খৃষ্টান আদিবাসীরা ফিরে পেল পূর্বপুরুষদের কবরস্থান

রাজশাহীর গোদাগাড়িতে দীর্ঘ ৪০ বছর পর ভূমিদস্যুদের কবল থেকে নিজেদের পূর্ব পুরুষদের করবস্থান ফিরে পেলো খৃষ্টান ধর্মাম্বলম্বী আদিবাসী সম্প্রদায়। রাজশাহী জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান এই কবরস্থান উদ্ধার করে শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে ভুক্তভোগীদের হস্তান্তর করেন।
জানা যায়, গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের কাদমা ফুলবাড়ী রক্ষাগোলা সংগঠনের জনগণ গ্রামের নিকটস্থ খাড়ির পাশ্ববর্তী সরকারী ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি যার মৌজা-মহাদেবপুর, জেএল নং-১৪৭, দাগ নং-৪২৪, জমির পরিমাণ ৮৭ শতক। জমিটি ওই এলাকার আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। বিভিন্ন খতিয়ানেও এটি 'কবরস্থান' উল্লেখ আছে।
এই কবরস্থানটি কাদমা ফুলবাড়ী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য তাহাসিন উদ্দীন ও তার ভাই আব্দুল গণি ৮৭ শতক জমির মধ্যে ১২ শতক জমি কবরস্থান রেখে বাকি ৭৫ শতক জমি দখল করে চাষাবাদ করে আসছিলো। তাদেরকে বারবার কবরস্থানের জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলা হলেও তারা সেই জমি জবরদখল করে চাষাবাদ করে আসছিলো।
গত ৯ মার্চ রক্ষাগোলা সংগঠনের মোড়ল লুইস কিস্কুর নেতৃত্বে সংগঠনের জনগণ গাদাগাড়ী ভূমি অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এসিল্যান্ড সবুজ হাসান বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত নিজেই তাৎক্ষনিক কবরস্থানটির তদন্ত করে দখলের সত্যতা পান।
এ বিষয়ে সিসিবিভিওর শাখা কার্যালয়ের ইনচার্জ ও মাঠ কর্মকর্তা নিরাবুল ইসলাম জানান, তারা আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে এই এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন। আদিবাসীরা অনেক ক্ষেত্রেই অধিকার বঞ্চিত। এই জমিটির বিষয়ে আদিবাসীদের পক্ষে অনেক ডকুমেন্ট থাকলেও দখলদাররা দখল ছাড়ছিলো না। স্থানীয় প্রশাসন অদিবাসীদের কবরটি ফিরিয়ে দেয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তিনি।
কবরস্থানটি উদ্ধার হওয়ায় সাঁওতাল সম্প্রদায়ের লোকজন জেলা প্রশাসক ও গোদাগাড়ীর এসিল্যান্ড সবুজ হাসানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘদিন ভূমিদস্যুদের হাতে থাকা কবরস্থানটি পেয়ে খুশি হয়েছি। ভবিষ্যতে এমন কাজে পাশে থাকার আশা প্রকাশ করেন তারা।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সবুজ হাসান জানান, কবরস্থানটির ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়ার পর নিজে সময় নিয়ে তদন্ত শুরু করেন। দখলকারিরা ১৯৯২ সালের দিকের কিছু কাগজপত্র দেখায়। সেই কাগজপত্রাদি তাদের কাছে সঠিক মনে হয় নি।
এএজেড
