিরতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় কোনো বাধা থাকার কথা নয়।”

এ সময় তিনি আরও বলেন, “সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট। আমরা পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার পক্ষে। তবে রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের বিষয়টিতে বিএনপি একমত নয়। এতদিন পর রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের যৌক্তিকতা আমরা দেখি না।”

তিনি জানান, মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবকে বিএনপি সমর্থন করছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “সব কিছু মৌলিক অধিকার না বানিয়ে, রাষ্ট্রের বাস্তব সামর্থ্য বিবেচনায় রেখে যা নিশ্চিত করা সম্ভব, সেটুকু করার আহ্বান জানিয়েছি।”

বৈঠকে বিএনপি প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সাবেক সচিব আবু মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

অন্যদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তার সঙ্গে ছিলেন সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

প্রসঙ্গত, বিএনপি গত বৃহস্পতিবারও ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিগত ৩ নির্বাচনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চায় এনসিপি
এপ্রিলে ১৯ দিনেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ২১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াল
দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া নিয়ে বিএনপির অভিমত
ফাইয়াজের মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার নেই: আসিফ নজরুল
ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক ছাত্রীকে ৭ দিন ধরে আটকে ২৩ জন মিলে ধর্ষণ!
বিরামপুরে পিকআপের ধাক্কায় এসএসসি পরীক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যুবলীগ কর্মী মিঠু গ্রেফতার
ওয়াকফ সংশোধনী আইন নিয়ে উত্তাল মুসলিম সমাজ, হায়দ্রাবাদে গণবিক্ষোভ
ফকিরাপুলে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৩ জন দগ্ধ
আল-আকসা ভেঙে মন্দির স্থাপনের পরিকল্পনা ফাঁস, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা
শেখ হাসিনা-কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্রমাণ মিলেছে: চিফ প্রসিকিউটর
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ১৩৮ মিলিয়ন ডলার দেবে চীন : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা
আইপিএলে অভিষেক ম্যাচেই তিন রেকর্ড গড়লেন ১৪ বছরের বৈভব সূর্যবংশী
৩ মে ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক হেফাজতে ইসলামের
আজ স্বামীর প্রশংসা করার দিন
ইসরায়েলি অভিনেত্রী থাকায় নিষিদ্ধ হলো সিনেমা
রাজধানীর ডেমরা ও মিরপুরে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বিএনপি
যশোরের শার্শায় অস্ত্রসহ দুই ছিনতাইকারী আটক
জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: ট্রাইব্যুনালে সালমান, আনিসুল, দীপু মনি, পলকসহ ১৯ জন