শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

রাজশাহীতে বহুগুণ বেড়েছে এমপিদের সম্পদ, সাথে স্ত্রীদেরও

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর ছয়টি আসনের সংসদ-সদস্য (এমপি) প্রার্থীদের আয় ও সম্পদের পরিমাণ গত পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে বহুগুণ। কারও বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাংকে টাকা জমা রাখার পরিমাণ। কারও বেড়েছে জমি ও স্থায়ী সম্পদের পরিমাণ। আবার প্রার্থীদের পাশাপাশি তাদের স্ত্রীদেরও সম্পদ বেড়েছে।

আলোচিত প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন-রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী-২ (সদর) আসনে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ (মোহনপুর-পবা) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আওয়ামী লীগের আবুল কালাম আজাদ ও একই আসনে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে মনোনয়নবঞ্চিত ডা. মনসুর রহমান, রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যাংকে ফারুক চৌধুরীর ৯ কোটি টাকা : রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে ওমর ফারুক চৌধুরীর হাতে ২০১৮ সালে নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৯০ লাখ ৯৫ হাজার ৬০২ টাকা। ওই বছরে তার স্ত্রীর হাতে ছিল ৩৩ লাখ ৯৭ হাজার ১১৪ টাকা। ওই বছরে তাদের ব্যাংক-হিসাবে কোনো অর্থ জমা ছিল না। তবে এ বছর ২৯ নভেম্বর মনোনয়নপত্র জমার দিন ফারুক চৌধুরীর তিনটি ব্যাংক-হিসাবে জমা টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৩৮ হাজার ৬০৬ টাকা। পাঁচ বছরে তার জ্ঞাত আয় ও আয়ের উৎস না বাড়লেও ব্যাংকে টাকার পরিমাণ বেড়েছে বহুগুণ। হলফনামায় তার আয়ের স্ফীতি সব ক্ষেত্রেই দৃশ্যমান। যদিও নগদ টাকা আগের চেয়ে সামান্য কমেছে। নগদ টাকার পরিমাণ ৮৬ লাখ ৯৬ হাজার ৬৬৬ টাকা উল্লেখ করেছেন তিনি। এ সময় স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে থাকা নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ৪০ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০ টাকা। ২০১৮ সালে শেয়ারে কোনো টাকা না থাকলেও পাঁচ বছর পর বিনিয়োগ ২ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। নিজের ও স্ত্রীর চারটি গাড়ির দাম দেখানো হয়েছে ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। স্ত্রী ও সন্তানদের কাছে রয়েছে শত ভরি স্বর্ণালংকার।

ফারুক চৌধুরী নিজের নামে ৬০ বিঘা কৃষিজমি এবং এসব খাত থেকে বছরে সাত লাখ ৫৫ হাজার টাকা আয় উল্লেখ করেছেন। ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের নিজের নামে আবাসিক ভবন ছাড়াও ৯৬ লাখ ৮০ হাজার মূল্যের ফ্ল্যাট এবং স্ত্রীর নামে ৬৫ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট থাকার কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে। এর বাইরে আরও ৫৪ লাখ ৬২ হাজার টাকার বাড়ি অথবা ভবন থাকার কথা বলা হয়েছে।

শূন্য থেকে শুরু করা কালামের সম্পদের ছড়াছড়ি : রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে আবুল কালাম আজাদ মেয়র পদে নির্বাচনে (২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি) হলফনামায় সম্পদের যে বিবরণ দিয়েছিলেন সে তুলনায় বর্তমানে তার সম্পদ বেড়েছে বহুগুণ। ২০১১ সালে প্রথমবার এবং ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র পদে কালাম নির্বাচিত হন। সংসদ-সদস্য নির্বাচনে হলফনামায় কালাম কৃষি খাত থেকে আয় দেখিয়েছেন এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। তবে মাছচাষ থেকে বছরে আয় করেন এক কোটি এক লাখ টাকা। অন্যসব খাত থেকে এক বছরে আয় করেছেন চার লাখ ৮০ হাজার টাকা। মেয়র হওয়ার আগে কালামের হাতে কোনো নগদ টাকা, মাছের খামার ও কৃষি জমি ছিল না।

