সমাবেশ ঠেকাতে নেতা-কর্মীদের নামে মামলা-হামলা, অভিযোগ বিএনপির
আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে হামলা ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে নওগাঁ শহরের কেডির মোড় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন নওগাঁ জেলা বিএনপির নেতারা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও ভীতি সৃষ্টি করার উদ্দেশে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে এবং নিজেদের দলীয় কার্যালয়, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নিজেদের যানবাহনের ক্ষতিসাধন করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি অবগত করে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেয় জেলা বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু অভিযোগ করেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ ঠেকাত সরকার বিভিন্ন অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। গত পাঁচ দিনে নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিএনপির নিরীহ নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে, নিজেরা ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উল্টো বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এ পর্যন্ত বিএনপির সাত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও প্রতিদিন বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাণীনগর থানা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে রাণীনগর ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন চলাকালে আওয়ামী লীগের কর্মীরা হামলা চালিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আহত করে এবং দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। পরে তারাই বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় গতকাল রাতে পাভেল ও মানিক নামে যুবদলের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নিজেরাই ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। একই কায়দায় সোমবার রাতে মহাদেবপুর উপজেলা সদর আওয়ামী লীগের কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দিয়েছে। ওই মামলায় গতকাল রাতে মহাদেবপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এরশাদ আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশকে ঘিরে গতকাল বিকালে সাপাহার নিশ্চিন্তপুর বাজারে গণসংযোগ চালাচ্ছিল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়ে বিএনপির ১০-১২ জন নেতা-কর্মীকে আহত করেন। পরে রাতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় রাতেই আবু বক্কর সিদ্দিক ও আব্দুল কাহার নামে বিএনপির দুইজন নেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে আরোও উল্লেখ করা হয়, আজ সকাল ১০টার দিকে আত্রাই উপজেলার কাঁশিয়াবাড়ী বাজারে বিএনপির গণসংযোগ চলাকালে সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়। এতে আত্রাই উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল জলিলসহ (চকলেট) বিএনপির ১০-১২ জন নেতা-কর্মী আহত হন। এই হামলায় নেতৃত্ব দেন আত্রাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী।
আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে গণজোয়ার দেখে সরকার ভয় পেয়েছে। রাজশাহী বিভাগ হলো বিএনপির ঘাঁটি। ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশে লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করে এই সরকারের পতনকে ত্বরানিত্ব করবে। এসব সমাবেশ বিএনপি নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে সরকারের অপকৌশলের অংশ হিসেবে নওগাঁয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধ মিথ্যা মামলা ও বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা চালানো হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, সদস্য সচিব বাইজিদ হোসেন পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ রেজাউল ইসলাম, মামুনুর রহমান রিপন, আমিনুল ইসলাম বেলাল, শফিউল আজম (ভিপি) রানাসহ প্রমুখ।
এসআইএইচ