এমপির ভাতিজা পরিচয়ে প্রতারণা, দস্পতি গ্রেপ্তার

রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরির মালিকানাধীন থীম ওমর প্লাজার অ্যাডমিন অফিসার ও ভাতিজা পরিচয় দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫ টায় ভুক্তভোগীদের তোপের মুখে এই প্রতারককে আটক করে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এরপর বুধবার (১ মার্চ) ভুক্তভোগীদের মামলার প্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
নাহিদুজ্জামান পাপ্পু (৩০) নিজেকে এমপি ভাতিজা পরিচয় দিয়ে চাকুরিপ্রার্থীদের থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। তার এই প্রতারণার সঙ্গে তার স্ত্রী বাঁধন জামান (২৮) জড়িত। তারা মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানাধীন দড়িখরবোনা এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী থানার চাত্রাপুর গ্রামের জনি আহম্মেদ নামের একজনের সাথে আসামি পাপ্পুর নগরীর থীম ওমর প্লাজায় পরিচয় হয়। সেখানে পাপ্পু নিজেকে থীম ওমর প্লাজার অ্যাডমিন অফিসার এবং সংসদ সদস্য ফারুক চৌধুরীর ভাতিজা বলে পরিচয় দেয়। পাপ্পু জনির সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে।
এক পর্যায়ে পাপ্পু তাকে পুলিশের কনস্টেবলের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেয়। এজন্য তারা একটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে চুক্তিপত্র তৈরি করে। চুক্তি অনুযায়ী জনির কাছ থেকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বোয়ালিয়া থানাধীন ষষ্ঠিতলা নিউমার্কেট থীম ওমর প্লাজায় দুই লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। এরপর বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে তার কাছ থেকে আরও আট লক্ষ টাকা গ্রহণ করে।
পরবর্তীতে পুলিশ বাহিনীতে কনস্টবল পদে জনির চাকরি না হলে সে পাপ্পুর কাছে টাকা ফেরত চায়। পাপ্পু টাকা দিতে কালক্ষেপন করতে থাকে। জনি থীম ওমর প্লাজায় পাপ্পুর সাথে দেখা করে টাকার জন্য চাপ দিয়ে পাপ্পু তাকে একটি চেক প্রদান করেন। জনি চেক নিয়ে টাকা উত্তোলনের জন্য ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারেন, সেই অ্যাকাউন্টে কোনো টাকা নাই।
এরপর জনি আবার পাপ্পুর সাথে যোগাযোগ করলে পাপ্পু তাকে ২৮ ফেব্রুয়ারি ৫ টার দিকে বোয়ালিয়া থানাধীন সপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টরী মোড়ে টাকা নেওয়ার জন্য আসতে বলে। জনি সেখানে গিয়ে পাপ্পুকে মোবাইরে ফোন করলে ফোন বন্ধ পায় এবং দেখে যে, তার মত প্রতারনার স্বীকার অনেক ব্যক্তি টাকার জন্য অপেক্ষা করছে।
তখন জনি অন্যান্য ভুক্তভোগীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে সকলে মিলে সপুরা ম্যাচ ফ্যাক্টরী মোড়ে আসামি পাপ্পুর ভাড়া বাড়িতে যায়। পরবর্তীতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে আসামি পাপ্পুর বাড়িতে উপস্থিত হয়। সেখানে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ এর বিষয় জানতে পেরে আসামি পাপ্পু ও তার স্ত্রী বাঁধনকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, আসামি পাপ্পু ও তার স্ত্রী বিভিন্ন জনকে চাকরি দেওয়া ও মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে দেওয়ার কথা বলে প্রায় প্রায় পঁচাশি লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে। আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে সহজ সরল ব্যক্তিদের চাকরির প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। আসামিদের বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় একটি প্রতারণার মামলা করা হয়েছে বলে জানায় আরএমপি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম।
এএজেড
