বাঙালির স্পন্দন বুঝেছিলেন বঙ্গবন্ধু: শিক্ষামন্ত্রী

পাকিস্তান আমলে দীর্ঘ ২৩ বছরের নানা সংগ্রাম আর নির্যাতন পেরিয়ে এদেশের মানুষকে মুক্ত করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দিয়েছিলেন ৬ দফা। মূলত ওই ছয় দফা দিয়ে এক দফা 'স্বাধীনতা' চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। কারণ তিনি বুঝেছিলেন, দেশকে সবার আগে স্বাধীন করতে হবে। আর এটা তিনি বুঝেছিলেন ৬৯ সালেই। তিনি দীর্ঘদিন বাংলার পথে প্রান্তরে সকল মানুষের সাথে কখনো নৌকায়, কখনো পায়ে হেটে, কখনো ট্রেনে উঠে ছুটে বেড়িয়েছেন। এভাবেই তিনি বাঙালির হৃদয়ের স্পন্দন বুঝেছিলেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচন যখন আসে তখন অনেকে বলেছিল ভাত চাই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন ভোট চাই। কেননা তিনি জানতেন, যদি ভোট দেয়া হয় তিনি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন। প্রতিটি বাঙালি তাকে ভোট দিবেন। আর এর মাধ্যমেই দূর হবে সকল শোষণ নিপীড়ন নির্যাতন। মুক্ত হবে বাংলা আর বাঙালী। আর এ কারণে ১৬৯ টি আসনের মধ্যে ১৬৭ আসন পেয়ে বিজয় অর্জন করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
শিক্ষামন্ত্রী মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর শহরের অনিমা চৌধুরী মিলনায়তনে বিজয় দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সময় দীপু মনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু দুটি বিষয় ছিলেন দেশের স্বাধীনতা আর বাঙালির মুক্তি। এইজন্য তিনি বলেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রী হতে চাই না বাঙলার মানুষের মুক্তি চাই।
দীপু মনি দাবি করেন,বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পরে মানুষের দুঃখ ঘুচাতে শুরু করেছিলেন উন্নয়ন। কিন্তু ১৫ আগস্টে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে মূলত যারা বাংলাদেশকে স্বাধীন দেখতে চায়নি তারা বঙ্গবন্ধুকে নির্বংশ করতে চেয়েছিল।
দীপু মনি আরও বলেন, ২১ বছর পর শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন। ফলে ৯৬ সালে আবার শুরু হয়েছিল দেশের উন্নতি। পরবর্তীতে আবার দেশকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর দীর্ঘ চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে গত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অবতপূর্ব উন্নতি করেছে।
তিনি দাবি করেন,যারা কোনদিনও এদেশের স্বাধীনতা চাননি তারা অন্তত আগামীতে দেশে থাকতে পারবে না। দেশকে নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে বারবার দেশকে যারা পিছিয়ে দিতে চেয়েছে বাংলাদেশ স্বাধীন হোক এটা যারা চায়নি তারা আর দেশে থাকতে পারবে না।
এ সময় বিএনপির সমালোচনা করে দীপু মনি বলেন, জিয়াউর রহমান সকাল সন্ধ্যা কারফু দিয়ে দেশ পরিচালনা করেছেন। অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছেন। সেনা হত্যা করেছেন। হা-না ভোট দিয়ে গণতন্ত্র দেখিয়েছেন। তার ছেলে তারেক জিয়ার কথায় গত ১০ তারিখ থেকে দেশ চলবে এমন বলা হলেও তা তারা করতে পারেনি। কেননা তারা জনবিচ্ছিন্ন। আর জনবিচ্ছিন্নদের দিয়ে কোন আন্দোলন হয়না।
শেখ হাসিনা ১০০ বছরের বদ্বীপ পরিকল্পনা করেছেন জানিয়ে ডাক্তার দীপু মনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রাকে আরও মসৃন করতে হবে। ২০৪১ সালে যাতে বাংলাদেশকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করা যায় সেজন্য সকলকে প্রস্তুত থাকার এবং সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর শহরের অনিমা চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মো: মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল কুদ্দুস, রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, মুক্তিযোদ্ধা শিরিন আক্তার ও নাটোর নবাব সিরাজ উদ দৌলা সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম।
এএজেড
