'আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনৈতিক দল নেই'

রাজশাহীতে বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ আর কোনো রাজনীতি দল নেই, এরা লুটেরাই পরিণত হয়েছে। এরা দেশের টাকা লুট করে বেগমপাড়া আর সেকেন্ড হোক গড়ে তুলছে। আর সাধারণ মানুষকে অত্যাচার করছে।
আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের পাতি নেতাদের দৌরাত্ম্য চরমে। এরাও সাধারণ মানুষের সম্পদ অন্যায়ভাবে লুট করে। এই দানবীয় অনির্বাচিত-অবৈধ সরকার নিজেদের অস্থিত্ব সংকটের মধ্যে পড়ে বিরোধী দলকে হামলা-মামলা-গুম-খুন দিয়ে নিশ্চিহ্ন করার হীন প্রচেষ্টায় মেতে উঠেছে। কিন্তু পারে নি। এখন তারা ভয়ে আছে। আজ আমরা মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি। একটি সুস্থ-সুন্দর-প্রেমময় পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পরিবর্তনের কোন বিকল্প নেই। আর পরিবর্তনে সকলকে জেগে উঠতে হবে।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতাকর্মীদের মৃত্যুর প্রতিবাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। রাজনীতি কাঠামোকে হত্যা করেছে। তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য এই সরকার আন্দোলন করেছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় এসে সেই পদ্ধতি বন্ধ করেছে। কিন্তু তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। যুগপত আন্দোলনের মাধ্যমে এই লুটেরা সরকরকে হটিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।
রাজশাহীর গণসমাবেশের উপস্থিত নেতাকর্মীদের গত তিন দিনের কষ্টের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, পদ্মার ঠাণ্ডা বাতাসের মধ্যে খেয়ে না খেয়ে কীসের ভালোবাসায়, কীসের তাগিদে আপনারা তিন ধরে এখানে সময় কাটালেন? একটিই কারণ, আপনারা মুক্তি চান। আর সেই মুক্তির জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
রাজশাহীকে গণতন্ত্রের আন্দোলন সংগ্রামের উর্বর ভূমি হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ফখরুল বলেন, রাজশাহীর মাটি সংগ্রামের মাটি। পাশেই শুয়ে আছেন শাহমখদুম। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জোহা নিজের বুকের রক্ত দিয়ে দিয়েছিলেন। এইরকম অনেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ৬০০ নেতাকর্মী গুম হয়ে গেছে। এরমধ্যে পাবনার ঈশ্বরদীতে জাকারিয়া পিন্টুসহ ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ২৫ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। এটাই এই সরকারের চরিত্র। এভাবে তারা বিরোধীদলকে নির্মুল করে দিতে চায়। এতে কি নির্মুল হয়েছে? রাজশাহীর মানুষ ভয় পেযেছে? পায় নি। আরও উত্তালে জেগে উঠেছে। এই লড়াইয়ে আমাদের জয়ী হতেই হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, কোথায় ১০ টাকার চাল, ঘরে ঘরে চাকুরি। হ্যাঁ চাকুরি দিয়েছে। নিজেদের লোকদের দিয়েছে। আর সেখানেও ২০ লাখ টাকা করে দিতে হয়েছে। এ সময় দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থায় আওয়ামী লীগ সরকারের লুটের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বক্তব্য রাখেন, সেলিমা রহমান, ইকবাল মাহমুদ হাসান টুকু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের এমপি হারুন অর রশিদ, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি এরশাদ আলী ঈশা।
এএজেড