কালাম মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার ব্যবহার করেন। এসবের মূল্য ৩৩ লাখ ৬৫ হাজার ৬০৭ টাকা। এছাড়া তিনি এক কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের হার্ডজিপ ব্যবহার করেন। কালামের পিস্তল ও শর্টগানের দাম তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা। তার ৪ দশমিক ৪ একর কৃষি জমি রয়েছে। এর মূল্য ৬২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা। এছাড়া তার এক কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ৩০০ টাকা দামের পাকা ভবন রয়েছে। তার স্ত্রীর নামেও রয়েছে ২০ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সম্পত্তি। ১৭ লাখ টাকা দামের আবাসিক ভবন, ৫০ লাখ টাকা দামের বাণিজ্যিক ভবন, ৮৬ লাখ ৫২ হাজার টাকা দামের ৮৫ দশমিক ৫০ একর আয়তনের ১০টি মাছের খামারেরও মালিক কালাম। একক নামে বিভিন্ন ব্যাংকে তার এক কোটি ৩৯ হাজার ৪৪৫ টাকা এবং স্ত্রীর সঙ্গে যৌথ নামে ৬৫ লাখ ৫০ হাজার ৬৩৮ টাকা ঋণ রয়েছে।

১২ বছরে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া প্রসঙ্গে আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাছচাষ করে বছরে তিনি এক কোটি টাকা আয় করেন। বিভিন্ন দোকান ভাড়া ছাড়াও কৃষি থেকে তার আয় আছে। ব্যাংক ঋণ নিয়ে তিনি ব্যবসা করেন।

মাছচাষি আয়েন কিনেছেন ৭৫ বিঘা জমি : রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে আয়েন উদ্দিন গত পাঁচ বছরে এলাকায় ৭৫ বিঘা জমি কিনেছেন। ২০১৪ সালে প্রথমবার ও ২০১৮ সালে তিনি দ্বিতীয়বার এমপি নির্বাচিত হন। এবার তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ২০১৮ সালে তার নামে চার লাখ টাকা দামের দুই বিঘা জমি ছিল। এখন তার নামে জমির পরিমাণ ৭৭ বিঘা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে তিনি ৭৫ বিঘা জমি কিনেছেন। এসব জমির দাম তিন কোটি ২৭ লাখ ২০ হাজার ৩২৬ টাকা দেখানো হয়েছে। এবারও তিনি ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৮৮০ টাকায় রাজধানীর পূর্বাচলে তিন কাঠার একটি প্লট কিনেছেন। ২০১৩ সালে স্ত্রীর নামে কোনো ফ্ল্যাট ছিল না। ২০১৮ সালে ৩০ লাখ টাকায় তিনি একটি ফ্ল্যাট কেনেন। এবার স্ত্রীর নামে দুটি ফ্ল্যাট দেখানো হয়েছে। দাম আনুমানিক প্রায় ৮৬ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে আয়েনের স্ত্রীর হাতে নগদ এক লাখ টাকা ছিল। স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা ছিল না। এখন তার শিক্ষক স্ত্রীর হাতে নগদ ১৮ লাখ ২৯ হাজার ৯১৯ টাকা আছে। সঞ্চয়পত্র ১০ লাখ টাকার। আয়ের খাত হিসাবে এমপি হিসাবে পাওয়া সম্মানি ছাড়াও আয়েন মাছচাষ দেখিয়েছেন। ৭৭ একর জমি লিজ নিয়ে তিনি মাছ চাষ করেন বলে উল্লেখ করেছেন। এ খাত থেকে তার বার্ষিক আয় ১১ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে। তার হাতে নগদ ৩ লাখ টাকা।

এনামুলের কমেছে নগদ টাকা : রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের এমপি এনামুল হকের নগদ টাকা কমেছে। তবে ব্যাংকে টাকার পরিমাণ বেড়েছে। ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবারের এমপি এনামুল এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তার হাতে নগদ টাকার পরিমাণ ২৫ লাখ টাকা। ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময় হাতে ছিল ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯৮ টাকা। স্ত্রীর ছিল এক কোটি ১৩ লাখ ৭৩ হাজার ৩৬৯ টাকা। এখন তার স্ত্রীর হাতে আছে তিন লাখ টাকা। তবে স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ বেড়েছে। ২০১৮ সালে এনামুলের ব্যাংকে ছিল সাত লাখ ৮৭ হাজার ১১৪ টাকা, স্ত্রীর ছিল চার লাখ দুই হাজার ৩২৫ টাকা। ব্যবসা খাতে তার বিপুল বিনিয়োগ রয়েছে।

