বধূ সেজে দিনভর অপেক্ষা, আসেনি সেনা সদস্য বর

বধূ সেজে বিয়ের আসরে কনে অপেক্ষা করছিলেন বরের জন্য। কিন্তু সারাদিনেও বর না আসায় হয়নি কনের বিয়ে। এ ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায়। এতে কনের ও কনের পিতা খুবই ভেঙে পড়েছেন।
কনের মামা সাজ্জাত হোসেন জানান, দুই পরিবারের দেখাশোনার পর বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়। ছেলের নাম হুসাইন। বর্তমানে বরিশাল লেবুখালী সেনানিবাসে কর্মরত। তিনি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের ফুলবাড়ী গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী ওমর ফারুকের ছেলে। ছেলে ও তার পরিবারের সিন্ধান্তেই গত রবিবার নির্ধারিত দিন ছিল। দেনমোহর ধার্য হয় ৭৫ হাজার টাকা। এর দুই দিন আগে ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যরা মেয়ের নাকের নথ পরিয়ে দিয়ে আসেন। রবিবার ২০-২৫ জন বরাযাত্রীসহ বর আসার কথা কনের বাড়িতে। সমস্ত আয়োজন করে প্রতীক্ষায় ছিল কনের পরিবার। শেষমেশ বিকালে কনেপক্ষের লোকজন জানতে পারে গ্রামের একটি মেয়েকে অজানা উদ্দেশে পাড়ি জমিয়েছে বর হুসাইন।
তিনি আরও বলেন, বিয়েতে যদি মত নাই থাকে তাহলে ছেলে নিজ থেকেই আমার ভাগ্নিকে দুইবার কেন দেখতে আসল? এ ছাড়াও শুনেছি ছেলে তার নিজ কমস্থলে উল্টো মেয়ের পরিবার ও নিজের বাবার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে। এরপর আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি,সম্প্রতি ছেলের পিতা বিদেশ থেকে বাড়িতে আসেন। পিতাকে সঙ্গে নিয়ে হুসাইন বিভিন্ন গ্রামে মেয়ে দেখতে শুরু করেন। এক মাসে তারা ১৫ থেকে ১৮ স্থানে মেয়ে দেখেন।
এ ঘটনায় বর হুসাইনের বিচার দাবি করে সাজ্জাত হোসেন বলেন, সে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমার ভাগ্নির জীবন নিয়ে খেলা করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও লড়ব। যাবতীয় প্রমাণাদিসহ তার কর্মস্থল শেখ হাসিনা সেনানিবাসে যাবো।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের পিতা একজন অসহায় শারীরিক প্রতিবন্ধী। তিনি তার শেষ সম্বল দুটি গাভি বিক্রি করে মেয়ের সুখের জন্য ছেলের দাবি করা মেয়ের সোনার গয়না ও জামাইয়ের জন্য একটা পালসার
মোটরসাইকেল দিতে রাজি হন। এ অবস্থায় কনে এবং কনের পিতা খুবই ভেঙে পড়েছেন। দুই থেকে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফুলবাড়ি গ্রামের ইউপি সদস্য তোফায়েল আহমেদ লিটন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা মোটেও ঠিক হয়নি। জেনেছি কর্মস্থল থেকে বিয়ের অনুমতি ছিল না ছেলের। তারপরও পরিবারের সঙ্গে নিজেও দেখার পর বিয়ের দিন ঠিক করে। এখন উধাও হওয়ায় ঘটনা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে একটা মেয়ে ও তার পরিবারের কি পরিমাণ কষ্ট হয় সেটা আমরা বুঝি। কেন এমন হলো বিস্তারিত জানতে ছেলের পরিবারের সঙ্গে কথা বলব।
এসআইএইচ
