৩ ঘণ্টায় শেষের শর্তে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি

৩ ঘণ্টায় শেষ করাসহ ৮ শর্তে রাজশাহীতে বিএনপিকে বিভাগীয় গণসমাবেশের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ আরএমপি বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে এই অনুমতি দেয়। আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় এই গণসমাবেশ। এর আগে গণসমাবেশের জন্য ১ ডিসেম্বর থেকে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। অনুমতি পাওয়ার পরপরই নগরীতে মাইকিং করে সমাবেশের প্রচারণা শুরু করেছে বিএনপি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রফিকুল আলম। গণসমাবেশের শর্তগুলো হলো- মাদ্রাসা ময়দান চত্বরের মধ্যে সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সমাবেশস্থলের আশপাশসহ রাস্তায় কোনো অবস্থাতেই সমাবেত হওয়া এবং যান ও জন চলাচলে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।
নিরাপত্তার জন্য সমাবেশে আগতদের চেকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও সামাজিক-ধমীয় মূল্যবোধ, রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কার্যকলাপ এবং উস্কানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
সমাবেশে আসা-যাওয়ার পথে শোভাযাত্রা ও মিছিল করাসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরূপ কর্মকাণ্ড করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ও পতাকাতে কোনো ধরনের লাঠিসোঁটা ও রড ব্যবহার করা যাবে না। ব্যানার-ফেস্টুন ইত্যাদির ব্যবহার সীমিত করতে হবে।
আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময়ে মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে, এমন কোনো বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না
মঞ্চ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত (আইডি কার্ডসহ) তারা ব্যতিত কেউ আগামী ৩ ডিসেম্বর সমাবেশ শুরু পূর্বে সমাবেশস্থলে প্রবেশ কিংবা অবস্থান করতে পাববে না। সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম ওইদিন বেলা ২ টা থেকে ৫ টার মধ্যে শেষ করতে হবে। সমাগত নেতাকর্মীরা যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বা আয়োজকদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।
নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশস্থলের অভ্যন্তরে ও বাইরে উন্নত রেজ্যুলেশনযুক্ত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। সমাবেশস্থলের বাইরে বা সড়কের পাশে প্রজেক্টর/মাইক/সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে না। সমাবেশস্থলে ইন্টারনেট সংযোগ, ব্রডব্যান্ড সংযোগ এবং রাউটার ব্যবহার করা যাবে না। যানবহনসমূহ শহরের ভেতরে প্রবেশ করানো যাবে না। রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশের কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকতে হবে। নির্ধারিত স্থানে পার্কিং করতে হবে। মূল সড়কে পার্কিং করা যাবে না।
এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়। স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমতি নিতে হবে। জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোনো কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথভাবে পালন না করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসন থেকে তাদের জানানো হয়েছে ১ ডিসেম্বর থেকে তারা গণসমাবেশের জন্য মাদ্রাসা মাঠ ব্যবহার করতে পারবে। এর আগে তারা ওই মাঠ বা তার আশপাশের এলাকায় কোন কার্যক্রম চালানো যাবে না।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানান, হাজী মুহম্মদ মহসীন সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে এখনও পরিক্ষা চলছে। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি। পরিক্ষা চলাকালে তিনি ওই মাঠ ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন না। এজন্য পরিক্ষা শেষ হলে ১ ডিসেম্বর থেকে অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাছাড়া বিএনপি শুধু ৩ ডিসেম্বর মাঠ ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছে।
এএজেড