ডা. মনসুর গড়েছেন টাকার পাহাড় : রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে ডা. মনসুর রহমান পাঁচ বছরে টাকার পাহাড় গড়েছেন। ২০১৮ সালে তিনি প্রথমবার এমপি হন। এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি। তবে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। পাঁচ বছরে মনসুরের বার্ষিক আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৭ গুণ। ব্যাংকে জমা হয়েছে বিপুল টাকা।

২০১৮ সালে শিক্ষকতা ও শেয়ার থেকে তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১৪ লাখ ৯ হাজার ৯৬১ টাকা। এখন তার বার্ষিক আয় ৯২ লাখ ৭০ হাজার ২৮৯ টাকা। বছরে তিনি কৃষি খাতে ২৭ লাখ টাকা, দোকান ও মার্কেট ভাড়া আদায় ৮৪ হাজার, ব্যবসা থেকে ছয় লাখ ৬০ হাজার, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র থেকে ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৬৩৪ টাকা, চাকরি থেকে তিন লাখ ৮৯ হাজার ৬৫৩ টাকা এবং অন্যসব খাত থেকে ৩৮ লাখ টাকা আয় করেন। তার হাতে নগদ এক লাখ ৯ হাজার ১৬২ টাকা। ২০১৮ সালে ছিল ১৫ লাখ ৬৫ হাজার ৮৩৪ টাকা। ব্যাংকে ছিল তিন লাখ ১১ হাজার ১২৪ টাকা। এখন ব্যাংকে দুই কোটি ১৯ লাখ ৯৭ হাজার ১৭৬ টাকা। আগে সঞ্চয়পত্র ছিল ৩৫ লাখ টাকার। এখন তা বেড়ে দুই কোটি ৪৬ লাখ ৯৭ হাজার ৭৬৭ টাকা হয়েছে। মনসুরের আগে ঋণ ছিল ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৬১ টাকা। ঋণের পরিমাণ ৮ লাখ ৯৫ হাজার ১৮ টাকায় নেমে এসেছে। আগে স্থাবর সম্পদ হিসাবে মনসুরের ৩০ লাখ টাকার জমি ছিল। এবার তার নামে সাড়ে ৩২ বিঘা কৃষিজমি ও ৬ বিঘা পুকুর দেখানো হয়েছে।

শাহরিয়ারের আয় বেড়েছে আড়াইগুণ : রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে এমপি শাহরিয়ার আলমের পাঁচ বছরে আয় আড়াইগুণের বেশি বেড়েছে। ২০০৮ সাল থেকে এ আসনের এমপি শাহরিয়ার এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল তিন কোটি চার লাখ ৫৩ হাজার ৩৮৮ টাকা। এখন আড়াইগুণ বেড়ে তা ৭ কোটি ৯২ লাখ ৯১ হাজার ২৫৪ টাকা হয়েছে। তার নগদ টাকাও বেড়েছে। ২০১৮ সালে হাতে নগদ ছিল ছয় কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৭০৬ টাকা। এখন ২১ কোটি ৪৫ লাখ ৪৯ হাজার ১৫৩ টাকা।

শাহরিয়ার শেয়ারবাজারে ৬৬ কোটি ৪১ লাখ ৩২ হাজার ৭০০ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। আগে শেয়ার ছিল ৫৮ কোটি ছয় লাখ ৫৩ হাজার ৩৫০ টাকার। আগে সঞ্চয়পত্র ছিল ১০ লাখ, এবার বেড়ে হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে শাহরিয়ারের গাড়ির দাম ছিল ৭৬ লাখ ৬৩ হাজার ৩১৫ টাকা। এখন লাক্সারি কারের দাম দেখানো হয়েছে ১ কোটি ১০ লাখ তিন হাজার ১০০ টাকা। ২০০৮ সালে তার হাতে নগদ টাকা ছিল এক কোটি ৬৬ লাখ ৪০ হাজার ৫৬৫ টাকা। ব্যাংকে ছিল চার হাজার ১৩৬ টাকা। ২০১৩ সালের নির্বাচনের সময় তার ব্যাংক-হিসাবে কোনো টাকা ছিল না। এখন স্ত্রী-সন্তানদের নামেও বিপুল সম্পদ হয়েছে। কোম্পানির শেয়ার, কৃষি খাত, প্রতিমন্ত্রী হিসাবে পাওয়া সম্মানি ও দোকান এবং অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়াকে আয়ের উৎস হিসাবে দেখিয়েছেন শাহরিয়ার।

বাদশার টাকা বেড়েছে পাঁচগুণ : রাজশাহী-২ (সদর) আসনে ফজলে হোসেন বাদশার টাকা পাঁচ বছরে পাঁচগুণ বেড়েছে। জোট শরিক হিসাবে টানা ১৫ বছর ধরে বাদশা এ আসনে এমপি। এবার ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী হিসাবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বাদশা তার ব্যাংক-হিসাবে জমা দেখিয়েছিলেন ২৫ লাখ ৯৭ হাজার ৮০০ টাকা। এখন তার ব্যাংকে আছে এক কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার ২৪৫ টাকা। আগে সাড়ে ১৬ লাখ টাকা ও ৩৮ লাখ টাকার দুটি গাড়ি থাকলেও এখন একটি জিপের দাম ৭০ লাখ টাকা। পাঁচ বছর আগে বাদশার হাতে নগদ ছিল ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৮৬ টাকা। এখন ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকারের মালিক হয়েছেন তিনি। আগে দোকান ভাড়া থেকে কোনো আয় না থাকলেও এখন মার্কেট ভাড়া থেকে বছরে আয় ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৮২৩ টাকা। এমপি হিসাবে বছরে ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা সম্মানি পান। বছরে তিনি ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩ টাকা আয় দেখিয়েছেন।

Header Ad

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের

ছবি: সংগৃহীত

গত অক্টোবর মাসে দেশজুড়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৩৪টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮৭৫ জন। এরমধ্যে ৪৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৮১৫ জন। একই সময়ে রেলপথে ৬৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬ নিহত, ২৪ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১৯টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত, ৩৬ জন আহত এবং ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এছাড়া এই সময়ে ১৩৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৩ জন নিহত, ২৩৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩০.৫৩ শতাংশ, নিহত ৩৪.৩১ শতাংশ ও আহত ২৯.৩২ শতাংশ।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয়, আঞ্চলিক, অনলাইন এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের সংগঠিত দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৯ চালক, ১৩৭ পথচারী, ৫১ পরিবহন শ্রমিক, ৭৩ শিক্ষার্থী, ১৮ শিক্ষক, ৭৬ নারী, ৬২ শিশু, ৫ চিকিৎসক, ৯ সাংবাদিক এবং ১৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে। এদের মধ্যে নিহত হয়েছে ৬ জন পুলিশ সদস্য, ৩ সেনা সদস্য, ১ আনসার সদস্য, ১২৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ১১৭ জন পথচারী, ৫৮ জন নারী, ৫১ জন শিশু, ৪৯ জন শিক্ষার্থী, ৩২ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৫ জন শিক্ষক, ৪ জন চিকিৎসক, ৬ জন সাংবাদিক, ১৬ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।

এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৬৩১টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৪.৪১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২২.৫০ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৮.৫৪ শতাংশ বাস, ১৭.৯১ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৩.৯৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬.৬৫ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৯.৪৮ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫.২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৪.৭৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ৯.৫১ শতাংশ বিবিধ কারণে, ০.২৫ শতাংশ ট্রেন যাববাহনে সংঘর্ষ। এবং চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৭৫ শতাংশ।

সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে— দেশের সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশের অনুপস্থিতি সুযোগে আইন লঙ্ঘন করে যানবাহনের অবাধ চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় এবং অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের মাঝে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া; এসব গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি বেড়েছে; জাতীয়, আঞ্চলিক ও ফিডার রোডে টানিং চিহ্ন না থাকার ফলে নতুন চালকের এসব সড়কে দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে; মহাসড়কের নির্মাণ ত্রুটি, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং একজন চালক অতিরিক্ত সময় ধরে যানবাহন চালানোকে।

দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— জরুরি ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মত ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতের বেলায় অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস প্রদান; ধীরগতির যান ও দ্রুতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন যথাযতভাবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা; উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন যাবৎ ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।

Header Ad

গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব

ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র তিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানায় পর্দা উঠবে গ্লোবাল সুপার লিগের প্রথম আসরের। বৈশ্বিক ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টগুলোর চ্যাম্পিয়নদের নিয়ে উইন্ডিজ ক্রিকেট আয়োজন করছে গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লিগ, আর এই টুর্নামেন্টের জন্য তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে দলে ভিড়িয়েছে স্বাগতিক গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এই টাইগার পেসার।

এর আগে বাংলাদেশ সময় বুধবার দুপুরে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন সাকিব। এরপর গায়ানায় সাকিবকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ফ্যাঞ্চাইজিটি। নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট করে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে গ্লোবাল সুপার লিগ কতৃপক্ষ।

চোটের কারণে এই আসরে সাকিবের খেলা নিয়ে এতদিন অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন সাকিব। কিন্তু গত সোমবার ফিটনেস টেস্ট দিয়ে সেই অনিশ্চিয়তা দূর করেছেন তিনি। যার ফলে বিসিবির কাছ থেকে এই লিগে খেলার অনুমতি পান সাকিব।

রংপুর রাইডার্স ও গায়ানা আমাজন ওয়ারিয়র্সসহ টুর্নামেন্টটিতে অংশ নেবে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) লাহোর কালান্দার্স, ইংল্যান্ডের হ্যাম্পশায়ার ও অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলা ভিক্টোরিয়ান ক্রিকেট দল।

টুর্নামেন্টটির প্রথম রাউন্ডে প্রতিটি দলই একে অপরের মুখোমুখি হবে। পাঁচ দলের মধ্য থেকে চার দল যাবে সেমিফাইনালে। এরপর আগামী ৭ ডিসেম্বর হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।

Header Ad

আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার

ছবি: সংগৃহীত

আর মাত্র ২৪ ঘন্টার অপেক্ষা তারপর আগামীকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) মেগা নিলাম। তবে সেই নিলামের আগেই বড় দুঃসংবাদ পেলেন ভারতীয় দুই ক্রিকেটার মানীশ পান্ডে ও সৃজিত কৃষ্ণ। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের কারণে নিষিদ্ধ হয়েছেন তারা।এছাড়াও সন্দেহজনকের তালিকায় রাখা হয়েছে আরও তিনজন ক্রিকেটার।

নিষিদ্ধ হওয়া দুই ক্রিকেটার হলেন- মনীশ পান্ডে এবং সৃজিত কৃষ্ণ। দুজনই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং আইপিএলে পরিচিত মুখ। যদিও তারা ব্যাটার হিসেবে খেলতে পারবেন, তবু এই নিষেধাজ্ঞা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করবে।

এছাড়া সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশনের তালিকায় থাকা অন্যরা হলেন- দীপক হুদা, সৌরভ দুবে এবং কেসি কারিয়াপ্পা। যদিও এই ৫ ক্রিকেটারের কাউকেই দল রিটেইন করেনি। তবে নিলাম থেকে তাদের দল পাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু বিসিসিআইয়ের এমন খবর জানার পর দলগুলো তাদের দলে ভেড়াতে নিশ্চয় ভাববে।

আইপিএলের মতো বড় টুর্নামেন্টে এমন বিষয়গুলো খেলোয়াড়দের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সন্দেহজনক বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করা হলে তারা আবার ফিরে আসতে পারবেন। তবে দলগুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে, এই নিষেধাজ্ঞা এবং সন্দেহ তাদের নিলামে প্রাধান্য হারানোর কারণ হতে পারে।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার (২২ নভেম্বর) ভারতীয় বোর্ড জানিয়েছে, আগামী বছর আইপিএল শুরু ১৪ মার্চ থেকে। জানিয়ে দেয়া হয়েছে ফাইনালের দিনও। আসন্ন আইপিএলের ফাইনাল হবে ২৫ মে। শুধু আগামী বছরের নয়, ২০২৭ পর্যন্ত আইপিএলের শুরু এবং ফাইনালের দিন জানিয়ে দিয়েছে বিসিসিআই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২